সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত উপাদানসমূহের আলোকে প্রস্তুতকৃত "ব্লাক সীড মিক্সড" রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও ভাইরাস প্রতিরোধে অতুলনীয়

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

শাইখুল হাদিস হাফেজ মাওলানা হাকিম মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ।।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা গাছ-পালা, লতা-পাতা, ফল-মূল, দানা, বীজ ইত্যাদি ভেষজ সহ বিভিন্ন প্রাণীজ ও খনিজ দ্রব্যকে ঔষধী গুণ দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। হাজার হাজার বছর ধরে শুধু মানুষ নয় অন্যান্য প্রাণীরাও এগুলাে দিয়ে আরােগ্য লাভ করে আসছে।

আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানেও গবেষকগণ এগুলাের উপর গবেষণা করেই বিভিন্ন ঔষধ তৈরি করে আসছেন। সেগুলাে থেকে আমি এখানে ১। মধু, ২। যাইতুন, ৩। কালােজিরা ও ৪। সিনা মাক্কি নিয়ে আলােচনা করবাে ইনশাআল্লাহ।

১। মধু: আরবি ভাষায় মধু পােকাকে নাহল বলে। পবিত্র কুরআনুল কারীমে এই নামে একটি সূরা বিদ্যমান রয়েছে। সেই সূরার ৬৮-৬৯ নং আয়াতে মধু সম্পর্কে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা ইরশাদ করেন (তরজমা) আপনার প্রতিপালক মৌমাছিকে আদেশ দিলেনঃ পাহাড়ে, বৃক্ষে ও উঁচু চালে গৃহ নির্মাণ কর ।

এরপর সর্ব প্রকার ফল থেকে ভক্ষণ কর এবং আপন পালনকর্তার উম্মুক্ত পথসমূহে চলমান হও। তার (মৌমাছির পেট থেকে বিভিন্ন ধরনের পানীয় নির্গত হয়। তাতে (মধুতে) মানুষের জন্য রয়েছে রােগের প্রতিকার। (অর্থাৎ মধু আরােগ্যকারী) নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য নিদর্শন রয়েছে।

অন্যদিকে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযি. বর্ণনা করেন, নকি কারিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করেন, (তরজমা) মধু ও কুরআনের মাধ্যমে তােমাদের চিকিৎসা নেওয়া উচিত। (সূনানে ইবনে মাজাহ, হাকেম, মিশকাত)।

সুতরাং মধু তিব্বে ইলাহী ও তিব্বে নববী অর্থাৎ, আল্লাহর চিকিৎসা বিধান ও নবি কারিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর চিকিৎসা বিধান উভয়টির অন্তর্ভুক্ত। ২। যাইতুনঃ পবিত্র কুরআনুল কারীমের সূরা আন'আমের ৯৯ ও ১৪১ নং আয়াতে, সূরা নাহল, সূরা নূর ও সূরা তীন এ যাইতুন এর কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

অন্যদিকে তিরমিযী শরীফ ও মুসতাদরাকে হাকেম এ সুপ্রসিদ্ধ সাহাবি হযরত যায়েদ ইবনে আরকাম (রাযি.) বলেন: নবি কারিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদেরকে কুসতে বাহরী এবং যাইতুন তেল দ্বারা নিউমােনিয়া রােগের চিকিৎসা করার নির্দেশ দিয়েছেন।

তাছাড়া ইউনানী মেটেরিয়া মেডিকায় বলা হয়েছে হাঁপানি ও ফুসফুসের রােগে যাইতুন তেল ব্যবহার হয়। ৩। কালােজিরাঃ কালােজিরা সম্পর্কে নবী কারীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর বানী অবিস্মরণীয়। তিনি বলেন, তােমরা এই কালােজিরা ব্যবহার করবে। কেননা এতে এক মাত্র মৃত্যু রােগ ব্যতীত সর্বরােগের শেফা (আরােগ্য) রয়েছে। (বুখারী ও মুসলিম) ইউনানী মতের অভিজ্ঞ চিকিৎসকগণ ও অন্যান্য গবেষকগণ নবি কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পবিত্র বাণীর সত্যতার সাক্ষ্য এভাবে দিয়েছেন যে, কালােজিরায় প্রচুর পরিমাণ পুষ্টি গুণ রয়েছে।

