আওয়ার ইসলাম: ভারতে করোনা পরিস্থিতি আরো খারাপ হলো। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন দুই লাখ ৭৩ হাজার ৮১০ জন। প্রতিটি রাজ্যেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। শীর্ষে মহারাষ্ট্র। সেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬৮ হাজারের বেশি মানুষ। রাজধানী দিল্লির অবস্থাও বেশ খারাপ। সেখানে এক দিনে আক্রান্ত ২৫ হাজার ৪৬২ জন। তারপর দিল্লিতে আগামী সোমবার পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, দিল্লিতে হাসপাতালে এক শ’টিরও কম আইসিইউ বেড খালি আছে। উত্তর প্রদেশ, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু প্রতিটি রাজ্যেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রবলভাবে বাড়ছে।
সব চেয়ে বড় কথা, প্রতিটি রাজ্যেই অক্সিজেনের অভাব দেখা দিয়েছে। মহারাষ্ট্র বারবার কেন্দ্রের কাছ থেকে অক্সিজেন চাইছে। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালও জানিয়েছেন, অক্সিজেন পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতিটি রাজ্য থেকে একই রিপোর্ট আসছে।
তারপর কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ২২ এপ্রিল থেকে শিল্পক্ষেত্রে অক্সিজেন ব্যবহার করা যাবে না। সেই অক্সিজেন হাসপাতালে সরবরাহ করা হবে। তবে ওষুধ, পরমাণু চুল্লির মতো নয়টি জরুরি জায়গায় আগের মতোই অক্সিজেন ব্যবহার করা যাবে।
করোনার এই বাড়বাড়ন্তে দেশজুড়ে হাসপাতালে কোনো বেড পাওয়া যাচ্ছে না। পাওয়া যাচ্ছে না জীবনদায়ী ওষুধ। সব হাসপাতালের আইসিইউ ভর্তি। এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থার হাসপাতালগুলি সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেয়া হবে। হয় সেগুলোকে পুরোপুরি করোনার চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হবে। তাতে অসুবিধা থাকলে একটা বড় অংশে করোনা রোগীদের চিকিৎসা হবে।
করোনা রোগীদের অনেক হাসপাতালে রেমডেসিভির দেয়া হয়। কিন্তু সেই ইঞ্জেকশনও পাওয়া যাচ্ছে না। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে অনেক রাজ্যই সমানে তা চাইছে। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রে প্রচুর পরিমাণ রেমডেসিভির উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে তারপরই সাবেক মুখ্যমন্ত্রী থানায় হাজির হয়ে বলেন, এটা দলীয় স্তরে সংগ্রহ করে পাঠানো হচ্ছিল।
এবার কেন্দ্রীয় সরকার লকডাউন বা কোনো কড়াকড়ির কথা ঘোষণা করছে না। তারা রাজ্যগুলিকে বলছে, কড়া ব্যবস্থা নিতে। প্রায় প্রতিটি রাজ্যই এখন রাতে কারফিউ জারি করছে। বিহার, রাজস্থান, তামিলনাড়ু সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সব স্কুল, সিনেমা হল, ধর্মস্থান, শপিং মল বন্ধ থাকবে। রাজস্থানও ৩ মে পর্যন্ত লকডাউনের ঘোষণা করেছে।
মহারাষ্ট্র সরকার জানিয়েছে, দিল্লি, কেরালা, তামিলনাড়ু, গোয়ার মতো রাজ্য থেকে তাদের রাজ্যে এলে ১৪ দিন বাড়িতে কোয়ারান্টিনে থাকতে হবে। প্রত্যেক যাত্রীর হাতে তার জন্য বিশেষ ছাপ মেরে দেয়া হবে। করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট ছাড়া কাউকে রাজ্যে ঢুকতে দেয়া হবে না।
তবে রাজ্যগুলোর আশঙ্কা, করোনা-সঙ্কট আরো বাড়িয়ে দিতে পারেন কুম্ভমেলা ফেরত মানুষেরা। মহারাষ্ট্র সরকার ইতোমধ্যেই এই আশঙ্কার কথা জানিয়েছে। দেশের অন্য রাজ্যও চিন্তিত। সূত্র: ডয়েচে বেল
-এটি