মোস্তফা ওয়াদুদ: এখন অভিভাবকরা শিশুদের মাদরাসায় পড়ানোতেই আনন্দবোধ করেন। বিশেষ করে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সারাদেশে সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। তবে খোলা রয়েছে দেশের হাফেজি ও কওমি মাদরাসা। সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিশু শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার গতির ধারাবাহিকতা রক্ষার্থে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের মাদরাসায় ভর্তি করাতেই স্বাচ্ছন্দবোধ করছেন। তাছাড়া তারা আশঙ্কা করছেন, এ অবসর সময়ে পড়াশুনার চাপ না থাকায় শিশুরা পথভ্রষ্ট হয়ে যেতে পারে।
অভিভাবকরা জানান, এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সাধারণ স্কুল-মাদরাসা বন্ধ। ছাত্র-ছাত্রীদের অটো পাসের মাধ্যমে পরবর্তী শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়েছে। যারা উপরের ক্লাসের ছাত্র তারা নিজেদের মতো করে পড়াশুনা করছে। কিন্তু যারা শিশু তারা স্কুলে বা মাদরাসায় না গেলে পড়াশুনা করতে চায় না। তাই আমরা সন্তানকে হাফেজি ও কওমি মাদরাসায় ভর্তি করাচ্ছি।
রাজধানীর জামিয়া মাহমুদিয়া ইছহাকিয়া মানিকনগর মাদরাসায় নিজের ছেলে মইনুল রহমানকে ভর্তি করাতে এসেছেন বাবা মোহাম্মদ আজিজুর রহমান। জানতে চাইলে এই অভিভাবক আওয়ার ইসলামকে বলেন, ‘আমার দাদা ছিলেন ব্রিটিশ আমলের ইঞ্জিনিয়ার। আমিও বর্তমান সরকারের ইঞ্জিনিয়ারিং পোস্টে কাজ করি। আমার বাবা চেয়েছিলেন, আমাকে মাদরাসায় ভর্তি করাতে। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, আমি কোরআনের অক্ষরগুলোও সঠিক করে পড়তে পারি না। বুঝতে পারি না কুরআনের অর্থ। জীবনে পড়তে পারিনি মাদরাসায়। তাই আমার ছেলে সন্তানকে আমি মাদরাসায় পড়িয়ে কুরআনে হাফেজ বানাতে চাই। বানাতে চাই একজন জগৎবিখ্যাত মাওলানা। আল্লাহ যদি আমার আশা কবুল করেন। সন্তানকে মাদরাসায় ভর্তি করাতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত।’
এমন আনন্দের কথা শুনিয়েছেন আরও অসংখ্য মাদরাসা ছাত্রের অভিভাবক।
রাজধানীর মুগদার জামিয়াতুস সালাম মাদরাসার শিক্ষক মোহাম্মদ ইয়াসিন আরাফাত জানালেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর মাদরাসায় ছাত্র ভর্তির সংখ্যা অনেক বেশি। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের মাদরাসায় দিতে পেরে অনেক গর্বিত।
এ শিক্ষক আরও জানান, ‘আমার কাছে একজন অভিভাবক তার সন্তানকে মাদরাসায় ভর্তি করানোর পর খুব আনন্দ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘আমার সন্তানকে মাদরাসায় ভর্তি করাতে পেরে আমার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।’
ঝালকাঠির একটি হাফেজি মাদরাসার শিক্ষক হাফেজ মাওলানা শহিদুল ইসলাম জানান, ‘ঝালকাঠি শহরে বেসরকারি হাফেজি মাদরাসা রয়েছে ১৮টি। এসব মাদরাসায় স্বাভাবিকের চেয়ে এ বছর শিক্ষার্থীদের ভর্তির সংখ্যা বেশি।’
এমডব্লিউ/