নুরুদ্দীন তাসলিম।। শুরু হয়েছে শাইখুল কুরআন আল্লামা ক্বারী বেলায়েত হুসাইন রহ. এর জীবন ও কর্ম শীর্ষক আলোচনা সভা ও স্মারকগ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব। জাতীয় প্রেসক্লাবে দুপুর ৩ টা থেকে শুরু হয়েছে এ প্রকাশনা উৎসব।
শুরুতেই শুভেচ্ছা বক্তব্য দিয়েছেন স্মারকগ্রন্থ ও আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকমের সম্পাদক মুফতি হুমায়ুন আইয়ুব। উপস্থিত সবাইকে অভিবাদন জানিয়ে তিনি বলেন, আল্লামা ক্বারী বেলায়ত রহ. গত শতাব্দির মুজাদ্দিদ ছিলেন। স্মারকের কাজের সাথে সম্পৃক্ততা নিজের জন্য সৌভাগ্যের বলে উল্লেখ করেন তিনি। এসময় তিনি স্মারকের সাথে সম্পৃক্ত সবাইকে সাধুবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে স্মারকগ্রন্থের পাঠ উন্মোচন করেন লেখক, সাহিত্যিক মাওলানা যাইনুল আবিদীন।
এসময় তিনি বলেন, বাবাকে ভালোবাসেন এমন সন্তান অনেক আছে, কিন্তু বাবার মিশনকে ধারণ করেন এমন সন্তানের সংখ্যা একেবারে কম। আল্লামা ক্বারী বেলায়েত রহ.- এর সন্তানেরা বাবার মিশন ধারণ করেছেন।
এ সময় তিনি স্মারকগ্রন্থ নিয়ে ৩টি প্রস্তাবনা দিয়েছেন।
১) বছরে একদিন নুরানী মাদ্রাসাগুলোতে স্মারকগ্রন্থকে সামনে রেখে শায়খুল কুরআনকে নিয়ে আলোচনা ও প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করা।
শিশুদের জন্য শায়খুল কুরঅঅনের পরিচিতির জন্য আলাদা বই লেখার ব্যবস্থা করা।
২) শাইখুল কুরআন নামে ফাউন্ডেশন তৈরি করা। এই প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে নির্ধারিত দিনে পত্রিকার স্মরণীয় বরণীয় পাতায় লেখা পাঠানো। আন্তর্জাতিক প্রকাশনাগুলোতে লেখা পাঠানোর চেষ্টা করা।
৩) সুবিধাবঞ্চিতদের মাঝে ক্যাম্প করে নুরানী শিক্ষা ছড়িয়ে দেওয়া।
লেখক, সাহিত্যিক মাওলানা শরীফ মুহাম্মদ বলেন, আরব থেকে এতো দূরে বাংলাদেশে কুরআন শিক্ষা নিয়ে যারা কাজ করেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলে শাইখুল কুরআন আল্লামা ক্বারী বেলায়েত হুসাইন রহ.। তিনি বাংলাদেশে কুরআন শিক্ষা ছড়িয়ে দিতে যে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন এটা ছিল একটা যুগান্তরকারী বিপ্লব।
‘যে সময় তিনি এই কাজ শুরু করেছিলেন তখন বাংলাদেশে এমন কাজ হয়নি এবং এর কোন নমুনাও ছিল না, পরবর্তীতে কুরআন শিক্ষার সুবিধার্থে অনেক কাজ হয়েছে। কিংবদন্তীতূল্য এই মনীষীকে শিশু,কিশোর,তরুণ সব প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা প্রয়োজন’ বলেন তিনি।
উপস্থিতদের মধ্যে আরো আলোচনা করেছেন নুরানী বোর্ডের প্রশিক্ষক মাওলানা আবু বকর । তিনি বলেন, আল্লামা ক্বারী বেলায়েত হুসাইন রহ. বেঁচে নেই তবে তার আদর্শ এখনো রয়ে গেছে। এখানে এসে আলোচনা শুনে চলে যাওয়া মানে অনুষ্ঠান সার্থক নয়, বরং তার আদর্শ বাস্তবায়ন করাই অনুষ্ঠানের স্বার্থকতা।
