প্রকৌশলী আলী আব্দুল মুনতাকিম।।
গোপন স্বামী, প্রকাশ্য স্বামী। দুই স্বামীকেই ম্যানেজ করে চলছিল বরগুনার মিন্নি। এক কথায় অদ্ভুত। গোপন স্বামী নয়ন বন্ডের নেতৃত্বে প্রকাশ্য স্বামী রিফাতকে কুপিয়ে হত্যা, পরে গোপন স্বামীকে ক্রসফায়ারে হত্যা। তরতাজা দুটো তরুনের এমন খুনের নায়িকা মিন্নি নামের ১৯ বছরের একটি মেয়ে। মেয়েটি এখন ফাঁসির আসামি হিসেবে বরগুনা জেলের কনডেম সেলে। হতভাগ্য বাবার মোটরসাইকেলের পেছনে চড়ে সফেদ পোষাকে আদালতে হাজিরা শেষে মৃত্যূ পরোয়ানা মাথায় নিয়ে কারাগারের কনডেম্নড সেল বা আধার প্রকোষ্ঠে।
এই ঘটনায় আদালতে অভিযুক্ত ছিল ২৪ জন, স্বাক্ষী ছিল ৭৬ জন, অর্থাৎ ১০০ টি পরিবারই অশান্তির মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। উক্ত দন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের পরিবারগুলো বলা যায় সর্বশান্ত হয়ে গেল। বিচারক তার অবজারভেশনে মিন্নিকে পুরো হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড হিসেবে চিত্রিত করেছেন।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন কারাগারে ৪৯ জন নারী ফাঁসির দণ্ড মাথায় নিয়ে কনডেম সেলের বাসিন্দা। মিন্নির মতই হয়ত এই নারীগুলো কোনো না কোনো অপরাধের সাথে জড়িত (ফাঁসির ভুল আসামি থাকলে ভিন্ন কথা)।
মিন্নি কি পরিবার থেকে এ শিক্ষা পেয়েছিল যে, আমার ভালো-মন্দ সকল কাজের রেকর্ড করার জন্য ২ জন ফেরেস্তা দুই কাঁধে নিয়োজিত আছেন। আমার জন্য পর্দা করা ফরজ। আমার এ বয়সে পর পুরুষ সম্পূর্ণ হারাম। রিফাতকে বিয়ের পর নয়ন বন্ডের সাথে কথা বলাই হারাম। মিন্নির মা-বাবা তো এরকম শিক্ষা দেয়নি। স্কুল বা কলেজ থেকেও যদি ধর্মীয় শিক্ষায় শেখানো হত একজন যুবতী নারীর কি করা যাবে আর কি করা যাবে না। তাহলে মিন্নি হয়ত সতর্ক থাকতো। খালিক-মালিক-রব কে ভয় করে রাসুলুল্লাহ সা. এর নির্দেশিত পথেই থাকার চেষ্টা করে যেতো। কন্ডেম্নড সেলে মৃত্যুর প্রহর গুনতে হত না। মৃত্যু দন্ডপ্রাপ্ত ৪৯ জন নারীর বেলায়ও একই কথা। এদের মধ্যে ঐশি নামের মেয়েটি নাই। সে তার পুলিশ অফিসার পিতা ও মাতাকে হত্যা করে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। তার বয়সও তখন ১৮/২০ এর কোঠায়। ১৮-২৩ বয়সে তারা এসব লোমহর্ষক ঘটনাগুলো ঘটিয়ে চলছে।
বাংলাদেশের সমাজবিজ্ঞানী ও মনোবিজ্ঞানীগন নানারকম চূলচেরা বিশ্লেষণ করে চলেছেন। এটা কি তাদের বয়সের দোষ? নাকি তাদের পারিবারিক শিক্ষার দোষ? সমাজ-রাষ্ট্র ব্যবস্থার দোষ? মিডিয়ার উলঙ্গপনার প্রভাব? নাকি আসলে অন্যকিছু! এই অন্যকিছুটা তারা বলতে লজ্জা পাচ্ছেন। সেটাই হচ্ছে ধর্মীয় শিক্ষার অভাব।
