আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য সংবিধানের ১১৮-২৬ ধারায় আইন প্রনয়নের জন্য সুস্পষ্টভাবে বলা আছে। অথচ সরকার আইন প্রনয়ন না করে প্রতিবার জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে রাষ্ট্রপতির সাথে কথিত সংলাপ- এর নামে একটি লোকদেখানো অর্থহীন রসালো সময় পার করে।
তিনি বলেন, যেখানে রাজনৈতিক দলগুলোর দেয়া কোন প্রস্তাবের তোয়াক্কা না করে নিজেদের আজ্ঞাবহ পকেট কমিশন গঠন করে পুনরায় ক্ষমতায় যাওয়ার সব বন্দোবস্ত করে। রাষ্ট্রপতির অতীতের সবকটি সংলাপ বিশ্লেষণ করলে যা সহজেই অনুমেয়। সংলাপের নামে এসব ভাঁওতাবাজি বাদ দিয়ে সংবিধান অনুযায়ী নিরপেক্ষ ও স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেয়া জোর দাবি জানাচ্ছি।
আজ ২৪ ডিসেম্বর’২১ইং শুক্রবার সকাল ০৯ টায় রাজধানীর গুলিস্তানস্থ কাজি বশির মিলনায়তনে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সম্মেলন-২২-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন তিনি।
পীর সাহেব চরমোনাই আরো বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে একটি মাইলফলকে পৌঁছেছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো একটি চিহ্নিতগোষ্ঠী স্বাধীনতার লক্ষ্যকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে ইসলামের বিরুদ্ধে ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদের বিজয় বলে প্রোপাগান্ডা চালায়। অথচ মুক্তি যুদ্ধ কোন আদর্শিক লড়াই ছিল না। মুক্তি যুদ্ধ ছিল জালিমের জুলুমের বিরুদ্ধে মাজলুমের মুক্তি সংগ্রাম। কিন্তু সেই ইতরগুলো ইসলামকে মুক্তি যোদ্ধের মুখোমুখি দাঁড় করাবার ব্যর্থ চেষ্টা করে সৌহার্দ্য সম্প্রীতিময় এ জাতিকে বিভক্ত করতে চাই। এদের এই দুঃস্বপ্ন কখনো বাস্তবায়ন হবে না ইনশাআল্লাহ।
সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নূরুল করীম আকরাম বলেন, যুব সমাজ আজ স্বীয় আত্মপরিচয় সংকটে ভুগছে। সর্বত্র দলীয়করণ, দুর্নীতি ও নিয়োগ বানিজ্যের ফলে শিক্ষিত যুবকরাও নীতি-নৈতিকতা ভুলে দিনদিন অপরাধের দিকে ঝুকছে। এমতাবস্থায় একদিকে ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষাকে প্রায় ঐচ্ছিক করে দিয়েছে। অন্যদিকে গল্প-সিনেমা-নাটকে ইসলামকে মুক্তিযুদ্ধের বিপরীতে দাড় করিয়ে তরুনদের মননে ইসলামবিদ্বেষ পুষ করে দেয়া হচ্ছে। ইসলাম থেকে দূরে অবস্থান নেয়ার ফলে দিনদিন সমাজে অপরাধ বাড়ছে। যা দেশের অর্থনৈতিক সম্পৃদ্ধির পথেও বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়েছে। এমতাবস্থায় রাজনৈতিক সহিষ্ণুতা, ধর্মীয় সম্প্রীতি ও অর্থনৈতিক সম্পৃদ্ধি অর্জনে ইসলামী শাসনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর প্রেসিডিয়াম সদস্য, প্রিন্সিপাল সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, নায়েবে আমির মুফতি ফজলুল করিম ( শায়খে চরমোনাই), প্রেসিডিয়াম সদস্য, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান, জেনারেল ( অব) মুহাম্মাদ ইব্রাহিম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের স্থায়ী কমিটির সদস্য, আতিকুল ইসলাম, সংগঠনের মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান, কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা, মাওলানা ওবাইদুর রহমান খান নদভী, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর আব্দুল লতিফ মাসুম সহ কেন্দ্রীয় ও জাতীয় নেতৃবৃন্দ।
সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল শেখ মুহাম্মাদ আল-আমিন এর সঞ্চালনায় সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি শরীফুল ইসলাম রিয়াদ, জয়েন্টে সেক্রেটারি জেনারেল গাজী মুহাম্মাদ উসমান গনি, সাংগঠনিক সম্পাদক এম এম শোয়াইব ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক ইউসুফ আহমদ মানছুর সহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
সম্মেলনের প্রধান অতিথি হযরত পীর সাহেব চরমোনাই তাঁর বক্তব্য শেষে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন-এর পরিবর্তন করে নতুন নাম ঘোষণা করেন "ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ" হিসেবে। পরে প্রধান অতিথি ইশা ছাত্র আন্দোলনের ২০২১ সেশনের কমিটি বিলুপ্ত করে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ এর ২০২২ সেশনের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করেন। ঘোষিত কেন্দ্রীয় কমিটিতে কেন্দ্রীয় সভাপতি নূরুল করীম আকরাম, কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি শরীফুল ইসলাম রিয়াদ ও সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে শেখ মুহাম্মাদ আল-আমিন এর নাম ঘোষণা করেন।
এনটি