আবদুল্লাহ তামিম।। পাকিস্তানের লাহোরের রায়বেন্ড ইজতেমার ২য় পর্ব বৃহস্পতিবার বাদ মাগরিব আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে। আগামী ১৪ নভেম্বর রোববার আখেরী মুনাজাতের মাধ্যমে এ বিশ্ব ইজতেমা শেষ হবে। এবারের ইজতেমায় প্রায় দেড় শত দেশ থেকে তাবলিগের মুরব্বি ও মুসল্লিরা উপস্থিত হয়েছেন।
আজ বাদ জোহর পাকিস্তান লাহোরের রাইবেন্ড তাবলিগি ইজতেমায় বয়ানে মাওলানা আবদুল মতিন ইন্ডিয়া বলেন, এ পৃথিবীতে যাদের ঈমানের মত মূল্যবান জিনিস পাওয়া হয়েছে, তার সবকিছুই পেয়েছে। কিন্তু যত বড় বাদশাহ কিংবা বড় লোকই হোক না কেন, যদি তার ঈমান না নসিব না হয় তাহলে তার সবকিছুই বৃথা। সে যেনো কিছুই পেল না। একবার সাইয়্যেদুনা হানজালা রা. একবার রাসুল সা. এর বৈঠকে বসে ছিলেন, আর রাসুল সা. জান্নাত আর জাহান্নামের আলোচনা করছিলেন।
সাহাবাদের মনে হচ্ছিল তারা জান্নাতে বিচরণ করছিলেন। হানজালা রা. এসব আলোচনা শুনে বৈঠক শেষে উল্টাপাল্টা বলছিলেন। সবাই বলছিলো হানজালা ঈমান হারিয়ে ফেলছে। তখন আবু বকর রা. তাকে দেখে বললেন তোমার কি হলো? হানজালা বলতেছে আমি রাসুল সা. এর সামনে গেলে এক রকম আর বাইরে বের হলে সেরকম আর থাকে না। আবু বকর রা. বললেন আরে আমিও তো তাহলে মুনাফিক হয়ে গেছি। চল আমরা রাসুল সা. এর কাছে যাই। তারা দৌঁড়ে রাসুল সা. এর কাছে গেলেন। ইয়া রাসুল সা. আমাদের তো এ অবস্থা। রাসুল সা. মনে মনে বললেন তাদের ঈমান বৃদ্ধি পাওয়া শুরু করেছে। রাসুল সা. তাদের কে আশ্বাস দিয়ে নানানভাবে তাদের বুঝিয়ে দিলেন।
তিনি আরো বলেন, ঈমান এমন একটি শক্তি যা কোনো বাধা তাকে বিরত রাখতে পারে না। আজ যদি সব মুসলিমদের ঈমানের শক্তি থাকতো তো এ মজমা আরো বড় হতো। কোনো বাধা ঈমানের মজলিশে আসা থেকে বিরত রাখতে পারবে না।
আল্লাহ তায়ালা আজ আমাদেরকে মেহেরবানী করে এ মহতিপূর্ণ মজলিসে আসার তাওফিক দিয়েছেন। আমরা যদি ঘরে থাকতাম আমাদের ঈমানের কি অবস্থা ছিলো আর এ মজমায় দুদিনে আমাদের ঈমানের কি অবস্থা। অনেক অনেক পরিবর্তন। আমরা এ পৃথিবীতে ছিলাম না। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে প্রেরণ করেছেন। কেন প্রেরণ করেছেন? তার ইবাদতের জন্য। তাই হার হালতে আল্লাহর ইবাদত করতে হবে।
এর আগে বিশ্ববাসীর হেদায়াত কামনা করে গত রোববার মাওলানা ইবরাহিম দেওলার দোয়ায় শেষ হয়েছে রায়বেন্ড ইজতেমার ১ম পর্ব। ইজতেমা থেকে মোট জামাত বের হয়েছে ২০২৯টি।
রায়বেন্ডের ফেসবুক পেজের দেয়া তথ্য মতে এক সালের বিদেশি জামাত বের হয়েছে ৩৪টি। এক সালের দেশি জামাত বের হয়েছে ৮০টি। তিন চিল্লার জামাত বের হয়েছে ১৪৩টি। এক চিল্লার জামাত বের হয়েছে ১৩৯৮টি। তিন দিনসহ অল্পকিছুদিনের জামাত বের হয়েছে ১১৪টি। বিদেশি মেহমানদের জামাত বের হয়েছে ২৪৫টি। মিশ্রিত জামাত ছিলো ৫৫টি।
রায়উইন্ড তাবলিগী ইজতেমা দ্বিতীয় অংশের বিস্তারিত কার্যক্রম প্রকাশ করেছে ইজতেমা কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার, ১১ নভেম্বর আসরের পর বয়ান হযরত মাওলানা নজর-উর-রহমান রায়উইন্ড। বাদ মাগরিব বয়ান হযরত মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা। শুক্রবার, নভেম্বর ১২, ফজরের পর বয়ান মাওলানা আব্দুল রহমান বোম্বাই। শুক্রবার মাওলানা ইসমাইল গোধরা। আসরের পর মাওলানা জহিরুল হাসান নিজামুদ্দিন।
বাদ মাগরিব মাওলানা আহমদ লাট ভারত। শনিবার, নভেম্বর ১৩ ফজরের পর বয়ান মাওলানা রবিউল হক বাংলাদেশ। যোহরের পর বয়ান মাওলানা আব্দুল মতিন। বাদ আছর বয়ান ভাই ফারুক ব্যাঙ্গালোর। মাগরিবের পর বয়ান মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা ভারত। রবিবার, নভেম্বর ১৪ ফজরের পর বয়ান মাওলানা ওবায়দুল্লাহ খুরশীদ রায়উইন্ড। রবিবার আখেরী মুনাজাত মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা।
-এটি