ঘটনা-২। ২৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় সিলেট মুরারীচাঁদ (এমসি) কলেজের ছাত্রাবাসে গণধর্ষণের শিকার হন এক তরুণী। এমসি কলেজ থেকে স্বামীসহ ওই তরুণীকে ধরে এনে ছাত্রলীগের ৫ থেকে ৬ জন নেতা গণধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, তরুণীকে ধর্ষণের সাথে ছাত্রলীগের ৬জন নেতা জড়িত ছিলেন।
জানা যায়, এমসি কলেজ ছাত্রলীগের নেতা ও কলেজটিতে ইংরেজিতে মাস্টার্সে অধ্যয়রত শাহ মাহবুবুর রহমান রণি, এক শ্রেণীতে অধ্যয়নরত ছাত্রলীগ নেতা মাহফুজুর রহমান মাছুম, এমসি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা এম সাইফুর রহমান, কলেজ ছাত্রলীগ নেতা অর্জুন এবং বহিরাগত ছাত্রলীগ নেতা রবিউল ও তারেক।এরা সকলেই সিলেট ও হবিগঞ্জের বাসিন্দা।
ধর্ষণের শিকার তরুণী তার স্বামীর সাথে নিজস্ব গাড়িতে ঘুরতে যায়। ক্যাম্পাসের জঙ্গলে যে বণ্য হায়েনারা ওঁৎ পেতে বসে আছে তা তাদের জানা ছিলো না। স্মার্ট নববধূকে ছাত্রলীগের হিংস্র পশুগুলি স্বামীসহ নিজেদের কক্ষে নিয়ে যায়, গাড়ির চাবি মোবাইল নিয়ে নেয়। তারপর দু'জনকে মারধর করে, স্বামীকে বেঁধে ফেলে। একে একে ৬ পশু মিলে মেয়েটিক ধর্ষণ করে। পর্দানশীন নববধূ হলে তরুণীটি বর্বর ছাত্রলীগ নেতাদের দৃষ্টিতে পড়ার সুযোগ ছিলো না। স্বামীর খোদাভীতি থাকলে নেকড়ের পালে নিজেকে সঁপে দিতেন না।
কলেজে যদি ধর্মীয় শিক্ষা থাকত, ধর্মীয় আচরনের প্র্যাকটিস থাকত, আখেরাতের কঠিন আদালতে হিসাব দেয়ার ভয় থাকত, কলেজের প্রফেসরগন যদি প্র্যাকটিসিং মুসলিম হতেন, মোহারেমা বা গায়রে মোহারেমা কারা এ হিসাব জানা থাকত এরকম নারকীয় ধর্ষণ কান্ডের কল্পনাই করা যেত না। রাজনৈতিক দলের মধ্যেও যদি আল্লাহ পাকের কাছে সকল কাজের জবাবদিহিতার বিষয়ে প্রশিক্ষণ থাকত তাহলে দলের কর্মীরা জঘন্য, হারাম, শরীয়তবিরোধী কাজের সাহস করত না।
এমসি কলেজের প্রিন্সিপাল ডেইলি স্টার পত্রিকার সাথে সাক্ষাৎ এ যা বলেন হুবহু তুলে ধরা হল- “ডেইলি স্টার: এ ঘটনায় আপনি বলছেন সুপারিশ করা হবে। কিন্তু, রাজনৈতিক কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তো ব্যবস্থা নেওয়া নাও হতে পারে। ঘটনা ঘটে যায়, আর অভিযুক্ত হতে থাকেন আপনারা।
অধ্যাপক সালেহ: আমরা কী করতে পারি বলেন। আমি একজন সরকারি কর্মকর্তা। এগুলো আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিষয়, অনেক কিছু আছে যেগুলো বিচারিক আদালতের বিষয়, যেটা সরকারের বিষয়, সরকারি যে বিভিন্ন সংস্থা আছে তাদের বিষয়। অনেক কিছু তো আমাদের হাতে নেই। আমি কি বোঝাতে পারছি আপনাকে? আপনার প্রশ্ন আমি বুঝতে পারছি। আপনি আমার দিকটাও বেঝেন, আমার কী সীমাবদ্ধতা, আমি কতটা অসহায়। একটা কলেজের অধ্যক্ষকে ধরে পানিতে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। বিভিন্ন পত্রপত্রিকা থেকে আপনার মাধ্যমেই আমরা খবর পাই, টিভিতে দেখি। আমাদের অবস্থাটা বোঝার চেষ্টা করেন।”
