আওয়ার ইসলাম: সৌদির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশে দেশটির ভিন্ন মতাদর্শী সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যা করা হয়। সম্প্রতি ওই হত্যাকাণ্ডের একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দীর্ঘদিনের অপেক্ষার পর শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ওই প্রতিবেদনে খাশোগি হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের নাম উল্লেখ করা হয়েছিল। যদিও রহস্যজনক কারণে ওই প্রতিবেদনটি পরিবর্তন করে নতুন আরও একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। আগের প্রতিবেদনে থাকা লোকজনের মধ্যে শক্তিশালী তিনজনের নাম নতুন প্রতিবেদন থেকে গায়েব হয়ে গেছে।
এমনকি বিষয়টি নিয়ে এখনো কোনো ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়নি। অথচ আগের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ওই তিন ব্যক্তিও হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। কিন্তু হুট করেই তাদের নাম কেন সরিয়ে দেওয়া হলো তা এখনো পরিষ্কার নয়।
সম্প্রতি খাশোগি হত্যাকাণ্ডে জড়িত ৭৬ সৌদি নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা ও ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও সেই তালিকায় নেই হত্যার ‘নির্দেশ দাতা’ সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। মার্কিন প্রশাসন জানিয়েছে, সৌদি আরবের ‘শীর্ষ নেতা’ হওয়ার কারণেই তার ওপর কোনো ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে না।
তবে এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা হচ্ছে বিশ্বব্যাপী। বাইডেন প্রশাসন ক্রাউন প্রিন্সের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে ক্ষোভ বাড়তে শুরু করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের অফিস অব দ্য ডিরেক্টর অব ন্যাশনাল ইন্টিলিজেন্সের (ওডিএনআই) প্রথম প্রতিবেদনটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
এর দ্বিতীয় সংস্করণে তিনজনের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এর আগের প্রতিবেদনে খাশোগি হত্যায় অংশ নেওয়া, হত্যার নির্দেশ বা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে ওই তিনজনের নাম প্রতিবেদনে এসেছিল।
প্রথম প্রতিবেদনে তাদের নাম কেন এসেছিল, খাশোগি হত্যায় তাদের ভূমিকা কি ছিল অথবা পরবর্তী প্রতিবেদনেই বা তাদের নাম সরিয়ে দেওয়া হলো কেন সে বিষয়ে ওডিএনআই-এর পক্ষ থেকে স্পষ্ট কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি।
যদিও ওডিএনআইয়ের মুখপাত্র মার্কিন মিডিয়া সিএনএনকে বলেন, আমরা খাশোগি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে সংশোধিত প্রতিবেদনটি আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছি। কারণ প্রথম প্রতিবেদনে ভুলক্রমে তিনজনের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যা উচিত হয়নি।
এ দিকে খাশোগি হত্যাকাণ্ডের প্রতিবেদন প্রকাশের পর সোমবার (১ মার্চ) ওই সাংবাদিকের বাগদত্তা হাতিস চেঙ্গিস ক্রাউন প্রিন্সের অবিলম্বে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। ২০১৮ সালের অক্টোবরে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অবস্থিত সৌদি কনস্যুলেটে জামাল খাশোগিকে হত্যা করা হয়। সৌদির একটি কিলিং স্কোয়াড যুবরাজ সালমানের নির্দেশে ওই হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে অভিযোগ রয়েছে।
-এটি