আওয়ার ইসলাম: জাতিসংঘের তদন্ত দল জানিয়েছে সিরিয়ায় গত ১০ বছরে গৃহযুদ্ধের সময় আটক হওয়া লাখ লাখ বেসামরিক নাগরিক এখনও নিখোঁজ। জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ওই তদন্ত দল আরও জানিয়েছে, আরও কয়েক হাজার ব্যক্তি হয় নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বা নিরাপত্তা হেফাজতে থাকার সময়েই মারা গেছেন।
দেশটির গৃহযুদ্ধকালীন যুদ্ধাপরাধ বা মানবতাবিরোধী অপরাধ বিষয়ে নতুন এক রিপোর্টে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিষয়টি এখন ভয়ংকর ট্রমায় পরিণত হয়েছে, যার দিকে অবশ্যই দৃষ্টি দেওয়া দরকার।
প্রায় দুই হাজার ৬৫০ সাক্ষ্য আর আটকের পর ১০০টির বেশি ঘটনার ওপর ভিত্তি করে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের স্বাধীন আন্তর্জাতিক কমিশনের সিরিয়াবিষয়ক এ তদন্ত রিপোর্টটি প্রণয়ন করা হয়েছে।
তদন্ত রিপোর্টে দেখা যায়, সিরিয়ায় সক্রিয় সব পক্ষই মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে প্রতিপক্ষকে শাস্তি দেওয়ার জন্য। কমিশনের চেয়ারম্যান পাওলো পিনহেইরো জানান, সরকারি বাহিনী একতরফাভাবে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী ও বিক্ষোভকারীদের আটক করেছে।
আগে আটক ছিলেন এমন কয়েকজন জানিয়েছেন, তারা মাসের পর মাস দিনের আলো দেখেননি, নোংরা পানি পানে বাধ্য হয়েছেন, খেয়েছেন বাসি খাবার এবং ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত সেলে তাদের রাখা হয়েছিল। এসব সেলে টয়লেট সুবিধা যেমন ছিল না, তেমনি ছিল না কোনো চিকিৎসা সুবিধা।
সরকারি কারাগারগুলোতে যারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তারা তদন্তকারীদের জানিয়েছেন যে, মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য অন্তত বিশটি উপায়ে সেখানে নির্যাতন করা হতো। এর মধ্যে ছিল ইলেকট্রিক শক দেওয়া, শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়িয়ে দেওয়া, নখ ও দাঁত উপড়ে ফেলা এবং দীর্ঘ সময় ধরে ঝুলিয়ে রাখা।
রিপোর্টটিতে বলা হয়েছে, আটক অবস্থায় কত মানুষ মারা গেছে তার কোনো হিসfব নেই। তবে ধারণা করা হচ্ছে অন্তত লাখো মানুষকে হত্যা করা হয়েছে সরকারি হেফাজতেই। সব দেশকে এ অপরাধের জন্য জবাবদিহিতার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের এ কমিশন।
সূত্র: বিবিসি/আরব নিউজ
-এটি