বেলায়েত হুসাইন: ছাত্রকে বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবন উৎসর্গ করে অনন্য এক নজির স্থাপন করেছেন হাফেজ চাশিতাক নামের তুরস্কের একজন মাদরাসার শিক্ষক। তিনি তুরস্কের আনাতোলিয়ার চোরুম অঞ্চলে অবস্থিত একটি হিফজ বিভাগে শিক্ষকতা করতেন।
গত ৭ সেপ্টেম্বর সামচুন শহরে অনুষ্ঠিত একটি কোরআন প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার পরে এ ঘটনাটি ঘটে।
তুরস্কের প্রভাবশালী গণমাধ্যম তুর্কিপ্রেসের বিস্তারিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, প্রতিযোগিতা শেষ করে ছাত্রদের অনুরোধে তাদের নিয়ে নৌবিহারে যান ওই শিক্ষক। নৌকায় আরোহনের পরে ১২ বছর বয়সী মুহাররম আতিশ নামের তার এক ছাত্র পানিতে পড়ে যায়- এই পরিস্থিতিতে সাঁতার না জানলেও ছাত্রকে বাঁচাতে পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি।
পানিতে নেমেই তিনি নিজের পিঠে উঠিয়ে আতিশকে বাঁচাতে প্রাণপণ চেষ্টা করেন কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যে সাঁতার না জানা এই শিক্ষকই ডুবে যান পানিতে এবং প্রচন্ড ঢেউয়ের আঘাতে অজ্ঞান হয়ে যান।
ঘটনার পরপরই উদ্ধারকর্মীরা ছাত্র-শিক্ষক দুজনকেই হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিক্ষককে মৃত ঘোষণা করেন, অন্যদিকে সৌভাগ্যক্রমে সুস্থ হয়ে ওঠে ছাত্রটি।
শিক্ষকের এমন মৃত্যুতে মাদরাসায়, শিক্ষার্থীদের মধ্যে; বিশেষ করে মুহাররম আতিশের পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মুহাররম আতিশ বলেন, শিক্ষকের মৃত্যু তাদের থেকে প্রতিযোগিতায় সফলতার আনন্দ কেড়ে নিয়েছে, তারা সবাই খুবই মর্মাহত হয়েছে। সে জানিয়েছে, ওস্তাদের আত্মত্যাগে সে আজ বেঁচে আছে। সে তার ওস্তাদকে আজীবন শ্রদ্ধাভরে স্বরণ করবে।
হাফেজ মুহাম্মাদ চাশিতাক ১৫ বছর চোরুমের একটি মসজিদে ইমামতি করছেন। গত বছর সুলতান মুহাম্মাদ আল ফাতিহ মসজিদে খেদমত শুরু করেন। এর পাশাপাশি পাশেই অবস্থিত একটি হিফজ প্রশিক্ষণ প্রকল্পে শিক্ষকতা করতেন। স্থানীয়রা জানান, আমল-আখলাকে তিনি ছিলেন অত্যন্ত ভাল একজন মানুষ।
স্ত্রী, তিন সন্তান ও অসংখ্য গুণাগ্রাহী রেখে গেছেন হাফেজ চাশিতাক। সুলতান মুহাম্মাদ আল ফাতিহ মসজিদের চত্বরে জানাজা শেষে স্থানীয় একটি কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।
-এএ