আওয়ার ইসলাম: কুমিল্লার মুরাদনগরে জাতীয় সংগীতের সুর দিয়ে ইসলামী সংগীত (হামদ) পরিবেশনের অভিযোগে ‘মাদরাসায়ে দারুল কুরআন আল আরাবিয়্যাহ সিদ্ধেশ্বরী’ নামের একটি মাদরাসার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
মাদরাসাটির প্রিন্সিপাল মাওলানা মোহাম্মাদ নাজিবুল্লাহ আফসারী এ বিষয়ে ক্ষমা চেয়েছেন এক ভিডিও বার্তায়। এরপর আলেমরা মাদরাসা খোলার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
গত রোববার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার সিদ্ধেশ্বরী এলাকার এ মাদ্রাসার কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। এ সময় কাগজপত্র ও অনুমোদন নিয়ে ওই মাদরাসা চালু করার জন্য নির্দেশ দেয় প্রশাসন।
জানা যায়, উপজেলার সিদ্ধেশ্বরী দারুল কোরআন আল আরাবিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম নাজিবুল্লাহ আফসারী জাতীয় সংগীতের সুর ব্যবহার করে একটি ইসলামী সংগীত পরিবেশনা করে তার নিজস্ব ফেসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করেন। এতে বিষয়টি কর্তৃপক্ষসহ গণমাধ্যম এবং স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হয়। এ সময় মাদরাসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে মাদরাসার কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়।
এ বিষয়ে মাদ্রাসার মুহতামিম নাজিবুল্লাহ আফসারীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আসলে বিষয়টি এমন হবে তা আমার জানা ছিল না। আমি আমার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থেকে সবকিছু কেটে দিয়েছি এবং একটি ভিডিও বার্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিয়ে এ বিষয়টির জন্য দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়েছি।
ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, প্রিয় দেশবাসী! আমি আমার জাতীয় সংগীতের সুরে গাওয়া হামদের জন্য ক্ষমা চাচ্ছি। আর প্রশাসন আমার মাদরাসা চিরস্থায়ীভাবে বন্ধ করেনি। তারা অর্ধদিন ক্লাস করার জন্য বলেছেন। আর মাদরাসার কাগজপত্র দেখাতে বলেছেন।
এ বিষয়ে আওয়ার ইসলামকে তিনি বলেন, স্থানীয় আলেম মুফতি আমজাদ হোসাইন সাহেবকে আমি বিষয়টি অবগত করে বলেছি, বিষয়টি সহজে কিভাবে মীমাংসা করে আমার মাদরাসা পুনরায় চালু করা সম্ভব হয় সেটা করলেই হবে। এর বেশি কিছু করার প্রয়োজন নেই।
এ বিষয়ে স্থানীয় আলেম মুফতি আমজাদ হোসাইন বলেন, প্রশাসনের নির্দেশনা মোতাবেক ওই মাওলানা দুঃখ প্রকাশ করে ভিডিও ক্লিপ প্রচার করার পরেও প্রশাসন এখন পর্যন্ত মাদরাসা খোলার অনুমতি দেয়নি। বিষয়টি দু:খজনক। এক্ষেত্রে প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলবো, কওমি মাদরাসা সমূহের অনুমোদন বা নিবন্ধন দেয়ার জন্য বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশসহ সরকার অনুমোদিত আরও চারটি বোর্ড রয়েছে। কওমি মাদরাসাসমূহ ওই বোর্ডগুলো থেকেই অনুমোদন বা নিবন্ধন গ্রহণ করে থাকে। সুতরাং স্থানীয় প্রশাসন থেকে অনুমোদনের নামে মাদরাসা বন্ধ করে দেয়া কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাই প্রশাসনের নিকট আহবান করছি, অনতিবিলম্বে ওই প্রতিষ্ঠানের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে মাদারাসা খুলে দেয়ার জন্য।
জানা গেছে, মাদরাসা বন্ধ রাখার বিষয়টি নিয়ে তদারকি করেছেন বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা সমূহের সর্বোচ্চ অথরিটি ‘আল-হাইয়াতুল উলিয়া-লিল-জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’ এর চেয়ারম্যান আল্লামা মাহমুদুল হাসান ও বেফাকের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি মাওলানা মাহফুজুল হক। মাদরাসা খোলা পর্যন্ত তারা তদারকি করে যাবেন বলেও জানা গেছে।
এমডব্লিউ/