মোস্তফা ওয়াদুদ: বাংলাদেশ কওমী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাক-এর সিনিয়র সহ-সভাপতি, আল হাইয়াতুল উলইয়ার কো-চেয়ারম্যান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ-এর (একাংশ) সভাপতি, সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী, হুইপ ও একাধিকবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য, কারানির্যাতিত জননেতা, বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাসের (৭০) ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন মানিকনগর মাদরাসার ভাইস প্রিন্সিপাল ও শায়খুল হাদিস আল্লামা আব্দুল কুদ্দুস কাসেমী, আব্দুল হাফিজ তাহসীনুল কুরআন মাদরাসা/জামিয়া আফতাব নগর ঢাকার শায়খুল হাদিস, সদরুল মুদাররিসিন ও কুড়িল কাজী বাড়ী জামে মসজিদ ভাটারা ঢাকার খতিব মাওলানা মুহাম্মাদ আবূ মূসা কাসেমী, জোয়ার সাহারা মাদরাসার মুহতামিম মুফতি হোসাইন আহমদ ও বারিধারা মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা সিদদীকুল ইসলাম তোফায়েল।
আজ বুধবার (৩১ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক শোকবার্তায় তারা বলেন, শাইখুল হাদিস মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস ছিলেন সৎ, সাহসী, নির্ভীক, বিনয়ী ও প্রাজ্ঞ রাজনীতিবিদ। মাদারিসে কওমিয়ার স্বকীয়তা রক্ষায় ছিলেন যোগ্য অভিভাবক ও রোল মডেল। তার ইন্তেকালে জাতি শ্রেষ্ঠ সন্তানকে হারালো। ইসলামের চরম এ ক্রান্তিলগ্নে মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ করার পিছনে তার অবদান অনস্বীকার্য। দলমত নির্বিশেষে সবার কাছে তিনি ছিলেন আস্থাবান মুরুব্বি, হক ও ন্যায়-নীতির ওপর অটল-অবিচল একজন নিষ্ঠাবান আলেম।
দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ইসলাম বিরোধী যেকোনো কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিবাদ জানাতেন তিনি। বাতিলের সাথে কখনো আপোষ করেননি। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ণ রাখতে তিনি ছিলেন সদা সোচ্চার। বিজাতীয় সংস্কৃতির আগ্রাসন থেকে ঈমান বাঁচাতে লৌহমানবের ভূমিকায়। তা’লীম তারবিয়াতের পাশাপাশি আত্মশুদ্ধির ময়দানে ছিলেন আকাবির আসলাফের যোগ্য উত্তরসূরি। জীবনের সর্বক্ষেত্রে সুন্নাহ পালনে সাহাবীদের অনুসারী, দরসে হাদীসের মসনদে জীবন্ত কিংবদন্তি। ইসলামী তাহযীব তমুদ্দুন বিকাশে ছিলেন অতন্দ্রপ্রহরী। নাস্তিক মুরতাদদের বিরুদ্ধে অকুতোভয় সিপাহসালার। যুগশ্রেষ্ঠ এ মনীষীর ইন্তেকালে দিশেহারা এ জাতির অপূরণীয় ক্ষতি হলো।
তারা আরও বলেন, তিনি লোভ-লালসা ও ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে থাকতেন। আমরণ ইখলাস ও নিষ্ঠার সাথে দ্বীনের বহুমুখী খেদমত আঞ্জাম দিয়েছেন। প্রতিষ্ঠা করেছেন জামিয়া ইমদাদিয়া মাদানীনগর (মনিরামপুর, যশোর)সহ একাধিক দেশসেরা প্রতিষ্ঠান। ইসলাম, মুসলমান, দেশ ও জাতির কল্যাণে তার ভূমিকা অবিস্মরণীয়। ধর্মীয় আন্দোলন সংগ্রামে তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও ত্যাগ-তিতিক্ষা ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে অঙ্কিত থাকবে।
তারা তার শোকসন্তপ্ত পরিবার, ছাত্র ও হিতাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করে বলেন, আল্লাহ তায়ালা যেন তাদেরকে ‘সবরে জামীল’ ইখতিয়ার করার তাওফিক দান করেন এবং তাকে জান্নাতুল ফিরদাউসের উচ্চ মাকাম নসীব করেন। আমীন।
উল্লেখ্য, মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস আজ বুধবার ৩১ মার্চ ভোর ৪.৩০মিনিটে রাজধানী ঢাকার মহাখালী শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪বছর। তিনি ৩ ছেলে ও ৪ মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। জানাজার নামাজ আজ বাদ মাগরিব তাঁর প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জামিয়া ইমদাদিয়া মনিরামপুর, যশোরে অনুষ্ঠিত হবে। তার ইন্তেকালে দেশের ইসলামি অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এমডব্লিউ/