সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


চাঁদরাতে আতশবাজি নয়, ইবাদত করুন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আবু সুফিয়ান মাহমুদ।।

রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মহিমাময় টানা একমাস সিয়াম সাধনার পর আকাশে শাওয়ালের চাঁদ দেখা মাত্রই খুশির জোয়ার বয়ে যায় প্রতিটি রোজাদারের দেহ-মনে। প্রতিটি মুমিনের ঘরে ঘরে আনন্দের ঢেউ বয়ে যায় ঈদ আনন্দে। ঈদ রাত বা চাঁদ রাত বলা হয় এই রাতকে। এই রাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতমন্ডিত।

ফজিলতপূর্ণ এই রাতটি অহেতুক গল্পগুজব, আড্ডা, শপিংমলে কিংবা আনন্দ উদযাপনের নামে আতশবাজি ফোটানোয় লিপ্ত থেকে পার করা কোনক্রমেই সমীচিন ও শরীয়তসিদ্ধ নয়। এই রাতে শরীয়ত সম্মতভাবে স্বাভাবিক আনন্দ উদযাপন করতে মানা নেই, তবে হাদিসে এ রাতের অসংখ্য ফজিলত বর্ণিত আছে। তাই, একমাস সিয়াম সাধনার পর এই একটি রাত অবহেলায় না কাটিয়ে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের আশায় ইবাদতে মশগুল থাকা সকল মুমিনের কর্তব্য।

এই রাতের বিশেষ একটি আমল হচ্ছে, নতুন চাঁদ দেখার দোয়া পড়া। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নতুন চাঁদ দেখলে এই দোয়াটি পাঠ করতেন— اَللّهُّمَّ أَهِلَّهُ عَلَيْنَا بِالْيُمْنِ وَالْإِيْمَانِ وَالسَّلاَمَةِ وَالْإِسْلاَمِ رَبِّيْ ورَبُّكَ الله

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আহিল্লাহু আলাইনা বিল য়ুমনি ওয়াল ঈমান, ওয়াস সালামাতি ওয়াল ইসলাম; রাব্বি ওয়া রাব্বুকাল্লাহ। -তিরমিজি

অর্থ : হে আল্লাহ! এ চাঁদকে ঈমান ও নিরাপত্তা, শান্তি ও ইসলামের সঙ্গে উদিত করুন। আমার ও তোমার প্রভু আল্লাহ।

ঈদের রাতে সদকাতুল ফিতর আদায় করা উত্তম একটি আমল। তবে, ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে সদকাতুল ফিতর আদায় করা সুন্নাত। রোজার পূর্ণাঙ্গতা ও ভুল-ত্রুটি মার্জনার জন্য সদকাতুল ফিতর আদায় করা আবশ্যক।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম বলেছেন- যে ব‌্যক্তি ঈদের সালাতের আগে এটা আদায় করবে, তা সদকাতুল ফিতর হিসেবে গ্রহণযোগ‌্য হবে। আর যে ঈদের সালাতের আদায় করবে, তা অপরাপর নফল সদকা হিসেবে গৃহীত হবে।’ -আবু দাউদ

ঈদের রাতে নফল ইবাদত করার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অসংখ্য হাদীসে ঈদের রাতে ইবাদত করার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। এবং সাহাবায়ে কেরাম ও পূর্ববর্তী মনীষীগণের ঈদের রাতে ইবাদত করার বর্ণনা প্রশিদ্ধ।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন- যে ব্যক্তি ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহার রাতকে (ইবাদতের মাধ্যমে) জীবিত রাখবে, তার অন্তর ওই দিন মরবে না, যেদিন অন্যদের অন্তর মরে যাবে। -আল মু‘জামুল আওসাত

প্রত্যেক মুসলমানের উচিত, ৩টি বিশেষ মর্যাদা পাওয়ার লক্ষ্যে ঈদুল ফিতরের আগের রাত তথা চাঁদ রাত ইবাদত-বন্দেগিতে অতিবাহিত করা। এ ইবাদতের ফলে বিশেষ ৩টি মর্যাদা পাবে রোজাদার মুমিন। তাহলো- ১. এ রাতের কোনো দোয়া আল্লাহ ফেরত দেবেন না। ২. এ রাতের ইবাদতকারীর জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে। ৩. এ রাতের ইবাদতকারীর অন্তরের মৃত্যু হবে না।

সুতরাং বরকত ও ফজিলত এর এই চাঁদরাতে আতশবাজি ফোটানো, হাসি তামাশায় মত্ত না থেকে তাহাজ্জুদ, নফল নামাজ, তাসবিহ-তাহলিল, জিকির-আজকার ও তেলাওয়াতে নিমগ্ন থাকা প্রত্যেক রোজাদার মুসলমান কর্তব্য। আল্লাহ তায়ালা তাওফীক দান করুন। আমীন।

এনটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