কাউসার লাবীব।।
সাব-এডিটর
সিলেটে হামলার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন আহলে হাদিস আলেম শায়খ আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ। হামলার পর পর তিনি সেখান চলে যান নিরাপদ স্থানে। এরপর সেখান থেকে তিনি রাতে সিলেট নগরীর কুমার পাড়া আত-তাক্বওয়া মাসজিদ এন্ড ইসলামিক সেন্টারে যান এবং প্রায় আধাঘণ্টার লেকচার দেন। সেখানে তিনি তার ওপর হামলার বিবরণ দেন।
বিবরণে তিনি বলেন, পরিস্থিতি খুব বেগতিক দেখছিলাম। যদিও ১৯৯০ সাল থেকে ৯৬/৯৮ সাল পর্যন্ত অবস্থা বেগতিক দেখেছি এবং সাবধানে থাকার প্রয়োজন অনুভব করেছি। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিও অনুকূল নয়।
শায়খ আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ বলেন, আমি সিলেট, চট্টগ্রাম ও বরিশাল গেলে মানুষ খুব সতর্কতার সঙ্গে নিয়ে আসে এবং নিয়ে যায়। আমি তখন ভেবেছিলাম এতো নিরাপত্তার কী প্রয়োজন? কিন্তু আজকের ঘটনা আমাকে সে নিরাপত্তার প্রয়োজনীয়তা বুঝিয়েছে।
হামলার ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত বলতে গিয়ে তিনি বলেন, পরিস্থিতি ছিল শান্ত। জোহরের সালাতের পর পায়ে হেঁটে রাস্তায় পৌঁছলাম। আশপাশে দুএকজন মানুষ ছিল। তবে তেমন কেউ ছিল না। গাড়ির চালককে তা আমি জানিনা। গাড়িতে বসলাম। একজন যুবক এসে কাঁধে পাঞ্জাবিসহ টেনে ধরলো। আমি বললাম, ব্যাপার কী? ইন্নালিল্লাহ!
তিনি আরো বলেন, একথা বলতেই হুমায়ুন কবির রিপন আমাকে তার ডান দিক থেকে বাম দিক করলো। তখন অজানা অচেনা অবস্থায় অতর্কিতভাবে গাড়িটার ওপর হামলা হতে লাগলো। আমি বারবার ড্রাইভারকে বলছিলাম, তুমি গাড়ি স্টার্ট দাও। সে কোনো মতেই কথা শুনছিল না। অনেকবার বলার পর গাড়িটা স্টার্ট দিলো এবং গাড়িটা আট/দশ হাত এগিয়ে আবার বন্ধ করে দিল। বন্ধ করে সে নেমে কোথায় যেন চলে গেল।
হামলাকারীদের ব্যাপারে তিনি বলেন, কারা এটা করেছে তা আমি বুঝতে পারিনি। তবে তারা গাড়ির বাম দিকের গ্লাস ভেঙ্গে আঘাত করার চেষ্টা করেছে। আমরা তখন মুখে বলছিলাম, ‘লা-ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জোয়ালিমীন’।
সবশেষে তিনি বলেন, জানিনা আল্লাহ কোন কারণে সেখানে থেকে রক্ষা করে ফিরিয়ে এনেছেন। তবে হতে পারে ‘লা-ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জোয়ালিমীন’ পড়ার কারণে। কেননা নবী সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি এ দোয়া পড়বে; তাকে আল্লাহ সব রকমের বিপদাপদ থেকে নিরাপদ রাখবেন।
প্রসঙ্গত, গতকাল দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় জেলা সিলেটে এ হামলা হয় কট্টরপন্থী আহলে হাদিস আলেম শায়খ আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফের ওপর।
ইসলাম বাজার, মল্লিকপুর, ফেঞ্চুগঞ্জ, সিলেটের আল-ফুরকান মসজিদ থেকে জোহরের নামাজ আদায় করে বের হওয়ার পথে তার গাড়িতে হামলা করে কিছু অজ্ঞাত যুবক।
জানা যায়, হামলাকারীরা মটরসাইকেল নিয়ে তার জন্য পথে দাড়িয়ে থাকে। তিনি গাড়ী নিয়ে এলে তার উপর হামলা চালায়। হামলার সময় তাদের হাতে দেশীয় লাঠি ছিল।
আহলে হাদিসের এ আলেমের উপর হামলার কারণে তার গাড়ীর সব কাচ ভেঙ্গে যায়। এ সময় তার সাথে থাকা রিপন নামের একজন আহত হোন। তবে তার তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। রাতেই প্রোগ্রামে যোগ দিতে পেরেছেন। বয়ান লাইভে বয়ান করেছেন।