রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আরও দুই থানার ওসিকে বদলি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার  আরও দুই থানার ওসিকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। এর মধ্যে বিজয়নগর থানার ওসি মো. আতিকুর রহমানকে রংপুর এবং নাসিরনগর থানার ওসি এটিএম আরিচুল হককে বরিশাল রেঞ্জে বদলি করা হয়েছে। বুধবার (৯ জুন) পুলিশ সদর দফতর থেকে দুই ওসির বদলি সংক্রান্ত আদেশ এসে পৌঁছায় জেলা পুলিশের কাছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেন রেজা সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। হেফাজতের তাণ্ডবের পর এনিয়ে জেলা পুলিশের অন্তত ২২ জন কর্মকর্তাকে অন্যত্র বদলি করা হয়।

এর আগে হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকদের তাণ্ডবের এক মাস পূর্ণ হওয়ার দিনে পুলিশ সদর দফতরের এক আদেশে গত ২৬ এপ্রিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুর রহিমকে রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়। এরপর ২৭ এপ্রিল জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মো. আলাউদ্দিন চৌধুরীকে সিলেট রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সে এবং সরাইলের খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ওসি গাজী মো. সাখাওয়াত হোসেনকে গাজীপুরে বদলি করা হয়।

পরবর্তীতে ৯ মে পুলিশ সদর দফতরের আরেকটি আদেশে সরাইল থানার ওসি নাজমুল আহমদেকে বরিশাল রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়। এরপর ১১ মে সদর মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) ইশতিয়াক আহমেদকে নাসিরনগর থানার চাতলপাড় পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে এবং গত ১৯ মে সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মুহাম্মদ শাহজাহানকে থানা থেকে সরিয়ে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে পদায়ন করা হয়।

সর্বশেষ ২৬ মে জেলা পুলিশের ১৩ উপ-পরিদর্শক (এসআই) কে ৬টি জেলায় বদলী করা হয়। গত ২৭ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মো. রইছ উদ্দিনকে বদলি করা হয় চট্টগ্রাম রেঞ্জে। তাকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে।

মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনের প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা চলতি বছরের ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ চালায়। এসময় হামলাকারীরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন, পৌরসভা কার্যালয়, সুর সম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন, এসিল্যান্ডের কার্যালয়, সুর সম্রাট আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মিলনায়তন, জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যালয়, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, সিভিল সার্জনের কার্যালয়, জেলা মৎস্য অফিস, সার্কিট হাউজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব, মাতৃসদন, সরকারি গণগ্রন্থাগার।

এছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকারের বাসভবন, জেলা শিল্পকলা একাডেমী, বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর দুটি ম্যুরালসহ তিনটি ম্যুরাল, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরে উন্নয়ন মেলার প্যান্ডেল, একই চত্বরে থাকা শহর সমাজসেবা প্রকল্পের অফিস, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের অফিস, পৌর মেয়রের বাসভবন, সার্কিট হাউজ, হাইওয়ে থানা ভবন, ইউনিভার্সিটি অব ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ক্যাম্পাস, হিন্দু সম্প্রদায়ের কেন্দ্রীয় কালিমন্দির, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির বাসভবন, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের বাসভবন, আশুগঞ্জ টোলপ্লাজা, সুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় সহ সরকারি, বেসরকারি প্রায় অর্ধশতাধিক স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এতে পুরো ব্রাহ্মণবাড়িয়া ধ্বংসাত্মক নগরী হিসেবে পরিণত হয়। এর পর থেকে একে একে এসব পুলিশ কর্মকর্তাকে অন্যত্র বদলি করা হয়।

এমডব্লিউ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