সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


যেসব লক্ষণে বুঝবেন শরীরে প্রোটিনের অভাব

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: শরীরে প্রোটিনের অভাবের ফলে স্বাস্থ্য ভেঙে যেতে পারে। প্রোটিনের অভাবের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে পারেন আপনি। আমাদের শরীরে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন কোষের জন্ম হচ্ছে। এই কোষ তৈরিতে প্রোটিন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই আমাদের শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি যাতে না হয়, তার জন্য বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।

শরীরে প্রোটিনের অভাব রয়েছে, তা কতগুলো লক্ষণ দেখলেই বোঝা যায়। সেগুলো জানা থাকলে, সঙ্গে সঙ্গে সতর্ক হওয়া যায়। আসুন জেনে নেই সেসব লক্ষণগুলো।

১. শরীর দুর্বল লাগা, ক্লান্ত লাগা

প্রোটিন শরীরে এনার্জি দেয়। তাতে কাজের স্পৃহা পারে, সব সময় অ্যাকটিভ থাকা যায়। যদি শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি থাকে তাহলে সারাদিন ক্লান্ত লাগতে পারে। ঘুম-ঘুম ভাব থাকতে পারে। সাধারণত যে ক্লান্ত লাগে, তার থেকে বেশিই ক্লান্তি আসতে পারে। তা কিন্তু প্রোটিনের ঘাটতির লক্ষণ। ঘন ঘন অসুস্থ হয়ে পড়া বা সুস্থ হতে সময় লাগা ইত্যাদিও শরীরে প্রোটিনের অভাবের লক্ষণ। প্রোটিন শরীরে কোষ গঠনে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। তাই শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি দেখা দিলে শরীর সুস্থ হয়ে উঠতে সময় লাগে।

২. পেশিতে জোর না পাওয়া

পেশি গঠনে ও মজবুত করতে সাহায্য করে প্রোটিন। যদি শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি থাকে তাহলে পেশিতে জোর থাকবে না। কোনও ভারী জিনিস তুলতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রোটিন আপনার শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি অ্যান্টিবডি নির্মাণ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর সাথে গভীরভাবে সম্পর্কিত। সুতরাং যখন প্রোটিনের ঘাটতি হয় তখন ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ঠাণ্ডা লেগে যাওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।

৩. খিদে বেড়ে যাওয়া

প্রোটিন শরীরের অন্যতম প্রয়োজনীয় মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস। যদি শরীরে এর ঘাটতি থাকে তাহলে শরীর খিদের পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়ে তা মেটানোর চেষ্টা করে। এবার এই খিদেটা যদি কোনও প্রসেসড ফুড বা জাঙ্ক ফুড দিয়ে মেটানো হয়, তাহলে ওজন বেড়ে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। হজমের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। ওজন হ্রাস করতে চাইলে হাইপ্রোটিন খাদ্য তালিকার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। কিন্তু শরীরে প্রোটিনের অভাব হলে খিদে বেড়ে যায়।

৪. অল্প বয়সে বার্ধক্য এসে যাওয়া

প্রোটিনের ঘাটতি ত্বক, চুল ও নখের উপরে প্রভাব ফেলতে পারে। যার ফলে ত্বকের বলিরেখা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বার্ধক্যজনিত সমস্যাও দেখা দিতে পারে। হাড় এবং পেশী দুই’ই প্রোটিনের অভাবে দুর্বল হয়ে যায়। শক্তিশালী হাড়ের জন্য প্রোটিন অত্যন্ত অপরিহার্য। প্রোটিন ক্যালসিয়ামের শোষণ বৃদ্ধি করে যা হাড়কে শক্ত করে রাখে।

৫. চোখ এবং হাত ফুলে যাওয়া

প্রোটিনের অভাবে দেহে ফোলাভাব তৈরি হতে পারে। আর এই সমস্যা থেকেই লিভার নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। প্রোটিন শরীরে নতুন কোষ তৈরি করতে সাহায্য করে। আর তাই প্রোটিনের অভাবে শরীরে পানি জমতে শুরু করে, যার ফলে শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে যেতে শুরু করে। যে অঙ্গগুলো বেশি ফোলে সেগুলো- হাত, পা, পায়ের পাতা ও পেট। এর কারণ, রক্তের মধ্যে সংবহন হওয়া প্রোটিন, বিশেষত অ্যালবুমিন আমাদের টিস্যুতে তরল জমতে দেয় না। ফলে প্রোটিনের ঘাটতি হলেই এই পানি জমার প্রবণতা বেড়ে যায়।

৬. নখ সাদা হয়ে যাওয়া

প্রোটিন নখের স্বাস্থ্য রক্ষা করে থাকে। নখ সাধারণত হালকা গোলাপি রঙ-এর হয়ে থাকে। যদি মনে হয় নখের রঙ অনেকটা সাদা অথবা ফ্যাকাশে হয়ে গিয়েছে, তাহলে বুঝতে হবে শরীরে প্রোটিনের অভাব দেখা দিয়েছে। নখের সমস্যাও প্রোটিন শরীরে কম ঢোকার আর একটি লক্ষণ। নখ একটু বিবর্ণ হয়, লম্বা লম্বা দাগের মতো হয় নখের উপরে। বিশেষ করে হাতের নখে। সুতরাং যখন প্রোটিনের ঘাটতি হয় তখন ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে পড়ে।

৭. রুক্ষ ত্বক ও শুষ্ক হয়ে যাওয়া

প্রোটিনের অভাবে ত্বক অনেক বেশি রুক্ষ আর শুষ্ক হয়ে যায়। ফলে ত্বকের মসৃণতা নষ্ট হয়ে যায়। এমন ধরনের সমস্যাতেও বুঝতে হবে শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি রয়েছে। এ কারণে চামড়ায় নানা সমস্যা তৈরি করে। ত্বক শুকনো, খসখসে হয়ে যায়, র‌্যাশ বেরোয়। অনেক সময়ে চামড়া ফেটে যায়।

৮. চুল পাতলা হয়ে যাওয়া

চুলের বৃদ্ধির জন্য প্রোটিন একটি সাহায্যকারী উপাদান। চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যা অনেক সময়ে বংশগত কারণেও হতে পারে। কিন্তু তা যদি বেশি পরিমাণে হতে থাকে তাহলে বুঝতে হবে শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। প্রোটিন চুলের একটি অপরিহার্য উপাদান। লম্বা এবং শক্তিশালী চুলের বৃদ্ধির জন্য প্রোটিন খুবই আবশ্যক। সুতরাং যখন এই অপরিহার্য ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্টের অভাব ঘটে তখন আপনার চুল দুর্বল হয়ে যায়, ভঙ্গুর হয়ে যায় এবং চুল পড়ার সমস্যা দেখা যায়।

-এএ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