বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হলে আবারও অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে দেশ: ফখরুল চক্রান্তের ফাঁদে না পড়ে সর্বোচ্চ ধৈর্য ধারণের আহ্বান শায়খ আহমাদুল্লাহর ভোলায় জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে শহীদদের স্মরণে দোয়া ও স্মরণসভা চরমোনাইর বার্ষিক অগ্রহায়ণ মাহফিল বুধবার, চলছে সর্বশেষ প্রস্তুতি সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান আসিফ মাহমুদের অসহায় শীতার্তের পাশে মাওলানা গাজী ইয়াকুবের তাকওয়া ফাউন্ডেশন দেশের তিন জেলায় শিক্ষক নিচ্ছে ‘আলোকিত মক্তব’ বৃদ্ধার দাড়ি টেনে ছিঁড়ে ফেলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল প্রতিবন্ধীদের ধর্মীয় ও কারিগরি শিক্ষা দিতে পারলে দেশ এগিয়ে যাবে: ধর্ম উপদেষ্টা ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র করার ষড়যন্ত্র সফল হবে না: মাওলানা আরশাদ মাদানী

মাওলানা আফেন্দীর সঙ্গে ইসলামবাগ মসজিদ-মাদরাসার কমিটির সমঝোতা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: রাজধানী ঢাকার জামেয়া ইসলামিয়া ইসলামবাগ মাদরাসা-মসজিদ কমিটির সাথে মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীর-সমঝােতা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাওলানা আফেন্দী ইসলামবাগ মাদরাসায় স্বপদে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত হয়।

আজ রোববার সকাল ১০ টায় ঢাকা সাত আসনের এমপি হাজী মোহাম্মদ সেলিম তার বাসায় এক জরুরি বৈঠকে ডাকেন। অনুষ্ঠিত বৈঠকে কিছু শর্তসংবলিত একটি সমঝোতা স্বারকে স্বাক্ষর করার জন্য বলা হয় মাওলানা আফেন্দীকে। শুরুতে মাওলানা আফেন্দীর আপত্তি থাকলেও এক পর্যায়ে উভয়পক্ষ উক্ত স্বারকে স্বাক্ষর করে সমঝোতা করেন। সমঝোতা শেষে মাওলানা আফেন্দীকে তার স্বপদে সমাসীন করা হয়।

সংসদ সদস্য হাজী মুহাম্মদ সেলিম ও মাদরাসার কমিটির স্বাক্ষর করা সমঝোতা স্বারকে বলা হয়, নিমােক্ত শর্তাবলি অনুসরণ ও প্রতিপালনের শর্তে বর্তমান কমিটির কাছে অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়ে জামিয়া ইসলামিয়া ইসলামবাগ মাদরাসার প্রিন্সিপাল হিসাবে পুনরায় দায়িত্ব গ্রহণ করলাম। কমিটি কর্তৃক অব্যহতিপ্রাপ্ত কোন শিক্ষক-কর্মচারীকে মাদরাসায় নিয়োগ দেয়া যাবে না।

এখন থেকে মাদরাসা-মসজিদের শিক্ষক, খতীব, ইমাম ও কর্মচারী নিয়োগ বিয়োগ কমিটির নিয়ন্ত্রণাধীন থাকবে। ইতিমধ্যে যারা নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ছেন তাদের কাউকে বাদ দেয়া যাবে না। মাদরাসার অভ্যন্তরীন সববিষয় মজলিসে শূরার সিন্ধান্তক্রমে বাস্তবায়িত হবে। মজলিসে শূরার বর্তমান সভাপতি স্বপদে বহাল থাকবেন। মাদরাসায় অর্থনৈতিক বিষয় সম্পূর্ণরূপে কমিটির নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হবে। মাদরাসার ছাত্রদেরকে বাজনৈতিক কোন কর্মসূচীতে অংশ গ্রহণ করানাে যাবে না এবং মাদরাসার অভ্যন্তরেও কোন রাজনৈতিক চর্চা করা যাবে না। দুই জন ভাইস প্রিন্সিপাল থাকবেন ক, ভাইসপ্রিন্সিপাল: প্রশাসনিক ও উন্নয়ন খ, ভাইসপ্রিন্সিপাল: শিক্ষা বিভাগ। সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত প্রিন্সিপাল সাহেবকে প্রতিষ্ঠানে বাধ্যতামূলক উপস্থিত থাকতে হবে।

