মোস্তফা ওয়াদুদ
নিউজরুম এডিটর
পবিত্র কুরআনুল কারীম। মানবজীবনের সব সমস্যার সমাধানের সংবিধান। ইংরেজিতে এক অক্ষর থেকে নিয়ে দশ অক্ষর পর্যন্ত হরফ দিয়ে এমন দশটি শব্দ তৈরি হয়। যে শব্দগুলোর অর্থের সাথে কুরআনের দশটি আয়াতের মর্মার্থ মিলে যায়। আর কুরআনের এ ১০ টি আয়াতের অর্থ বুঝে পালন করলে নিজেকে সেরা মুসলিম হিসেবে গড়ে তোলা যাবে। পাল্টে দেয়া যাবে নিজের জীবনকে। ইংরেজি দশ অক্ষরের সাথে মিল রেখে কুরআনের ১০ আয়াত হলো,
১. সর্বাধিক অহংকারী ও স্বার্থপর এক অক্ষরের শব্দ: I (আমি)- এড়িয়ে চলুন! কেননা ‘আমি’ শব্দটি অধিকাংশ মানুষ উচ্চারণ করে গর্বভরে। আল্লাহম তায়ালা ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা দাম্ভিক-গর্বিতজনকে পছন্দ করেন না। (সুরা নিসা, আয়াত-৩৬)
২. সবচেয়ে সন্তোষজনক দ্বি-অক্ষরের শব্দ: WE (আমরা) - এটি ব্যবহার করুন! কুরআনুল কারীমে এরশাদ হয়েছে, হে নবী আপনি বলে দিন! নিশ্চয় আল্লাহর পথই সুপথ। আমরা আদিষ্ট হয়েছি যাতে স্বীয় পালনকর্তার আজ্ঞাবহ হয়ে যাই। এবং তা এই যে, নামায কায়েম কর এবং তাঁকে ভয় কর। তাঁর সামনেই তোমরা একত্রিত হবে। (সুরা আন’য়াম, আয়াত ৭১-৭২)।
৩. সবচেয়ে বিষাক্ত তিন অক্ষরের শব্দ: EGO (ইজিও) - এটি মেরে ফেলুন! এরশাদ হয়েছে, ‘সে বলল, আমি এই ধন আমার নিজস্ব জ্ঞান-গরিমা দ্বারা প্রাপ্ত হয়েছি। সে কি জানে না যে, আল্লাহ তার পূর্বে অনেক সম্প্রদায়কে ধ্বংস করেছেন, যারা শক্তিতে ছিল তার চাইতে প্রবল এবং ধন-সম্পদে অধিক প্রাচুর্যশীল? পাপীদেরকে তাদের পাপকর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে না।’ (সুরা কাসাস, আয়াত ৭৮)।
৪. সর্বাধিক ব্যবহৃত চার অক্ষরের শব্দ: LOVE (প্রেম করুন) - এর মূল্য দিন! আল্লাহ বলেন, আর এক নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্যে তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের সংগিনীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাক এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে। (সুরা রূম, আয়াত-২১)
৫. সর্বাধিক আনন্দদায়ক পাঁচ অক্ষরের শব্দ: SMILE (হাসি) - এটি রাখুন! কুরআনে আছে, এবং তিনিই হাসান ও কাঁদান (সুরা নাজম, আয়াত-৪৩)
হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ‘কাউকে গালি দিও না, তার ভাল কাজের দিকে তাকাও। আর যখন তোমার ভাইয়ের সাথে কথা বলবে, তখন তার সাথে হাসিখুশি মুখে কথা বলো’। (সুনান আবু দাউদ)
আন্দামান নওশাদ: পবিত্র কুরআনুল কারীম। মানবজীবনের সব সমস্যার সমাধান রয়েছে যাতে। কুরআনের এমন পাঁচটি আয়াত রয়েছে যেগুলো পালন করলে নিজেকে সেরা মুসলিম হিসেবে গড়ে তোলা যাবে। পাল্টে দেয়া যাবে নিজের জীবনকে। আয়াত পাঁচটি হলো,
