মোস্তফা ওয়াদুদ: সম্প্রতি চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে মারকাযুল কুরআন ইসলামিক একাডেমির হেফজ বিভাগের এক শিশু শিক্ষার্থীকে পিটিয়েছে একজন মাদরাসার শিক্ষক। শিশু শিক্ষার্থীকে পেটানোর ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এরপরই স্থানীয় কিছু উশৃংখল যুবকরা মিলে সে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। কিন্তু মাদরাসা শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বন্ধ করতে চান না ‘মারকাযুল কুরআন ইসলামিকএকাডেমি’ নামক ওই মাদরাসাটি। এক ভিডিও বার্তায় অভিভাবকরা এ আবেদন জানান। শিশু পেটানোর ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর গতকাল রাতে আরেকটি ভিডিওতে এ আবেদন জানান তারা।
ভিডিওবার্তায় দেখা যায়, মাদরাসার শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বলছেন, ‘আমরাও তো বাসায় আমাদের সন্তানদের কোনো না কোনো কারণে মেরে থাকি। আর মাদরাসায় যখন ভর্তি করিযয়েছি, তখনই ওস্তাদদেরকে আমরা বলেছিলাম, যদি আমার সন্তান কোনো ধরনের বেয়াদবি কিংবা অনৈতিক আচরণ করে তাহলে আপনারা তাদের শাসন করবেন। যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে। সেখানেও শিক্ষক ছাত্রকে শাসন করেছে। আর এটা আমরাই বলে গিয়েছিলাম। তবে শাসনের মাত্রাটা হয়তো একটু বেশি হয়ে গিয়েছে।’
আর এ শাসনের কারণে পুরো প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে এটা আমরা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। তাছাড়া এখন বাচ্চাদের পড়াশোনার সৃজন। এখন প্রতিষ্ঠানে বন্ধ হয়ে গেলে বাচ্চাদের পড়াশোনা নষ্ট হবে। এটা কোনোভাবেই আমরা মেনে নিতে পারি না।
ভিডিওবার্তায় কথা বলেছেন মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা ইমরান শিকদার। দুঃখ প্রকাশ করে মাওলানা ইব্রাহিম শিকদার বলেন, মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মাত্র তিন বছর আগে। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছি মাদরাসায়। কোন ধরনের অনৈতিক ঘটনাও এই পর্যন্ত ঘটেনি। এখন যেটা ঘটেছে সেটা অপ্রত্যাশিত ও অনভিপ্রেত। আমরা এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। সাথে সাথে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটার নিশ্চয়তাও দিচ্ছি ইনশাআল্লাহ।
হাটহাজারী উপজেলার ইউএনও মো রুহুল আমিন কথা বলেছেন ভিডিওবার্তায়। তিনি বলেন, মাদরাসায় শিশু নির্যাতনের খবর পেয়ে আমি রাত দেড়টা সেখানে উপস্থিত হয়েছিলাম। উপস্থিত সে শিক্ষককে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসার পর অভিভাবকের লিখিত অনুমোদন সাপেক্ষে ছেড়ে দিয়েছিলাম। এরপর গতকাল আবার তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মাদরাসা থেকেও অব্যাহতি দেয়া হয়েছে ওই শিক্ষককে।
এমডব্লিউ/