এতদূর বলেই অধ্যক্ষ তার দায়িত্ব শেষ করেন। সন্দেহ নাই সরকার শক্ত হাতে বর্বর হায়েনা-দুর্বৃত্তদের পাকড়াও করেছে এবং বিচারও করবে। কিন্তু এভাবে এসব অনাচার বন্ধ হবে না। সরকার, আদালত, সংস্থা কারো পক্ষেই সম্ভব নয় এসব বন্ধ করার মূল বিষয়ে হাত না দিয়ে। প্রাতিষ্ঠানিকভাবেই সকলের মাঝে মালিক-মাওলার চরম শাস্তির ভয় ঢুুকিয়ে দিতে হবে। সেটা সম্ভব শুধু ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূল করার মাধ্যমে। এমসি কলেজে যদি সেদিন মাগরিবের আজান হত, সকল ছাত্রদের কলেজের মসজিদে নামাজ বাধ্যতামূলক থাকত এ ঘটনা কল্পনাও করা যেত না।
নামাজ যখন বাধ্যতামূলক হলো না, মসজিদের হক আদায় হলো না, তাহলে তো তখন মদ চলবে, ইয়াবা চলবে, ধুমপান চলবে, মাস্তানী চলবে, চাঁদাবাজি চলবে। বাকি থাকলো শুধু নারী। তাই ছাত্র নামের নরপিশাচরা নারীর ব্যবস্থাও করলো। এ লজ্জা দেশ জাতির বলে পার পেতে পারি না। এ লজ্জা ধর্মহীন শিক্ষা ব্যবস্থার।
ঘটনা-৩। গত ২সেপ্টেম্বর রাতে নোয়াখালি উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের বড় খালপাড় এলাকায় রাতের আঁধারে ঘরে ঢুকে এক গৃহবধূকে অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে, পৈশাচিক কায়দায় নির্যাতন করে, উলঙ্গ করে ভিডিও ধারণ করেছে এলাকার যুবলীগের সন্ত্রাসী মাদক ব্যবসায়ী চোরাকারবারি দেলোয়ার বাহিনী।
গৃহবধূর বয়স বর্বর হায়েনা গুন্ডাদের থেকে বেশি বা বড়বোনের বয়সী। তাকে দীর্ঘ সময় নিয়ে নির্যাতন ও মারধরের সময় কেউ এগিয়ে আসেনি। পাশের অনেকেই তার চিৎকার শুনেছে। ঘটনার ৩২ দিন পর নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশের মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়ে ।এর আগে মেম্বার ঘটনা জেনেও ভয়ে কিছু বলেন নি।
ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইদুর রহমান দিপু বলেন, ‘মাদক চোরাকারবারি দেলোয়ার বাহিনী এই ঘটনা ঘটিয়েছে।’
একলাশপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগ বলেন, ‘ঘটনার পর ওই গৃহবধূ আমার কাছে এসেছিলেন। তবে কারা তাকে নির্যাতন করেছেন, তা তিনি বলেননি। ঘটনার পর থেকে ওই গৃহবধূ ও তার পরিবার বাড়িতে বসবাস করে না।’
বাস এতটুকু বলেই চেয়ারম্যান প্রার্থী ও মেম্বারের দায়িত্ব শেষ, মানে তারা যুবনেতাকে ভয় পান। তারা যদি তাদের দায়িত্বের কথা জানতেন তাহলে তারা পাগল হয়ে যেতেন! রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, كلكم راء وكل راء مسئول عن رعيته. যার অর্থ: তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল, সবাইকেই তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
