ডা. তাসনিম জারা।।
অনেকেই ইফতার শুরু করেন খেজুর দিয়ে, এটা খুব ভালো অভ্যাস। খেজুরে ন্যাচারাল সুগার থাকে, যা সারাদিনের ক্লান্তি কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে। সাথে ফাইবার বা আঁশ ও নানা খনিজ পদার্থ তো আছে। ফাইবার হজমের জন্য খুব উপকারী। আমরা অনেকেই ফাইবার যুক্ত খাবার খাই না। খেজুর ফাইবারের উপকারও দেবে। আবার যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আছে, এটা তাদের জন্যও উপকারী।
খেজুরের পরিবর্তে অথবা খেজুর খাওয়ার পরে অনেকেই চিনিযুক্ত শরবত খান। এসবের পরিবর্তে শুধু পানি খাওয়া ভালো।
যাদের সুযোগ আছে ডাবের পানি খেতে পারেন, ডাবের পানিতে পটাশিয়াম আছে। সারাদিনে ঘাম ঝরে শরীরে যে পানি শূন্যতা তৈরি হয়, ডাবের পানি তা পূরণে সহায়তা করে।
শরবত এর পরিবর্তে বাসায় বানানো ফলের জুস খাওয়া যেতে পারে, তবে জুস বানানোর সময় চিনি দিবেন না। দোকান থেকে কেনা জুসে কেমিক্যাল থাকতে পারে তাই বাসায় বানানো ফলের জুস খেতে পরামর্শ দিচ্ছি।
কেন চিনির শরবত বা চিনি দিয়ে বানানো শরবত এড়িয়ে চলবেন?
আমাদের শরীরে আলাদা করে চিনি খাওয়ার কোন উপকারিতা বা প্রয়োজন নেই। বরং অতিরিক্ত চিনি খেলে নানা স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয়। যেমন ওজন বেড়ে যাওয়া, হার্টের সমস্যা ইত্যাদি। মিষ্টি কিছু খেতে চাইলে ফলমূল সব থেকে ভালো অপশন।
খেজুর আর পানি খাওয়ার পরে ফলমূল খেতে পারেন। আমি নির্দিষ্ট কোন একটা দুইটা ফলের নাম বলছি না। বাজারে অনেক ধরনের ফলমূল পাওয়া যায়, যেটা ম্যানেজ করতে পারেন সেটাই খাবেন। এক মাস ধরে যেহেতু খাবেন, তাই ফলমূলে পরিবর্তন তো আনতেই হবে, নয়তো একঘেয়েমি লাগবে।
বাজারে কম দামে একেক রকম ফল পাওয়া যায়। আপনার জন্য যেটা সুবিধা হয় সেটাই কিনে খাবেন। নানা ধরনের ফলে নানান পুষ্টি থাকে তাই পরিবর্তন করে করে খাওয়াই ভালো। এতক্ষণ তিনটা খাবার অর্থাৎ খেজুর, পানি ও ফলের কথা বলেছি।
অনেকে আবার এইসময় পেঁয়াজু বেগুনি এইসব খাবার খান। এগুলো ডুবো তেলে ভাজা স্বাস্থ্যের জন্য খুব ক্ষতিকর। এগুলোতে বেশি পরিমাণে ট্রান্স ফ্যাট থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। ট্রান্স ফ্যাট হচ্ছে সবচেয়ে বিপদজনক ধরনের ফ্যাট। এই ফ্যাট অল্প পরিমাণে খেলেও অনেক বেশি ক্ষতি করে।
গবেষণায় দেখা গেছে, আপনি দিনে যে পরিমাণ ক্যালোরি খান তার মাত্র ২% যদি ট্রান্স ফ্যাট থেকে আসে তাহলে হার্টের রোগের ঝুঁকি বাড়ে ২৩ শতাংশ। এছাড়াও ইনসুলিন ভ্যাজিস্ট্যান্ট তৈরি করে। ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বাড়ায় প্রদাহ তৈরি করে। ক্ষতি পূর্ণ বিবরণ দিতে গেলে আলোচনা অনেক লম্বা হয়ে যাবে। মোটকথা, সারাদিন রোজা রেখে এত ত্যাগের পরে এই খাবারগুলো খেয়ে নিজের ক্ষতি করবেন না। জিলাপি বুন্দিয়া এই খাবারগুলো তেলেভাজা তাই এই খাবারগুলোও এড়িয়ে যাওয়া ভালো।
চলবে...
শ্রুতি লিখন জুলফিকার জাহিদ
এনটি