নুরুদ্দীন তাসলিম।।
বিশ্ব দরবারে নানা ইস্যুতেই আলোচিত নাম বাংলাদেশ। সাম্প্রতিক সময়ে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবেও বাংলাদেশের খ্যাতি কম নয়। নানা মাত্রিক খ্যাতির তালিকায় নতুন করে যুক্ত হল বাংলাদেশের গবেষক আলেম মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল মালেকের ‘আল মাদখাল ইলা উলূমিল হাদিস’ নামক কিতাবটির ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা।
দেশের বাইরে মিসরের রাজধানী কায়রোর আন্তর্জাতিক বই মেলায় ‘দার আল-রায়াহীন’ নামে বৈদেশিক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের বেস্ট সেলার বইগুলোর তালিকায় জায়গা করে নেওয়া এ কিতাবটি নিয়ে সরগরম নেট মাধ্যম। অফলাইনেও এ নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করা মানুষের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়।
কিতাবটির এমন ব্যাপক জনপ্রিয়তা বাংলাদেশের ইলমি গবেষণা ও চর্চাকে নিয়ে গেছে এক নতুন উচ্চতায়। দেশের জন্য একে নতুন মাইলফলক বলেও মনে করছেন অনেকেই।
আরো পড়ুন: ‘উলুমুল হাদিসের ইতিহাসে দেশের জন্য এক গৌরবময় অধ্যায়’
বাংলাদেশে উলুমে হাদিসের সিলেবাসে কিতাবটি অন্তর্ভুক্ত করার প্রেক্ষাপট বিষয়ে আওয়ার ইসলামকে জামিয়া আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারীর উলুমুল হাদিস বিভাগের শিক্ষক মুফতী আবদুল্লাহ নাজীব বলেছেন, বাংলাদেশে বড় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়াতে সর্বপ্রথম আল মাদখালকে সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করেন আল্লামা হারুন ইসলামাবাদী রহ.। ইসলামাবাদী রহ.-এর এক শাগরিদ আমাকে শুনিয়েছেন, ইসলাবাদী রহ. নিজেই ছাত্রদের সামনে কিতাবটি পড়তেন এবং উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলতেন, দেখ; কত সুন্দর লেখেছেন লেখক!
বর্তমানে বিশ্ব দরবারে সমাদৃত কিতাবটির প্রথম প্রকাশের সময়টি কেমন ছিল? তা নিয়ে মজার টুকরো স্মৃতি জানিয়েছেন শায়েখ আবদুল মালেকের স্নেহধন্য ছাত্র মুফতী আবদুল্লাহ নাজীব।
আরো পড়ুন: আল মাদখাল: ‘একসাথে এক কিতাবে এমন জ্ঞানগর্ভ আলোচনা পাওয়া বিরল’
তিনি আওয়ার ইসলামকে বলেছেন, ‘ ১৪১৯ হিজরিতে কিতাবটি যখন প্রথম প্রকাশ করা হয়, প্রথম প্রকাশের প্রচ্ছদ অসাধারণ ছিল, তখনকার সময়ে বাংলাদেশে আরবি কিতাব ছাপানোর খুব একটা প্রচলন ছিল না, ছাপালেও খুব একটা সুন্দর হতো না। কিতাবটি ছাপানোর পরে তৎকালীন বড় একজন আলেমের কাছে কিতাবটি হাদিয়া দিতে গিয়েছিলেন হযরত মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল মালেক হাফি.। দেখা করার আগে কিতাব নিয়ে বাহিরের কামরায় বসে ছিলেন তিনি। সেখানে বেশ কয়েকজন আলেম বসেছিলেন, শায়খও সেখানে গিয়ে বসেন। নতুন কিতাবের প্রতি কেউ হয়তোবা আগ্রহ দেখাবেন অথবা হাতে নিয়ে নেড়েচেড়ে দেখবেন- এমন ভাবনা থেকে কিতাবটি উপস্থিত ওলামায়ে কেরামের সামনে থাকা টেবিলে রাখেন তিনি। কিন্তু সে সময়ের তরুণ আলেম মাওলানা আবদুল মালেকের কিতাবটির প্রতি আগ্রহ দেখাননি কেউ, নেড়েচেড়েও দেখেননি তারা’।
আরো পড়ুন: মিসর আন্তর্জাতিক বইমেলায় ‘বেস্ট সেলার’ মাওলানা আবদুল মালেকের বই
‘১৪১৯ হিজরিতে সেই বড় আলেমের অভ্যর্থনা কামরায় অপেক্ষার দিন এবং গত জুলাইয়ে কায়রোতে কিতাবটির ব্যাপক সমাদৃত হওয়ার দিনটির মাঝে কত পার্থক্য, কত প্রাপ্তি’!- কিছুটা আপ্লুত হয়ে বলছিলেন মাওলানা আব্দুল্লাহ নাজীব।
‘এই জনপ্রিয়তা আল্লাহ তায়ালার বিশেষ অনুগ্রহ, সব কিছুর জন্য তারই কৃতজ্ঞতা আদায় করেছেন জামিয়া আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারীর উলুমুল হাদিস বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক মুফতি আবদুল্লাহ নাজীব।
এনটি