সমাজ ও জাতীর কতটা অধঃপতন হয়েছে তা বলার কোনো ভাষা আমার জানা নেই। সারাদেশের মানুষ এর প্রতিবাদে এখন রাস্তায়। সকল স্তরের মানুষ এরকম বিভৎস, লজ্জা-জনক ঘটনার কঠোর শাস্তি দাবি করছে।
প্রায় সব হায়েনাদের ধরা হয়েছে। সরকার কোনো দলিয় পরিচয় দেখবে না। কঠোর বিচার ও হয়ত হবে। তারপর? ধর্ষণ খুন দূর্ণীতি কি থামবে? না। একদমই থামবে না।
সমূলে উৎপাটনের জন্য আমাদের সকলের মিলে দাবি তুলতে হবে। প্রাইমারী লেভেল থেকে ভার্সিটি পর্যন্ত সকল স্তরে ধর্মীয় শিক্ষা এবং সাথে সাথে তার প্র্যাকটিসিং বা আমল এর প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। অফিস আদালত সর্বত্রই সবাইকে খোদাভীতির প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে হবে। তাহলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোটিপতি ড্রাইভার যেমন হবে না, ব্যাংক লুটেরা প্রবির বা পুলিশ নামের প্রদীপ তৈরী হবে না। তাদের ধর্মে ও গুম খুন লুটপাট নিষিদ্ধ। একজন হিন্দু তার ধর্ম, বৌদ্ধ তার ধর্ম, খৃষ্টান তার ধর্ম সঠিক ভাবে পালন করলে সে অন্যায়, অবিচার, খুন,ধর্ষণ, দূর্ণীতি কোন অপরাধমূলক কাজই করতে পারবে না। সততার মধ্যে পরকালীন জবাবদিহিতার ভয় কাজ করবে।
কুরআন-হাদিসে ধর্ষণ ও ব্যাভিচারের শাস্তি
১. মহানবী মুহাম্মদ সা. বলেছেন, ‘ব্যভিচারের জন্য শাস্তি ছয় রকমের নির্ধারিত ; ৩টি দুনিয়ায়, ৩টি আখিরাতে। দুনিয়ার ৩টি হলো— ১. মুখ বা চেহারার সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যাবে, ২. দারিদ্রতায় পড়বে এবং ৩. অকালে মৃত্যু। আখিরাতের ৩টি হলো—১. আল্লাহপাকের অসন্তুষ্টি, ২. আখেরাতের হিসাব-নিকাশের কঠোরতা এবং ৩. জাহান্নামের কঠিন শাস্তি।
ধর্ষণকারী বা ব্যাভিচার কারী সমাজ দেশে হাঙ্গামা সৃষ্টিকারী সমাজ ধ্বংস কারী, আল্লাহপাকের ও রাসুলুল্লাহ সা. এর বিরুদ্ধে অবস্থানকারী। তাদের শাস্তি কঠোর।
পবিত্র কোরানের সুরা মায়েদায় (৩৩) আল্লাহ পাক বলেন, إِنَّمَا جَزَاء الَّذِينَ يُحَارِبُونَ اللّهَ وَرَسُولَهُ وَيَسْعَوْنَ فِي الأَرْضِ فَسَادًا أَن يُقَتَّلُواْ أَوْ يُصَلَّبُواْ أَوْ تُقَطَّعَ أَيْدِيهِمْ وَأَرْجُلُهُم مِّنْ خِلافٍ أَوْ يُنفَوْاْ مِنَ الأَرْضِ ذَلِكَ لَهُمْ خِزْيٌ فِي الدُّنْيَا وَلَهُمْ فِي الآخِرَةِ عَذَابٌ عَظِيمٌ
যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে সংগ্রাম করে এবং দেশে হাঙ্গামা সৃষ্টি করতে সচেষ্ট হয়, তাদের শাস্তি হচ্ছে এই যে, তাদেরকে হত্যা করা হবে অথবা শূলীতে চড়ানো হবে অথবা তাদের হস্তপদসমূহ বিপরীত দিক থেকে কেটে দেয়া হবে অথবা দেশ থেকে বহিষ্কার করা হবে। এটি হল তাদের জন্য পার্থিব লাঞ্ছনা আর পরকালে তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর শাস্তি।
