ফরহাদ খান নাঈম ।।
একজন আদর্শ মুসলিম নারীর প্রথম ও প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, সে মনেপ্রাণে একমাত্র আল্লাহ’য় বিশ্বাস করবে, এবং তার এই বিশ্বাসে সে কোনো সন্দেহের অবকাশ রাখবে না। সে তার সর্বস্ব একমাত্র আল্লাহ তায়ালার নিকট সঁপে দেবে। সে আল্লাহ তায়ালার ভয়ে যাবতীয় পাপাচার থেকে বিরত থাকবে; এবং সকল ভালো কাজ একমাত্র তাঁরই রাজি-খুশির জন্য করবে। তাই সে তার ভালো কাজের বিনিময়ে কখনোই কারো কাছে কিছু আশা করে না।
একজন আদর্শ নারী একমাত্র আল্লাহর ইবাদাত করবে, শুধুমাত্র তাঁকেই তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করবে, এবং বিপদ-আপদে তাঁর কাছেই সাহায্য প্রার্থণা করবে। সে তার সকল কল্যান-অকল্যানের ক্ষেত্রে একমাত্র তাঁর উপর নির্ভর করবে। সে বিশ্বাস করে যে, তার জীবন-মৃত্যুর মালিক একমাত্র আল্লাহ। তিনিই তাকে রিযিক দান করেন। সকল বিপদ-আপদে তিনিই তাকে হেফাজত করেন। যতবড় বিপদই আসুক না কেনো, সে কখনোই আল্লাহর উপর বিশ্বাস হারা হয় না।
একজন আদর্শ নারী ভালোমন্দ সর্বাবস্থায় আল্লাহ তায়ালার সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট থাকবে। সকল অবস্থায় তাঁর উপর কৃতজ্ঞ থাকবে। সে তার সবটা আল্লাহর জন্য বিসর্জন দিয়ে তাঁর ক্ষমা ও ভালোবাসা হাসিলের চেষ্টা করবে।
জীবনঘনিষ্ঠ যে কোনো সমস্যায় সে পবিত্র কুরআনে তার সমাধান খুঁজে বের করতে চেষ্টা করবে। এবং আল্লাহর ক্ষমা ও ভালোবাসার উপর সে সার্বক্ষণিক অটুট বিশ্বাস রাখবে। একজন আদর্শ নারী হৃদয় দিয়ে বিশ্বাস করে যে, আল্লাহ তায়ালা যা করেন তাঁর বান্দার মঙ্গলের জন্যই করেন।
এমনকি তার সমস্যা যদি দীর্ঘস্থায়ীও হয়, সে কখনো আল্লাহ তায়ালার প্রতি নিরাশ হয় না। সে জানে একদিন না একদিন নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালার সাহায্য আসবে। সকল প্রতিকুল পরিস্থিতি সে ধৈর্যসহকারে মেনে নিয়ে আল্লাহর সাহায্যের আশা করবে। প্রতিকুল পরিস্থিতিতে সে আল্লাহর উপর আস্থা হারিয়ে নিজের ইমানকে ঝুঁকিগ্রস্ত করবে না।
নবী-রাসুলগণও আ. কোনো বিপদে পড়লে একমাত্র আল্লাহর উপর আস্থা রাখতেন। তাঁরা বলতেন, আমার রব আমার সাথে আছেন; তিনিই আমাকে পথ দেখাবেন। আল কুরআন ৪২:৬২। আল্লাহ তায়ালার উপর একজন মুসলিম নারীর অগাধ বিশ্বাস সর্বদা তাকে তাঁর উপর নির্ভরশীল থাকতে সাহায্য করে।
আল্লাহ তায়ালা নারী-পুরুষকে একটি বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে সৃষ্টি করেছেন; এবং তাদের সকল দায়দায়িত্ব পবিত্র কুরআনে বর্ণনা করেছেন। তাদের জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপ তারা আল্লাহ তায়ালার নির্দেশনা মোতাবেক পরিচালনা করবে। তারা বিশ্বাস করে, আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের মধ্যেই জীবনের প্রকৃত সুখ নিহিত। আর পবিত্র কুরআনে বর্ণিত নির্দেশনা অনুযায়ী জীবন পরিচালিত করার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা যায়।
অনেক সময় ইসলাম অনুযায়ী জীবনযাপন করতে গেলে অনেক মা-বোনদেরকে ঠাট্টা ও উপহাসের শিকার হতে হয়। কিন্তু একজন প্রকৃত মুসলিম নারী অন্যের ঠাট্টা-বিদ্রƒপের কারণে কখনোই কুরআন অনুসরণ থেকে পিছপা হয় না। কেননা, সে জানে কুরআনে বর্ণিত পন্থায় জীবন পরিচালনা করার মাধ্যমেই কেবল দুনিয়া ও আখেরাতের সফলতা লাভ করা সম্ভব। কারণ, পবিত্র কুরআনে কোনটা সঠিক আর কোনটা ভুল তা স্পষ্ট করে বলা হয়েছে। ইসলাম অনুসরণের কারণে কখনো বিদ্রƒপের শিকার হলে একজন মুসলিম নারীর ইমান আরো বেড়ে যায়, আরো শক্তিশালী হয়।
একজন নারীর জীবনঘনিষ্ঠ সকল সমস্যার সমাধান পবিত্র কুরআনে রয়েছে। ইসলামই একমাত্র নারীকে প্রকৃত সম্মান দিয়েছে। পবিত্র কুরআনের বহু আয়াতে নারীর অধিকার ও সম্মানের কথা বলা হয়েছে। ইসলাম অনুসরণ করার মাধ্যমেই একজন নারী সমাজে একটি সম্মানজনক অবস্থান তৈরি করে নিতে পারে, সর্বত্র তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে। কেননা আল্লাহ তায়ালার কাছে সম্মানের মাপকাঠি হলো তাকওয়া, লিঙ্গ নয়। আল্লাহ তায়ালা বলেন, নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে সেই-ই অধিক সম্মানিত যার তাকওয়া বেশি। আল-কুরআন।
-এটি