শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


গণপরিবহনে মহিলার পাশে বসা: ইসলাম যা বলে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ফরহাদ খান নাঈম।।

গণপরিবহনে কিংবা অফিস-আদালতে কিংবা বিদ্যালয়ে কোথাও নারী-পুরুষের সংমিশ্রণের অনুমতি নেই। কেননা এতে চরিত্রস্খলনের মতো ভয়ঙ্কর বিপদের সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। কুরআন ও হাদীসের বহু জায়গায় নারী-পুরুষের অবাধ সংমিশ্রণের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এসেছে।

প্রথমত একজন মুসলমান নারী-পুরুষের সংমিশ্রণ রয়েছে এমন গণপরিবহনে আরোহণ করা থেকে বিরত থাকবে। তবে অপারগতাবশত তাকে যদি এরকম গণপরিবহনে আরোহণ করতেই হয়, তাহলে তাকে যতোটা সম্ভব আল্লাহকে ভয় করতে হবে, তার দৃষ্টি অবনত রাখতে হবে এবং কোনো হারাম জিনিসের দিকে দৃষ্টিপাত করা যাবে না। তাকে চেষ্টা করতে হবে দাঁড়িয়ে ভ্রমণ করে হলেও কোনো মহিলার পাশে না বসা। আর তার এ চেষ্টার বিনিময়ে সে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনে সক্ষম হবে, এবং সমূহ ফিতনা থেকে বেঁচে থাকতে পারবে।

নবীজী সা. বলেছেন, তোমরা নারীদের থেকে সাবধান হও! কেননা বনী ইসরাইলের মধ্যে সর্বপ্রথম ফিতনা সৃষ্টি হয়েছিলো নারীর কারণে। মুসলিম : ২৭৪২
তিনি সা. আরো বলেন, পুরুষদের জন্য নারীর ফিতনার চেয়ে বড় আর কোনো ফিতনা নেই। বুখারী : ৫০৯৬, মুসলিম : ২৭৪২।

গণপরিবহনে কারো আসন যদি কোনো মহিলার পাশে পড়ে, তাহলে আল্লাহর ভয়ে অন্য কারো সাথে উক্ত আসন পরিবর্তন করে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, যে আল্লাহকে ভয় করে, তিনি তার জন্য উত্তরণের পথ তৈরি করে দেন। এবং তিনি তাকে এমন উৎস থেকে রিযিক দেবেন যা সে কল্পনাও করতে পারবে না। আর যে আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করে আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট। আল্লাহ তাঁর উদ্দেশ্য পূর্ণ করবেনই। নিশ্চয় আল্লাহ প্রত্যেক জিনিসের জন্য একটি সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সূরা তালাক : আয়াত ২ - ৩।

তবে বর্তমানে গণপরিবহনে দাঁড়িয়ে ভ্রমণ করলেও মহিলাদের সংস্পর্শ থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব হয় না। কেউ যদি এমন কোনো পরিস্থিতিতে পড়ে যায় যেখানে দাঁড়িয়ে গেলেও মহিলার সংস্পর্শ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তখন তার জন্য মহিলার পাশে বসে ভ্রমণ করার অনুমতি রয়েছে। তবে যথাসম্ভব মহিলার সংস্পর্শ থেকে নিজেকে দূরে রাখার চেষ্টা করতে হবে।

মহিলার পাশে বসার পর যদি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ফিতনা সৃষ্টি হওয়ার ভয় করে, এবং শয়তান যদি কুমন্ত্রণা দিয়ে তাকে বিপথে পরিচালিত করার চেষ্টা করে, তাহলে তাকে অবশ্যই যত দ্রুত সম্ভব সেই পরিবহন থেকে নেমে যেতে হবে। এতে যদি তার অফিস কিংবা বিদ্যালয়ে যেতে দেরি হয়েও যায়, তবু নিজের ইমানকে বাঁচাতে তাকে উক্ত পরিবহন থেকে দ্রুত নেমে যেতে হবে। কেননা একজন মুসলমানের কাছে সবচেয়ে দামী বস্তু হলো তার ইমান।

এক্ষেত্রে মূলনীতি হলো, যেখানে তাকওয়া বিনষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, একজন মুসলমান সর্বদা সেখান থেকে দূরে থাকবে। আর এই মূলনীতি শুধু গণপরিবহনের ক্ষেত্রেই নয়; বরং একজন মুমিন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজের ইমানকেই সর্বাগ্রে রাখবে।

islamQA থেকে ফরহাদ খান নাঈমের অনুবাদ।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