তিনি বলেন, দেশ,গ্রামে নুরানীর শিক্ষা ছড়িয়ে দিতে হবে। কাজের মাধ্যমে আমরা দেখিয়ে দিব হযরতের হাজারো শাগরেদ তৈরি হয়েছে সারাদেশে।
সাংবাদিক মাওলানা মাসউদুল কাদির বলেছেন, শাইখুল কুরআন যেই কার্য বিবরণী রেখে গেছেন, এর চর্চা দীর্ঘদিন চলতেই থাকবে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের যেই আকাবিররা চলে গেছেন তাদেরকে আগামী প্রজন্মের কাছে পৌছে দেওয়ার উদ্যোগ এই স্মারক গ্রন্থ। সর্বস্তরে আকাবিরদের পরিচিতি ছড়িয়ে দিতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সামাজিক মাধ্যম, ইউটিউবের মাধ্যমে আজকাল মানুষ এমন কিছু জানছে যা জ্ঞানের মত কিছু নয়, তাই বরেণ্য আলেমদের জানার সুযোগ করে দেওয়া উচি ‘ ।
সাংবাদিক ও সম্পাদক জহির উদ্দীন বাবর বলেন, ‘শাইখুল কুরআন কোন পরিবারের নন, তিনি পুরো জাতির। তাকে জাতির কাছে পৌছে দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ায় তার পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা’।
মুফতি শেখ আব্দুর রাজ্জাক আল হুসাইনি বলেন, ‘যখন জাগতিক শিক্ষার মাধ্যমে শিশুদের দ্বীন বিমুখ করার চেষ্টা চলছিল, এমন সময় শাইখুল কুরআন শিশুদের দ্বীন মুখি করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন আল্লাহ তায়ালা তার উদ্যোগকে কবুল করেছেন, তাই দেশের আনাচে-কানাছে ছড়িয়ে পড়েছে নুরানী শিক্ষার আলো।
মাওলানা মুসলিহুদ্দীন রাজু বলেন, আমরা নিজে এই স্মারক গ্রন্থ পড়বো, অন্যদের পড়তে দিব, প্রজন্মের কাছে এই স্মারকগ্রন্থ পৌছানোর চেষ্টার মাধ্যমে মাহফিল সার্থক হবে।
তিনি আরো বলেন, শিশুদের উপযোগী করে আল্লামা বেলায়েত রহ.কে জানানোর ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। বেফাকের পক্ষ থেকে সিলেবাসে আকাবিরদের জানানোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তিনি।
এতে উপস্থিত ছিলেন, জামিয়া মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া মোহাম্মদপুরের মুহতামিম মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মুফতি মিযানুর রহমান সাঈদ, বেফাক মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, মুফতি আবুল হাসান শামসাবাদী, মাওলানা মুহাম্মদ যাইনুল আবিদীন, মাওলানা শরীফ মুহাম্মদ, মাওলানা মুসলেহ উদ্দিন রাজু, মাওলানা মাসউদুল কাদির, মাওলানা মনীরুল ইসলাম,মুফতি শেখ আব্দুর রাজ্জাক আল হুসাইনি, মুফতি ওয়ালি উল্লাহ, মাওলানা আবু বকর, মাওলানা শহিদুল্লাহ, মাওলানা হারুনুর রশিদ, মাওলানা আবু মুরতাজা মোহাম্মদ ফয়জুল্লাহ, খন্দকার মাহফুজুল হক, আবুল খায়ের সালেহ, মাওলানা ইসহাক মামুন, মাওলানা আব্দুর রহিম, হাফেজ আতাউল্লাহ।
-এটি