আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: বিদ্যুতের বিল বেশি আসা বিষয়ে অভিযোগ থাকে প্রায় সবারই। নির্ধারিত বিলের চেয়ে বেশি আসলেই বাড়তি চাপ পড়ে। প্রতি মাসেই চেষ্টা করে বিদ্যুৎ বিল যেন কম আসে। কিন্তু সেটা আর হয় না। নিজের অজান্তেই আমরা প্রতিদিন বহু বিদ্যুৎ অপচয় করি। যার ফল আমাদেরই ভোগ করতে হয়। আসুন জেনে নেই বিদ্যুতের বিল কমানোর কিছু টিপস।
এক. অপ্রয়োজনে আলো জ্বালাবেন না
সকালে যদি ঘরে আলো থাকে তাহলে অহেতুক আলো জ্বালাবেন না। তেমন হলে যে ঘরে বসে কাজ করবেন সেই ঘরের জানলা খুলে দিন। ফলে আলোর সাশ্রয় হবে। খুব প্রয়োজন ছাড়া আলো একেবারেই জ্বালাবেন না। মাসের শুরুতেই বাড়ির সবাইকে এই বিষয়ে সতর্ক করে দিন।
অনেক সময় রাতের বেলায় সব ঘরে আলো জ্বালিয়ে রাখেন অনেকেই। যে ঘরে থাকবেন না সে ঘরে আলো জ্বালানোর কোনও প্রয়োজন নেই। বাড়িতে কোনও অতিথি এলে আলো জ্বালিয়ে রাখুন। কিন্তু, অহেতুক আলো জ্বালানোর প্রয়োজন নেই। কোনও ঘরে কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পর সেই ঘরের আলো বন্ধ করে দিন।
দুই. ঘর থেকে বের হওয়ার সময় লাইট, ফ্যান বন্ধ করে দেবেন
অনেকেই কোনও ঘর থেকে বেরিয়ে লাইট, ফ্যান চালিয়ে রাখেন। সেটা যে বন্ধ করতে তা ভুলে যান। বিদ্যুতের খরচ কম করতে হলে এগুলো করবেন না। সব সময় ঘর থেকে বের হওয়ার সময় লাইট, পাখা বন্ধ করে দেবেন। বাড়িতে খুদে সদস্য থাকলে তাকে দায়িত্ব দিন এদিকে খেয়াল রাখতে ৷ এভাবে ছোটো থেকে তাকেও এই বিষয়ে সতর্ক করা যাবে।
তিন. বিদ্যুৎ চলে গেলে বাড়ির সব লাইট, ফ্যান বন্ধ করে দেবেন
বিদ্যুৎ চলে গেলে বাড়ির সব আলো পাখা বন্ধ করে দেবেন। অনেকেই কারেন্ট এসেছে বুঝতে পারার জন্য ঘরের আলো ও পাখা জ্বালিয়ে রাখেন। এটা একেবারেই করবেন না। একটা রুমে সুইচ অন করে সবাই বসে থাকুন। এতে এক ধাক্কায় বিল অনেকটা বেড়ে যায়। তাই কারেন্ট যাওয়ার পর সব বন্ধ করে দিন। সেদিকে খেয়াল রাখবেন। সেটাই আপনাকে বিদ্যুৎ আসার খবর দিয়ে দেবে।
চার. এলইডি আলোর ব্যবহার করুন
বাড়িতে এলইডি আলোর ব্যবহার বাড়ান। এতে বিদ্যুৎ কম লাগে। যে সব জায়গাতে বেশি আলোর প্রয়োজন রয়েছেন সেখানে এলইডি বাল্ব ও টিউবলাইট লাগান। দেখবেন বিল অনেক কম আসবে। বিশেষ করে বাথরুম, রান্নাঘর এই সব জায়গায় এই আলো লাগান। আর এলইডি টিউব লাইটের আলো অনেক বেশি হয়।
সারা বাড়িতে আলো জ্বালিয়ে না রেখে টাস্ক লাইটিং শুরু করুন। যেমন, দরকারে বই পড়ার জন্য রিডিং ল্যাম্প ব্যবহার করুন। টিভি দেখার সময় খুব বেশি আলোর প্রয়োজন পড়ে না, সেখানে কম পাওয়ারের এলইডি আলো লাগান। রান্না ঘরে আলোর প্রয়োজন খুব বেশি হয় সেখানেও এলইডি লাগান।
পাঁচ. নিয়মিত পরিষ্কার করুন
বাড়ির সব বাল্ব ও আলো নিয়মিত পরিষ্কার করুন। অনেক সময় ধুলো জমে গেলে তা থেকে বেশি আলো বের হয় না। কেমন যেন অন্ধকার লাগে। তাই মাসে অন্তত একবার করে আলো পরিষ্কার করুন। দেখবেন এতে ঘরে আলোর পরিমাণ বেশি হবে আর বিদ্যুৎ সাশ্রয়ও হবে।
ছয়. হাতে জামা কাপড় ধুয়ে ফেলুন
অনেকেই কাপড় জামা ওয়াশিং মেশিনে কাচেন। কিন্তু আপনারা জানেন কি ওয়াশিং মেশিন ব্যবহারে অনেক বেশি বিল আসে৷ তাই খরচ কমাতে চাইলে অল্প জামা কাপড় হাতে কাচতে পারেন এবং ড্রায়ার ব্যবহারের বদলে বারান্দা বা ছাদে কাপড় শুকতো দিন। গরম বা ভ্যাপসা আবহাওয়ায় এসি চালালে বিল বেশি আসে তাই অপ্রয়োজনে এসি না চালিয়ে ফ্যান চালাতে পারেন৷
সাত. শীতাতপ যন্ত্রের ফিল্টার পরিষ্কার করুন
নিয়মিত এসির ফিল্টার পরিষ্কার না হলেও বিল বেশি আসে। চেষ্টা করুন শীতাতপ বা বাতানুকূল যন্ত্র সবসময় যেন ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে থাকে। এর থেকে বেশি কমিয়ে দিলে এসির উপর চাপ পড়বে। তাতে এসি খুব তাড়াতাড়ি খারাপ হয়ে যেতে পারে। তাই ২৫-এ রাখুন। এতে ঘরও ঠান্ডা হবে আর বিদ্যুতের ব্যয়ও কম হবে।
আট. উঠে যাওয়ার সময় ল্যাপটপ বা কম্পিউটার বন্ধ করে দিন
কাজ শেষ করে অনেকেই উঠে পড়েন। কিন্তু, ল্যাপটপ বা কম্পিউটার খোলা রেখে দেন। এটা একেবারেই করবেন না। উঠে যাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে তা বন্ধ করে দিন। কারণ ওই একটু একটু করেই অনেকটা হয়ে যায়। তা অনেক সময়ই আমরা বুঝতে পারি না। আর এই পদ্ধতি মেনে প্রতি মাসে অন্তত ৪০ শতাংশ বিদ্যুতের খরচ কমাতে পারেন আপনি।
-এএ