ধর্ষিতার শাস্তির চেয়ে ধর্ষকের শাস্তি কঠোর। অবস্থা ভেদে ধর্ষিতাকে মাফ করে দেয়ার বিধানও আছে। দেখা গেল জোরপূর্বক মহিলাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। অথচ ইসলামের এ বিধানগুলো নিয়ে যথেষ্ট অপপ্রচার আছে। বলা হয় শাস্তি নাকি শুধু মহিলাদের ক্ষেত্রে। না জেনে এসব বলা হয়।
নিচের হাদিসের দ্বারা বুঝা যাবে, রাসূল সা. এর বিচারবোধ ছিল ইনসাফ ও ভারসাম্যপূর্ণ ;যেমন- ১. হজরত ওয়াইল ইবনে হুজর (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে , হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে এক মহিলাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হলে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) তাকে কোনোরূপ শাস্তি দেননি, তবে ধর্ষককে হদের(যেসব শাস্তির পরিমাণ ও পদ্ধতি কোরআন-হাদিসে সুনির্ধারিত তাকে- হদ বলে) শাস্তি দেন। ’ -ইবনে মাজাহ শরীফ: নং-২৫৯৮
২.অর্ধেক পৃথিবীর খলিফা ওমর রা. এর আমলে , সরকারের একজন স্টাফ গণিমতের এক পঞ্চমাংশের পাওয়া এক দাসিকে যৌন নির্যাতন করে বা ব্যভিচার (ধর্ষণ) করে। এতে দাসিটির কুমারিত্ব নষ্ট হয়। হজরত উমর (রা.) ওই গোলামকে কশাঘাত করেন এবং নির্বাসনে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু দাসিটিকে সরকারী স্টাফ যৌন কাজে বাধ্য করেছিল বলে তাকে কশাঘাত করেননি। ’ –সহিহ বোখারি শরীফ: নং-৬৯৪৯।
যদি ইসলামের বিধান প্রয়োগ করা হত, স্কুল -কলেজ,অফিস -আদালতে এগুলো শেখানো হত, তাহলে নারী নির্যাতন, খুন-ধর্ষণ, চুরি -দূর্নীতি শূন্যের কাছে চলে আসত। কারন শাস্তি গুলো জনসম্মুখে হতে বলা হয়েছে। সুরা নূরে (২) আল্লাহ পাক বলেন: الزَّانِيَةُ وَالزَّانِي فَاجْلِدُوا كُلَّ وَاحِدٍ مِّنْهُمَا مِئَةَ جَلْدَةٍ وَلَا تَأْخُذْكُم بِهِمَا رَأْفَةٌ فِي دِينِ اللَّهِ إِن كُنتُمْ تُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَلْيَشْهَدْ عَذَابَهُمَا طَائِفَةٌ مِّنَ الْمُؤْمِنِينَ
ব্যভিচারিণী নারী ব্যভিচারী পুরুষ; তাদের প্রত্যেককে একশ’ করে বেত্রাঘাত কর। আল্লাহর বিধান কার্যকর কারণে তাদের প্রতি যেন তোমাদের মনে দয়ার উদ্রেক না হয়, যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি ও পরকালের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাক। মুসলমানদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে।
এসব শাস্তি নিশ্চিত করবে রাষ্ট্র, কোন ব্যাক্তি বা সংস্থা নয়। ব্যভিচারের বিষয় টি নিশ্চিত করার পরেই কেবল শাস্তি। আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকট ফরিয়াদ তিনি যেন আমাদের সহিহ বুঝদান করেন।
ওআই/আব্দুল্লাহ আফফান