।।ইবরাহীম ফরিদ।।
প্রত্যেক সজ্ঞান প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিম নর-নারীর উপর প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত ও জুমার নামাজ আদায় করা ফরজ। কোরআন ও হাদিসে এ সকল নামাজের ফজিলতের কথা যেমন বর্ণনা করা হয়েছে, তেমনি এর গুরুত্ব ও আবশ্যকীয়তার কথাও উল্লেখ রয়েছে।
কিয়ামতের দিন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া-তাআ'লা এর সামনে সর্বপ্রথম বান্দার নামাজের হিসাব হবে। নামাজি ব্যক্তির সম্মান বৃদ্ধি পাবে তার নামাজের পরিশুদ্ধতার নিরিখে।
তাই সেটা হতে হবে- সঠিক নিয়মে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শিখানো তরিকায়। তিনি যেভাবে নামাজ পড়েছেন, পড়তে বলে গেছেন, সেভাবে নামাজ আদায় করার মাধ্যমে।
তাঁর আদর্শ অনুসরণ-অনুকরণ ও তাঁকে ভালোবাসার মাধ্যমে অর্জিত হয় আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার ভালোবাসা ও সন্তুষ্টি।
ফরজ নামাজের পাশাপাশি সুন্নত নামাজের গুরুত্ব কম নয়। কারণ, যথাযথভাবে সঠিক পদ্ধতিতে গুরুত্ব সহকারে সুন্নত নামাজ আদায় করার মাধ্যমে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুপম আদর্শ অনুসরণ ও তার প্রতি অগাধ ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। সুন্নত নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে বলা হয়, কিয়ামতের দিন কারো ফরজ নামাজে ঘাটতি থাকলে, এ নামাজ দ্বারা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা সেই ঘাটতি পূরণ করবেন।
প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আগে ও পরে ১২ রাকাত সুন্নত নামাজ রয়েছে। এগুলো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সবসময় আদায় করতেন এবং সাহাবাদের আদায় কে করার নির্দেশ দিতেন। তবে কখনো কোনো বিষেশ কারণ ছাড়া তা আদায় করা থেকে বিরত থাকতেন না। অসংখ্য হাদিসে সুন্নত নামাজের ফজিলতের কথা বলা হয়েছে ।
উম্মে হাবিবা রাযিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি রাতে ও দিনে বারো রাকাত নামাজ আদায় করলো, জান্নাতে তার জন্য একটি ঘড় নির্মাণ করা হলো।
সেগুলো হলো জোহরের (ফরজ নামাজের) পূর্বে চার রাকাত, পরে দুই রাকাত, মাগরিবের পর দুই রাকাত, ইশার পর দুই রাকাত, ফজর নামাজের পূর্বে দুই রাকাত।- তিরমিজি
ফরজ নামাজ শেষে সুন্নত নামাজ আদায় না করে অনেক মুসল্লিকে মসজিদ থেকে বের হয়ে আসতে দেখা যায়।
(যদিও এ নামাজ মসজিদের ভিতরে পড়া আবশ্যক নয়, তথাপি আপাত-দৃষ্টিতে দেখা যায়- মসজিদ থেকে বের হয়ে এসে অলসতাবশতঃ অনেকে এ নামাজ আদায় করতে পারে না বা কর্মব্যস্ততার কারণে সুযোগ হয় না। )
বিশেষভাবে এ বিষয়টি পরিলক্ষিত হয় জুমার দিন শুক্রবারে। জুমার দু’রাকাত ফরজ নামাজের আগে ও পরে চার রাকাত করে আট রাকাত সুন্নত নামাজ রয়েছে।
নামাজ শেষ করে সুন্নত নামাজ আদায় না করে উঠে আসা; একদিকে যেমন অন্যান্য মুসল্লিদের ইবাদতমগ্নতায় ব্যঘাত ঘটায়, নামাজের বিনম্র্রতা নষ্ট করে। অন্যদিকে নামাজ পড়তে আসা মুসলিম শিশুরাও এ ধারাটি অব্যাহত রাখতে শেখে। বড়দের দেখাদেখি তারাও এভাবে সংক্ষিপ্তভাবে নামাজে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। যা কোনোভাবেই উচিৎ নয়। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা আমাদের সুন্নতের উপর পা বন্দী করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
-কেএল