মাওলানা জহিরুল ইসলাম হুসাইনী
সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা- প্রতি ভরি-> ৯৩৩৳ (নিসাব ৫২.৫ ভরির দাম ৪৮,৯৮৩৳) সাড়ে সাত ভরি স্বর্ন - প্রতি ভরি ৪০,২৪০*৭.৫= প্রায় ৩ লাখ টাকা। ক্যাশ টাকার নিসাব- রুপার মুল্যে হিসাব করলে ৪৮,৯৮৩৳ আর সোনার মুল্যে হিসাব করলে (৭.৫x৪০,২৪০৳) = প্রায় ৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ ৪৮ হাজার বা ৩ লাখ টাকা এক চন্দ্র বছর( আরবী/ হিজরি সাল ১ বছর) নিজ মালিকানায় থাকলে ১ বছর পর যাকাত দিতে হবে।
ক্যাশ টাকার যাকাত- ২.৫% হারে, প্রতি হাজারে যাকাত ২৫৳ প্রতি লাখে যাকাত ২৫০০৳
রুপার স্কেলে ৪৮,৯৮৩ ৳ বা সোনার স্কেলে ৩ লাখ টাকা বা এর বেশি ১ চন্দ্র বছর নিজ মালিকানায় থাকলে যাকাত ফরজ।
রুপা ও স্বর্নের মুল্য ২০/৩/২০২০ এর বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির আপডেট অনুযায়ী।
পবিত্র কুরআন শরীফে ইরশাদ হয়েছে ,
وَأَقِيْمُوْا الصَّلَاةَ وَاٰتُوْا الزَّكَاةَ وَمَا تُقَدِّمُوْا لِأَنْفُسِكُمْ مِّنْ خَيْرٍ تَجِدُوْهُ عِندَ اللهِ اِنَّ اللهَ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِيرٌ
‘তোমরা নামায কায়িম করো, যাকাত আদায় করো। আর তোমরা নিজেদের জন্য যে উত্তম আমল করে থাকো তার প্রতিদান মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট পাবে। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি তোমরা যে সমস্ত নেক আমল করে থাকো তা দেখেন।’-সুরা বাকারা:১১০
৩ প্রকার সম্পদে যাকাত ফরজ হয় ।
(১) মালে নকদ: স্বর্ণ,চান্দি,টাকা পয়সা ১বছর কারও মালিকানাধিনে থাকলে তার উপর যাকাত ফরজ হবে ।
(২) মালে তিজারত: ব্যবসার মাল অর্থাৎ যে মালের ব্যাবসা করা হয় তা যদি নিসাব পরিমান হয় এবং ১ বছর কারো মালিকানাধীনে থাকলে তবে তার উপর যাকাত ফরজ হবে ।
(৩) সায়েমা: যে কোন গৃহ পালিত পশু অর্থাৎ গরু , মহিষ , ছাগল , বকরী , ভেড়া , উট , দুম্বা , মেষ ইত্যাদি যদি চারণ ভূমিতে ৬ মাসের অধিককাল বিচরণ করে অর্থাৎ ফ্রি খায় আর তা যদি নিসাব পরিমান হয় তবে তার উপর যাকাত ফরজ হবে ।
কুরআন মজীদে যাকাতের খাত নির্ধারিত করে দেওয়া হয়েছে। এ খাত ছাড়া অন্য কোথাও যাকাত প্রদান করা জায়েয নয়। ইরশাদ হয়েছে-
اِنَّمَا الصَّدَقٰتُ لِلْفُقَرَآءِ وَ الْمَسٰكِیْنِ وَ الْعٰمِلِیْنَ عَلَیْهَا وَ الْمُؤَلَّفَةِ قُلُوْبُهُمْ وَ فِی الرِّقَابِ وَ الْغٰرِمِیْنَ وَ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ وَ ابْنِ السَّبِیْلِ ؕ فَرِیْضَةً مِّنَ اللّٰهِ ؕ وَ اللّٰهُ عَلِیْمٌ حَكِیْمٌ۶۰
‘যাকাত তো কেবল নিঃস্ব, অভাবগ্রস্ত ও যাকাতের কাজে নিযুক্ত ব্যক্তিদের জন্য, যাদের মনোরঞ্জন উদ্দেশ্য তাদের জন্য, দাসমুক্তির জন্য, ঋণগ্রস্তদের জন্য, আল্লাহর পথে জিহাদকারী ও মুসাফিরের জন্য। এ আল্লাহর বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।’-সুরা তাওবা: ৬০
অতএব, যাকাত দেওয়া ফরজ । তাই যাকাত দিতে হলে যাকাতের টাকা হালাল হতে হবে এবং সর্বশ্রেষ্ঠ স্থানে যাকাত দিতে হবে । এ প্রসঙ্গে আরো বলা হয়েছে , ৯ শ্রেনীর মানুষকে যাকাত দেওয়া যাবে।যথা-
(১) গরীব
(২) মিসকিন
(৩) যাকাত সংগ্রহকারী আমিল
(৪) নও মুসলিম
(৫ )গোলাম
(৬) কয়েদি আযাদের জন্য
(৭) ঋণমুক্তি
(৮) জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ
(৯) মুসাফির
সুতরাং মহান আল্লাহ পাক তিনি যেনো আমাদের সকল মুসলমান ভাই বোনদেরকে সর্বত্তম হালাল ভাবে যাকাত আদায় করার তৌফিক দান করেন । আমীন।
-কেএল