শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
কাল যাত্রাবাড়ী মাদরাসায় মজলিসে দাওয়াতুল হকের ইজতেমা শেখ হাসিনা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন: মজলিস মহাসচিব ডেঙ্গুতে এক সপ্তাহে ৩১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৬২৩০ মসজিদে নববীর আদলে হবে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ: ধর্ম উপদেষ্টা খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত নতুন নির্বাচন কমিশনকে বিগত কমিশন থেকে শিক্ষা নিতে হবে: মুফতী ফয়জুল করীম লালপুরে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে জমি দখল ও বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ জনতার চেয়ারম্যান সৈয়দ তালহাকে সুনামগঞ্জ ৩ আসনে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা কুরআন-হাদিসের ভিত্তিতেই হতে হবে সংস্কার: বায়তুল মোকাররমের খতিব ইসলামী সঙ্গীত সম্রাট আইনুদ্দীন আল আজাদ রহ.-এর বাবার ইন্তেকাল

নিউজ প্রেজেন্টার তাসনোভা; হিজড়া না রুপান্তরকামী?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

হুজায়ফা ইবনে ওমর
লেখক ও রাজনীতি বিশ্লেষক

গত ৮ মার্চ ছিল বিশ্ব নারী দিবস। দিবসটি কেন্দ্র করে নানা আয়োজন ও আলোচনা কে ছাপিয়ে বাংলাদেশের যে সংবাদটি টক অব দ্যা ওয়ার্ল্ড এ পরিনত হয়েছিলো সেটি হলো, ‘এই প্রথম বাংলাদেশে একজন নারী হিজড়া বা ফিমেল ট্রান্সজেন্ডার খবর পাঠিকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন।’

  • ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে প্রসঙ্গটির দুটি দিক রয়েছে। একটি পর্দা-বেপর্দার বিষয়। আরেকটি হিজড়াদের সমাজে পুনর্বাসন। গত দুদিনে প্রসঙ্গটি নিয়ে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়ার অতি উৎসাহ দেখে দ্বিতীয় দিকটিতেই আমার দৃষ্টি নিবন্ধিত হয়েছে।

আমি যতটুকু ধর্মীয় জ্ঞান রাখি, তাতে মনে হয় হিজড়াদের সমাজে পুনর্বাসনে ধর্মীয় দিক থেকে কোনো বাঁধা নেই। এই দৃষ্টিকোণ থেকে যদি বিচার করি তাহলে তাসনোভার নিউজ প্রেজেন্টার হওয়াটা অ্যাপ্রিশিয়েটিভ।

কিন্তু গত ৭ মার্চ মিডিয়াগুলোর মধ্যকার একটি স্নায়ু যুদ্ধ দেখে আমার সন্দেহের সৃষ্টি হয়। সেদিন সময় টিভি ‘তাসনোভা’ কে প্রথমে হিজড়া বিশেষণ দিয়ে নিউজ লিখে। সন্ধার দিকে হঠাৎ দেখলাম তাসনোভাকে হিজড়া বলায় সময় টিভির পোর্টালে ক্ষমা চেয়ে একটি নিউজ করেছে। হিজড়ার পরিবর্তে ‘ট্রান্সজেন্ডার’  শব্দ ব্যাবহার করেছে। এটা দেখেই আমার সন্দেহ হলো, সময় টিভিকে এই কাজ করতে বাধ্য করলো কারা? আর ইংরেজির পরিবর্তে বাংলা শব্দ ব্যাবহারে আপত্তিই বা কিসে?

আপনি ডিকশনারীতে বাংলা ‘হিজড়া’ শব্দের ইংরেজি খোঁজ করেন। আপনাকে এর ইংরেজি দেখাবে ‘ট্রান্সজেন্ডার’। আপনি ইংরেজি ‘ট্রান্সজেন্ডার’ শব্দের অর্থ খোঁজেন। আপনাকে বাংলা অর্থ দেখাবে ‘হিজড়া’। তাহলে আপত্তিটা কেন? আর এই আপত্তি করলই বা কারা? মনে এইসব প্রশ্নের জন্ম নিতেই মনে হলো ‘ডালমে কুচ কালা হে’!

শুরু করলাম ট্রান্সজেন্ডারের আদ্যোপান্ত নিয়ে ইন্টারনেটে ঘাটাঘাটি। ঘেটেঘুটে যা পেলাম তাতে তো মনে হলো ‘ডাল পুরাটাই কালা’ !

  • সমকামীতা, উভকামীতা পতিতাবৃত্তি মোটকথা বিকৃত যৌনাচারকে যারা মানবাধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়, ইন্টারন্যাশনালি তাদের একটা প্লাটফর্ম আছে। যা ‘LGBT community’ নামে পরিচিত। এই LGBT এর ফুল মিনিং হচ্ছে ‘Lesbian বা নারী সমকামী, Gay বা পুরুষ সমকামী, Bisexual বা উভকামী এবং Transgender বা রূপান্তরকামী’।

তার মানে যেই Transgender কে আমরা হিজড়া অর্থে ব্যাবহার করি LGBT তে সেটা রুপান্তরকামী অর্থে ব্যাবহৃত হয়। আর রুপান্তরকামী হলো, যারা শারিরীক বিকৃতি ঘটিয়ে লিঙ্গ পরিবর্তন করে পুরুষ থেকে নারী কিংবা নারী থেকে পুরুষ হন।

  • এই তথ্যসূত্র সামনে আসার পরই তাসনোভাকে হিজড়া বলায় মিডিয়ার আপত্তির রহস্য আমার সামনে উন্মোচন হয়ে যায়। তার মানে তাসনোভা হিজড়া নন; রুপান্তরকামী। শরীরের অঙ্গে বিকৃতি ঘটিয়ে পুরুষ থেকে নারী হয়েছেন তাসনোভা। যার প্রমানও মিলল ২০১৯ এর জুন মাসে তাকে নিয়ে করা প্রথম আলোর একটি নিউজে- ‘হরমোন থেরাপি, মানসিক থেরাপিথেরাপিসহ বিভিন্ন ধাপ পার হয়ে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পুরুষ থেকে শারীরিক ও মানসিক রূপান্তরের মাধ্যমে নারী হয়েছে তাসনোভা শিশির- (সুত্র: প্রথম আলো, ১৫ জুন ২০১৯)।

প্রিয় পাঠক! এতক্ষণে হয়তো আপনার কাছে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে আমি কী বুঝাতে চাচ্ছি। তার মানে বিষয় ক্লিয়ার! তাসনোভা হিজড়া নন রুপান্তরিকামী। আর LGBT এর নামে যারা বিকৃত যৌনাচারকে সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় তাদেরই এদেশীয় এজেন্ট। আর এজন্যই তাকে নিয়ে আন্তর্জাতিক পশ্চিমা মিডিয়ার এত আগ্রহ।

এমডব্লিউ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