আওয়ার ইসলাম: নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যায় কার্গো ‘এমভি-এসকেএল-৩’ জাহাজের ধাক্কায় ‘সাবিত আল হাসান’ নামে মুন্সিগঞ্জগামী একটি লঞ্চ ডুবে ৩৪ জন নিহতের যাওয়ার ঘটনায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটি বৃহস্পতিবার গণশুনানি করেছে।
শীতলক্ষ্যার পশ্চিম তীরে দুর্ঘটনাস্থল সৈয়দপুর কয়লাঘাট এলাকায় সকাল ১০টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত পৃথক দু’টি তদন্ত কমিটির কাছে লঞ্চ দুর্ঘটনায় মৃত যাত্রীদের আত্মীয়-স্বজন, বেঁচে যাওয়া যাত্রী ও প্রত্যক্ষদর্শী ২৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সাত সদস্যের তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব আব্দুছ ছাত্তার শেখ। কমিটিতে সদস্য সচিবের দায়িত্ব পেয়েছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) পরিচালক (নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক) মো: রফিকুল ইসলাম। কমিটির সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন- নৌপরিবহন অধিদফতরের চিফ নটিক্যাল সার্ভেয়ার ক্যাপ্টেন জসিম উদ্দিন সরকার, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) প্রধান প্রকৌশলী, নারায়ণগঞ্জ নৌ পুলিশের পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা, জেলা ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফীন, জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি সদর এসিল্যান্ড হাসান বিন আলী, কোস্টগার্ড পাগলা স্টেশনের কমান্ডার আশমাদুল, বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরের উপ-পরিচালক মোবারক হোসেন, উপ-পরিচালক (নৌ-নিরাপত্তা) বাবু লাল বৈদ্য।
তদন্ত কমিটিকে আগামী সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের গঠন করা অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ সাত সদস্যদের তদন্ত কমিটিকে আগামী পাঁচ কার্যদিবসে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে
গণশুনানিতে লঞ্চ দুর্ঘটনায় মৃত যাত্রীদের আত্মীয় স্বজন, বেঁচে যাওয়া যাত্রী ও প্রত্যক্ষদর্শী ২৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। লঞ্চ দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া যাত্রী সিরাজদীখান তালতলা এলাকার মুছা শেখের ছেলে মো: জাকির, মুন্সিগঞ্জ নয়াগাঁও এলাকার বাসিন্দা দুই বোন তানজিলা ও মনিরা আক্তার মুন্নি, আলো, লঞ্চের কেরানী মঞ্জুর আলী, মুন্সিগঞ্জ দক্ষিণ কোর্টগাঁও এলাকার রায়হান সরদার ইফাজ, নিহত রুনা আক্তারের চাচা মুন্সিগঞ্জের নুরুতলি কেওয়ার এলাকার বাসিন্দা মনিরুজ্জামান, প্রত্যক্ষদর্শী নির্মাণাধীন শীতলক্ষ্যা সেতুর শ্রমিক মো: হালিম, পূবালী সল্টের লেবার আলামিন সর্দার, মো: সাঈদ, মো: মামুন বেপারীসহ ২৬ জন দুর্ঘটনার বিবরণী তুলে ধরেন তদন্ত কমিটির কাছে।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব আব্দুছ ছাত্তার শেখ বলেন, ‘গণশুনানি করলাম। এ বিষয়ে আমরা তদন্ত কমিটি পরবর্তীতে বসে নানা দিক পর্যালোচনা করে সাত দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দিব। কার্গো জাহাজের ধাক্কায় লঞ্চটি ডুবে ৩৪টি মূল্যবান প্রাণ আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে গেছে। আমরা তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। আমরা যে ২৬ জন্য প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য পেয়েছি তাদের কাছ থেকে জানার চেষ্টা করেছি কিভাবে দুর্ঘটনাটি ঘটলো এবং এ প্রেক্ষিতে ভবিষ্যতে কি করণীয় সে বিষয়েও তাদের কাছ থেকে জানার চেষ্টা করেছি।’
এনটি