ফরহাদ খান নাঈম।। ।।
নবীজী সা. কে অপমান করা কুফরী। যদি কোনো মুসলমান এ কাজে লিপ্ত হয়, তাহলে সে আর মুসলিম থাকে না। সে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যায়; এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আল্লাহর রাসুলের সা. ইজ্জত রক্ষার্থে উক্ত ব্যক্তির ব্যাপারে শরয়ী দÐাদেশ কার্যকর করতে হবে।
কেউ যদি রাসুলের সা. ইজ্জতের উপর আঘাত হানবার পরে প্রকাশ্যে এবং আন্তরিকভাবে তাওবা করে, তবু সে তার কৃতকর্মের জন্য পার্থিব শাস্তি তথা মৃত্যুদÐ থেকে রেহাই পাবে না। অবশ্য তার এই তাওবা হয়তো তাকে পরকালে আল্লাহ তায়ালার শাস্তি থেকে রক্ষা করতে পারে।
আর যদি কোনো অমুসলিম নবীজী সা. কে অপমান করার মতো জঘন্য কাজে লিপ্ত হয়, আর সে যদি কোনো মুসলিম দেশের শাসনাধীন থাকে, তাহলে উক্ত ব্যক্তিকে শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদÐ দিতে হবে। তবে তার মৃত্যুদÐ কার্যকর করার দায়িত্ব উক্ত দেশের শাসকের। কোনো সাধারণ মুসলমান এক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।
যদি কোনো খৃষ্টান বা অন্য কেউ রাসুল সা. কে অপমান করে, তাহলে সকল মুসলমানের কর্তব্য হলো, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা জাতিগোষ্ঠীকে ঘৃনাভরে প্রত্যাহার করা ও সামগ্রিকভাবে বয়কট করা। মুসলমানদের উচিত হবে সেই ব্যক্তিকে তার এই ঘৃণ্য কাজের জন্য সমুচিত জবাব দেওয়া। সাথে সাথে তাকে আইনের হাতে সোপর্দ করতে হবে, যেখানে তাকে তার কৃতকর্মের জন্য উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে।
তবে দেশে যদি ইসলামী শাসনব্যবস্থা না থাকে এবং রাসুলের সা. অপমানকারীর বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা না থাকে, তাহলে উক্ত দেশের মুসলমানদের সাধ্যের মধ্যে থেকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে, নিজেদের সাধ্যের বাইরে গিয়ে এমন কিছু করা যাবে না, যা ফিতনার পরিমাণ আরো বাড়িয়ে দেবে ও দেশে বসবাসরত মুসলমানদের জন্য বৃহত্তর ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
একজন মুসলমান কোনো অবস্থাতেই কাফের কর্তৃক রাসুলের সা. অপমানের কথা শুনে প্রাণভয়ে কিংবা অন্য কোনো কারণে চুপ থাকতে পারে না। অনেকে আবার তাদের চুপ থাকার পেছনে নি¤েœাক্ত আয়াত উল্লেখ করে যুক্তি প্রদর্শন করে।
আল্লাহ তায়ালা বলেন- “তোমরা তাদেরকে মন্দ বলো না, যাদের তারা আরাধনা করে আল্লাহকে ছেড়ে। তাহলে তারাও শত্রুতা করে ও অজ্ঞতাবশতঃ আল্লাহকে মন্দ বলবে।” সূরা আন’আম: আয়াত ১০৮।
উক্ত আয়াতে বলা হয়েছে, আগ বাড়িয়ে কাফির-মুশরিকদের উপাস্য প্রভুদেরকে মুসলমানদের জন্য গালি দেওয়া নিষিদ্ধ, অন্যথায় তারাও অজ্ঞতাবশত আল্লাহকে গালি দিয়ে বসবে নাঊযুবিল্লাহ! তবে যদি তারা আগে আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুল সা. কে গালি দেয়, সেক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য নয়। বরং সেক্ষেত্রে মুসলমানদেরকে কাফির-মুশরিকদের তাদের ধৃষ্টতার জন্য যথাযোগ্য জবাব দিতে হবে। যাতে করে, ভবিষ্যতে আর কেউ আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুলের সা. ব্যাপারে কটুক্তি করতে সাহস না পায়। সুতরাং রাসুলের সা. অপমানে চুপ থাকার পেছনে যারা উপরোক্ত আয়াত দ্বারা দলীল পেশ করে, তাদের এই খোঁড়া দলিলের প্রতি ভ্রæক্ষেপও করা যাবে না।
যদি কাফের-মুশরিকদের কটুক্তির জবাব না দিয়ে মুসলমানরা নীরবতার ভূমিকা পালন করে, তাহলে কাফের-মুশরিক-নাস্তিকদের দুঃসাহস আরো বেড়ে যাবে। তারা ভবিষ্যতে আরো বড় কোনো ফিতনা সৃষ্টি করতে দ্বিধাবোধ করবে না।
মনে রাখতে হবে, আত্মরক্ষামূলক ক্রোধ থাকা মুসলমানদের একটি আবশ্যকীয় বৈশিষ্ট্য। আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুলের সা. স্বার্থে, ইসলামের স্বার্থে প্রয়োজনে নিজেদের ক্রোধ প্রদর্শন করা মুসলমানদের ইমানী দৃঢ়তার পরিচায়ক। যে মুসলমান রাসুলের সা. অপমানে অপমানবোধ করে না, কেউ রাসুল সা. কে অপমান করলে চুপ থাকে, সে কখনো প্রকৃত মু’মিন হতে পারে না।
কেননা, নবীজী সা. বলেছেন- তোমরা কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত মু’মিন হতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত সে তার পিতা-মাতা, সন্তান-সন্তুতি, এবং সমস্ত মানুষ অপেক্ষা আমাকে (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বেশি মুহব্বত না করবে। অন্য বর্ননায় এসেছে, তার ধন সম্পদ এবং জীবনের চাইতে বেশি মুহাব্বত না করবে।” (বুখারী শরীফ ১/৭-কিতাবুল ঈমান- হাদীস নম্বর ১৪, ১৫)
দ্য দীন শো ডট কম থেকে ফরহাদ খান নাঈমের ভাষান্তর।
-এটি