৬. দ্রুত ছড়িয়ে ছয় অক্ষরের শব্দ: RUMOUR (গুজব) - এটি উপেক্ষা করুন! আল্লাহ বলেন, হে মুমিনগণ, তোমরা অনেক ধারণা থেকে বেঁচে থাক। নিশ্চয় কতক ধারণা গোনাহ। এবং গোপনীয় বিষয় সন্ধান করো না। তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি তারা মৃত ভ্রাতার মাংস ভক্ষণ করা পছন্দ করবে? বস্তুতঃ তোমরা তো একে ঘৃণাই কর। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু। (সুরা হুজুরাত, আয়াত-১২)
৭. সর্বাধিক কঠোর পরিশ্রমী সাত-অক্ষরের শব্দ: SUCCESS (সাফল্য) - এটি অর্জন করুন! কুরআনুল কারীমে এরশাদ হয়েছে, এমন লোকেরা, যাদেরকে ব্যবসা-বাণি জ্য ও ক্রয়-বিক্র য় আল্লাহর স্মরণ থেকে, নামায কায়েম করা থেকে এবং যাকাত প্রদান করা থেকে বিরত রাখে না। তারা ভয় করে সেই দিনকে, যেদিন অন্তর ও দৃষ্টিসমূহ উল্টে যাবে। (তারা আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করে) যাতে আল্লাহ তাদের উৎকৃষ্টতর কাজের প্রতিদান দেন এবং নিজ অনুগ্রহে আরও অধিক দেন। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা অপরিমিত রুযী দান করেন। (সুরা নুর, আয়াত: ৩৭-৩৮)
৮. সর্বাধিক ঈর্ষণীয় আট অক্ষরের শব্দ: JEALOUSY (ঈর্ষা) - এটি দূরত্ব করুন! আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, ‘আর তোমরা আকাঙ্ক্ষা করো না এমন সব বিষয়ে যাতে আল্লাহ তাআলা তোমাদের একের উপর অপরের শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। পুরুষ যা অর্জন করে সেটা তার অংশ এবং নারী যা অর্জন করে সেটা তার অংশ। আর আল্লাহর কাছে তাঁর অনুগ্রহ প্রার্থনা কর। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা'আলা সর্ব বিষয়ে জ্ঞাত। (সুরা নিসা, আয়াত: ৩২)
যখন তারা বললঃ অবশ্যই ইউসুফ ও তাঁর ভাই আমাদের পিতার কাছে আমাদের চাইতে অধিক প্রিয় অথচ আমরা একটা সংহত শক্তি বিশেষ। নিশ্চয় আমাদের পিতা স্পষ্ট ভ্রান্তিতে রয়েছেন। হত্যা কর ইউসুফকে কিংবা ফেলে আস তাকে অন্য কোন স্থানে। এতে শুধু তোমাদের প্রতিই তোমাদের পিতার মনোযোগ নিবিষ্ট হবে এবং এরপর তোমরা যোগ্য বিবেচিত হয়ে থাকবে। (সুরা ইউসুফ, আয়াত: ৮-৯)
৯. সর্বাধিক শক্তিশালী নয় অক্ষরের শব্দ: KNOWLEDGE (ইসলামের জ্ঞান) - এটি অর্জন করুন! আল্লাহ বলেন, প্রজ্ঞাময় কোরআনের শপথ। (কুরআনুল কারীম জ্ঞানে সমৃদ্ধ!) (সুরা ইয়াসীন, আয়াত: ২)
১০. সর্বাধিক প্রয়োজনীয় দশ-অক্ষরের শব্দ: CONFIDENCE (আল্লাহর গাইডেন্সে ভরসা) - এটি বিশ্বাস করুন! আল্লাহ তায়ালা বলেন, আপনি বলুন, আমাদের কাছে কিছুই পৌঁছবে না, কিন্তু যা আল্লাহ আমাদের জন্য রেখেছেন; তিনি আমাদের কার্যনির্বাহক। আল্লাহর উপরই মুমিনদের ভরসা করা উচিত। (সুরা তাওবা, আয়াত: ৫১)
‘অবশ্য যেসব লোক ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে, তাদেরকে হেদায়েত দান করবেন তাদের পালনকর্তা, তাদের ঈমানের মাধ্যমে। এমন সুসময় কানন-কুঞ্জে র প্রতি যার তলদেশে প্রবাহিত হয় প্রস্রবণসমূহ।’ (সুরা ইউনুস, আয়াত: ৯)
মানুষ যখন কুরআনুল কারীম ও মহানবী সা. এর সুন্নাহ যথাযথভাবে অনুসরণ করে তখনই জীবনে শান্তি পান। আল্লাহ তায়ালা আমাদের জীবনকে সুখ শান্তি দ্বারা ভরপুর করে দিন। আমিন।
এমডব্লিউ/