ইয়াহইয়া বিন আবু বকর।।
হারামাইন শরিফাইনের পরিচালনা বিষয়ক কমিটির তত্তবধানে রয়েছে হাজারো বিষয়ে রচিত কিতাবের বিশাল গ্রন্থাগার৷ গ্রন্থাগারটি মক্কার হেরেমের মধ্য অবস্থিত৷ এতে রয়েছে লক্ষ লক্ষ মূল্যবান কিতাব৷ দুর্লভ ও দুষ্প্রাপ্য বহু কিতাবের সংগ্রহও এতে রয়েছে৷ ইসলামী মৌলিক শিক্ষার প্রধান প্রধান কিতাব সহ ফিকহ, হাদীস, তাফসীর, লিসান্স, সাইন্স ও মনোবিজ্ঞানসহ আরো রয়েছে অসংখ্য বিষয়ে রচিত কিতাবের সমাহার৷ বলতে গেলে মক্কাবাসী হাজি এবং মক্কার পর্যটক ও জ্ঞানপিপাসুদের জন্য এটি জ্ঞান-বিজ্ঞানের এক বিশাল ভাণ্ডার৷
গ্রন্থাগারটি সুবিশাল হওয়ার সাথে সাথে ইসলামী ইতিহাসের প্রাচীন বৃহত গ্রন্থাগারের মধ্যে এটাকেও উল্লেখযোগ্যভাবে গন্য করা হয়৷
গ্রন্থাগারটির ইতিহাসঃ
ইতিহাসের উৎসগ্রন্থ অধ্যয়নে জানা যায়, ১৬১ হিজরীতে আব্বাসী খলিফা মুহাম্মাদ মাহদীর শাসনামলে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়৷ হিজাজে সাউদ পরিবারের রাজ্য প্রতিষ্ঠার পর সাউদ বংশের প্রথম শাসক আবদুল আজিজ বিন আবদুল রহমান আস সাউদ গ্রন্থাগারটির সম্প্রসারণ ও আরও উন্নত করণের প্রতি মনোনিবেশ করেন। গ্রন্থাগারটির উন্নতি ও সমৃদ্ধির জন্য আলেমদের সমন্বয়ে একটি কমিটিও গঠন করেন৷
১৩৫৭হিজরিতে এই গ্রন্থাগারটির "মাকতাবাতুল হারামিল মাক্কিয়্যি" নামে নামকরণ করা হয়৷ ঐতিহাসিক প্রাচীন এ গ্রন্থাগারটিতে সমসাময়িক সাহিত্যের ও একটি বৃহত অংশ রয়েছে। এই কারণেই এই গ্রন্থাগারটি বর্তমান সময়ের বৃহত্তম গ্রন্থাগারগুলির একটি।
লেখক গবেষক এবং বিভিন্ন জ্ঞান বিশেষকরে ধর্মীয় জ্ঞান নিয়ে অধ্যয়নরত ও ডিগ্রী অর্জনকারী ছাত্রদের জন্য এটি জ্ঞান-বিজ্ঞানের নির্ভরযোগ্য ও ভিত্তিমূলক একটি কেন্দ্র৷ বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ব বিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিষয়ে তাখাসসুসকারী ত্বলাবারা এর থেকে ভরপুর ফায়দা অর্জন করে থাকে৷ শিক্ষক ছাত্র, লেখক গবেষক, দায়ী ও বুদ্ধিজীবি সকলেই জ্ঞানপিপাসা মেটাতে গ্রন্থারটিকে গনিমত মনে করেন৷
গ্রন্থাগারটির বিশেষ বৈশিষ্ট: আধুনিক প্রযুক্তির আলোকে অন্ধদের জন্যও কিতাব প্রস্তত করা হয়েছে৷ ফলে তারাও এ গ্রন্থারটির ইলমী খাজানা থেকে বঞ্চিত নয়৷
ঐতিহাসিক এ গ্রন্থারটিতে ৭০ হাজার শিরোনামে লিখিত কিতাব রয়েছে৷ ধর্মীয় জ্ঞান, ইসলামী তাহযীব ও তামাদ্দুন সহ বিশ্ব সংস্কৃতি এবং সভ্যতা নিয়ে রচিত কিতাবও রয়েছে৷
পবিত্র মাহে রমজান আসার সাথে সাথে দর্শনার্থীদের ভীড়ও এতে বেড়ে যায়৷ এ বছর বিশ্ব করোনা মহামারির কারণে গ্রন্থাগারটিতে অধ্যয়নকারীদের স্বাস্থ্য রক্ষার্থে স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে৷ সেখানে স্যানিটাইজার সহ পরিক্ষার যন্ত্রপাতিও রয়েছে৷ গ্রন্থাগারটিতে প্রবেশকারী প্রত্যকের তাপমাত্রা মাপা হয় এবং করোনা পরিক্ষা করা হয়৷
সূত্র: আল আরাবিয়া নেট
এনটি