সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


না ফেলে কাজে লাগাতে পারেন যেসব ফলের খোসা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: বেশিরভাগ মানুষই ফল খাওয়ার পর খোসা ফেলে দেন। কিন্তু অনেকেই হয়তো জানেন না শাঁসের মতো ফলের খোসাতেও নানা রকমের পুষ্টিগুণ রয়েছে। যেমন-

আপেলের খোসা : আপেল কেউ খোসাসহ খান কেউ আবার ফেলে দেন। কিন্তু আপেলের খোসায় থাকা ট্রিটেরপর্নোইডস ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। এছাড়া এতে থাকা আর্সলিক অ্যাসিড শরীরের মাংস পেশিতে মেদ জমতে দেয় না। আপেলের খোসায় পর্যাপ্ত পরিমাণে আঁশ রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) মতে, আপেলের বেশিরভাগ ফাইবার থাকে এর খোসাতে। ফাইবার দীর্ঘ সময়ের জন্য পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে এবং অন্যান্য খাবারের প্রতি আগ্রহ কমায়। এ ছাড়া এতে থাকা ফাইবার হাড় ও লিভার সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। আপেলের ফাইবার হজম শক্তি বাড়ানোর জন্য ভালো এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে উপকারী। আপেলের খোসায় থাকা কোয়ার্সিটিন উপাদান ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়ায়। এটি হৃৎপিণ্ড সুস্থ রাখতেও ভূমিকা রাখে।

কলার খোসা : গবেষণা বলছে, বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ৫ কোটি টন কলার খোসা ফেলে দেওয়া হয়। অথচ কলার খোসাতে অনেক গুণ আছে। এতে থাকে লুটেইন উপাদান চোখের জন্য দারুণ উপকারী। মুখে বা শরীরে যে কোনো অংশে চুলকানি বা ফোড়া হলে সেই অংশে কলার খোসা হালকা করে ঘষলে উপকার পাওয়া যায়। পোকামাকড় কামড়ালেও কলার খোসা লাগালে উপকার পাবেন। কলার খোসায় বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় এটি ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও ক্যানসারের প্রতিরোধে কাজ করে।

তরমুজের খোসা : তরমুজের প্রায় পুরোটাই পানি থাকে। এই ফলে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এ, সি, বি-৬ পাওয়া যায়। এতে যে পরিমাণ অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে তা পেশির যন্ত্রণা কমাতে ভূমিকা রাখে। ফলের মতো এর খোসার উপকারিতাও কম নয়। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস এ অ্যান্ড এম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বলছে, তরমুজের খোসায় থাকা সিট্রুলিন উপাদান ফ্রি রেডিকেল দূর করতে ভালো কাজ করে। এটা এমিনো এসিডে পরিবর্তিত হয়, এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, হৃৎপিণ্ড সুরক্ষায় কাজ করে এবং শরীরের বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে। তবে তরমুজের খোসা খাওয়ার ক্ষেত্রে একেবারে বাইরের সবুজ অংশ যা বাকলের সাথে যুক্ত থাকে সেটা খাওয়া ঠিক নয়। এটা পেটে সমস্যা তৈরি করতে পারে। তরমুজের ভেতরে লালের পরে যে সাদা অংশ থাকে সেটি খেলে উপকারিতা পাওয়া যায়। এছাড়া এই সাদা খোসার জুস করেও খেতে পারেন।

বেদানার খোসা : কাশি বা গলাব্যথা হলে গরম পানিতে বেদানার খোসার গুঁড়া দিয়ে কুলকুচি করলে আরাম মেলে। এই পানি ব্যবহারে দাঁতেরও কিছু রোগ সারে। বেদানার খোসা থেকে তৈরি পাউডার এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে কুলিকুচি করলে দাঁতের সমস্যা এবং মুখের দুর্গন্ধের সমস্যা দূর হয়। বেদেনার খোসা শুকিয়ে তার পাউডার বানিয়ে গোলাপ জলের সাথে মিশিয়ে মুখে মাখলে ত্বক উজ্জ্বল হয়। বেদানায় প্রচুর আয়রন থাকায় এটি রক্তস্বল্পতা কমায়। এছাড়া রুচি বৃদ্ধি করে, কোষ্টকাঠিন্য রোধ করে। জন্ডিস, বুক ধড়ফড়ানি, বুকের ব্যথা, কাশি, কণ্ঠস্বর পরিষ্কার করতে সাহায্য করে বেদানা। প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকায় বেদানা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ফলে মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা কমে। এছাড়া এটি হৃদরোগজনিত জটিলতা কমাতেও সাহায্য করে।

কমলার খোসা : কমলার মতো এর খোসাও শরীরের জন্য উপকারী। কমলার খোসা ত্বকের তৈলাক্ত ভাব কমায়। ঘরের স্যাঁতস্যাঁতে ভাব কাটাতেও কমলার খোসা বেশ কার্যকরী। প্রাকৃতিক উপায়ে দাঁতের হলদেটে ভাব দূর করতে সাহায্য করে কমলার খোসা। ভাব দূর করতে পারে একমাত্র কমলালেবুর খোসা। কমলার খোসায় থাকা অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান ব্রণের বিরুদ্ধে কাজ করে ব্রণের সমস্যা দূর করে। একটি গোটা কমলার খোসা ১ কাপ পানিতে সিদ্ধ করে নিন। ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে মুখ ধোয়ার কাজে ব্যবহার করলে সহজেই ব্রনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