প্রিন্সিপাল ও ভাইসপ্রিন্সিপালগণ কমিটির সভাপতি/সেক্রেটারী থেকে তাদের প্রয়োজনীয় ছুটি নিতে পারবেন। প্রিন্সিপাল সাহেব মাদরাসা-মসজিদ বিষয়ে মাদরাসার ভেতর ছাত্র-শিক্ষক, এলাকার লােকজন বা অন্য কোন ব্যক্তির মাধ্যমে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মাদরাসা-মসজিদের স্বার্থের বিরুদ্ধে, কমিটির বিরুদ্ধে কোন ধরনের উস্কানীর ইন্ধন দিতে পারবেন না। এমনটি প্রমাণিত হলে কমিটি তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক যে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে।

এর আগে আজ ঢাকার ইসলামবাগ মাদরাসায় মুহতামিম ও শাইখুল হাদিস স্বপদে ফিরে এসেছেন শাইখুল হাদিস মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী। তাকে ভক্তবৃন্দ, ছাত্র- উস্তাদ, এলাকাবাসী ফুলেল সংবর্ধনা দিয়ে স্বাগত জানায়।

আজ রোববার দুপুরে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব শাইখুল হাদিস মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীকে মিছিলের মাধ্যমে ইসলামবাগ মাদরাসার ভক্তবৃন্দ, ছাত্র- উস্তাদ ফুলেল সংবর্ধনা জানায়। এর আগে ২০১৩ সালের ৫ মের এক মামলায় তিনি কারা বরণ করেন। গত ১৫ এপ্রিল রাত সাড়ে নয়টার দিকে রাজধানীর হাতিরপুল তার বাসা থেকে মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীকে আটক করে ডিবি পুলিশ। এরপর থেকে কয়েকদফা রিমান্ডে নেয়া হয়। রিমান্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই ছিলেন।

কারাগারে থাকাবস্থায় তাকে মাদরাসার শাইখুল হাদিস ও মুহতামিমের পদ থেকে অব্যহতি দেয়া হয়। অবশেষে আজ রোববার তিনি মাদরাসার শাইখুল হাদিস ও মুহতামিম পদে পুনর্বহাল হোন। বিষয়টি আওয়ার ইসলামকে নিশ্চিত করেছেন ইসলামবাগ মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা দিদার শফিক।

তিনি জানান, শাইখুল হাদিস মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী ইসলামবাগ মাদরাসায় ফুলেল সংবর্ধনার পর মাদরাসা মসজিদে ছাত্র শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে নসিহত পেশ করেন।

মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী শৈশব থেকেই একটি রাজনৈতিক পরিবারে বেড়ে ওঠেছেন। চিন্তা দর্শনও পেয়েছেন দেওবন্দী আদর্শের। তার দাদাজান মরহুম মাওলানা ইহসানুল হক আফেন্দি একজন খ্যাতিমান আলেম ছিলেন। ছিলেন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অগ্র সেনানী। তার দাদা মাওলানা ইহসানুল হক রচিত ‘বর্তমান রাজনৈতিক সংকট ও মুসলমানদের কর্তব্য’ নামে ব্রিটিশ বিরোধী গ্রন্থ রচনা করেন। গ্রন্থ রচনার অপরাধে দেড় বছর স্বশ্রম কারাভোগও করেছেন তিনি।

উপমহাদেশের শাইখুল হাদিস ও ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের মহানায়ক আল্লামা হুসাইন আহমদ মাদানীর সঙ্গে তার দাদার ছিলো পরম সখ্য। শিষ্য ইহসানুল হক আফেন্দির টানে নীলপামারীর ডোমার এলাকার সোনারায় গ্রামে বারবার ছুটে এসেছেন আল্লামা হুসাইন আহমদ মাদানী রহ.। এখনো আল্লামা হুসাইন আহমদ মাদানী রহ. এর স্মৃতিবিজড়িত জুতা বদনা ও নানা সামগ্রী সংরক্ষিত আছে মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীর বাড়িতে।

মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীর বাবা জনাব রশিদুল হাসান জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে একজন চেয়ারম্যান ছিলেন। মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী ছাত্র জীবন থেকেই ছাত্র জামিয়তের সঙ্গে সক্রিয় ছিলেন। নন্দিত এ ওয়ায়েজ মুজাহিদে মিল্লাত আল্লামা শাসসুদ্দিন কাসেমী রহ. এর হাতেগড়া সন্তান।

আত্মসুদ্ধী বা তাসাউফের দীক্ষা নিয়েছেন শাইখুল ইসলাম আল্লামা আহমদ শফী রহ. এর কাছ থেকে। বায়াতও হয়েছেন খেলাফতও গ্রহণ করেছেন। দেওবন্দী চিন্তা দর্শন ও হজরত মাদানীর আদর্শ লালনকারী পরীক্ষিত এ মানুষটি জমিয়তের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব নির্বাচিত হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে জমিয়তের নেতাকর্মীদের মাঝে।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