এটি রােগ প্রতিরােধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং জীবাণু প্রতিরােধে খুবই কার্যকর। তাছাড়া এটি ঠান্ডা-সর্দি, এলার্জি, কাশি-জ্বর, এ্যাজমা, ইনফ্লুয়েঞ্জা, নিউমােনিয়া, বুকের ব্যথা, পুরাতন জ্বর, ডায়াবেটিস, স্নায়ুবিক দুর্বলতা সহ অন্যান্য জটিল রােগ চিকিৎসায় অত্যন্ত কার্যকরী।

৪। সিনায়ে মাক্কী: নবী কারীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করেন, তােমরা অবশ্যই সিনা ব্যবহার করবে, কেননা এটা মৃত্যু ব্যতীত সকল রােগের শেফা দানকারী মহৌষধ। (তিরমীজি শরীফ) অন্যদিকে মুফরাদাত গ্রন্থে রয়েছে যে, সিনা সর্বরােগের প্রতিষেধক। এটি মস্তিষ্ক পরিষ্কার করে, নিউমােনিয়া, ও পালাজ্বরেও ব্যবহৃত হয়। কুরআন ও হাদীসে উল্লেখিত চারটি উপাদান ও অন্যান্য প্রয়ােজনীয় উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।

কালােজিরা মিক্সড, Black Seed Mixed। যেটি রােগ প্রতিরােধ ক্ষমতা বাড়াতে খুবই কার্যকরী। বর্তমানে করােনাভাইরাসের আক্রমণে সারা বিশ্ব বিপর্যস্ত। বাংলাদেশও এর বাহিরে নয়। প্রতিদিনই বিপুল সংখ্যক লােক আক্রান্ত হচ্ছেন এবং মৃত্যুর সংখ্যাও কম নয়।

এমতাবস্থায় ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে রােগ প্রতিরােধ ক্ষমতা বাড়ানাের কোনাে বিকল্প নেই। তাই আমরা যারা কুরআন ও হাদীসে বিশ্বাস করি তারা রােগ প্রতিরােধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য এই মিশ্রণটি গ্রহণ করতে পারি। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা আমাদের রক্ষা করবেন ও শেফা দান করবেন ইনশাআল্লাহ।

সেবনবিধি: সকালে ও রাতে আহারের পর দুই চা-চামচ (১০ গ্রাম) চিবিয়ে খেয়ে হালকা গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে পান করতে হবে। প্রয়ােজনে দৈনিক ৩ বারও সেবন করা যেতে পারে ১৪ - ২১ দিন।

আর করােনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকলে আধা লিটার পানিতে ৫/৬টি লবঙ্গ ও আধা চামচ কালােজিরা মিশিয়ে জ্বাল দিয়ে একটি পাত্রে নিয়ে দিনে ২/৩ বার নাক দিয়ে ৪/৫ মিনিট বাষ্প নিতে হবে।

সাবধানতা: কোনাে মুমূর্ষ রােগীকে অথবা হাসপাতালে চিকিৎসাধিন কোনাে রােগীকে এটি সেবন করানাে যাবে না। দশ বছরের নিচের শিশুকে ও গর্ভবতী মহিলাদেরও সেবন করানাে যাবে না।

লেখক: পরিচালক। তিব্বে নববি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রিসার্চ সেন্টার, নবি কারিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর চিকিৎসা বিষয়ক হাদিস সমূহের গবেষণাকেন্দ্র। ফার্মগেট, ঢাকা। মােবাইল: ০১৬১১৪১৪১১৫।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