অনুবাদ: মাওলানা ইউসূফ নূর।
মহাকবি আল্লামা ইকবালের কাব্যচর্চার সিংহভাগ জুড়ে রয়েছে রাসূল প্রশস্তি। নবীপ্রেমিক ইকবালের রাসূল বিষয়ক কবিতাগুলো পাঠ করলে হৃদয়ে জাগে ঈমানী শিহরণ আর রাসুলপ্রেমের পরশ।
বক্ষমান ফারসি কবিতায় তিনি হৃদয়গ্রাহী শব্দমালায় এঁকেছেন রাসূলুল্লাহ সা.-এর অবদান ও সফলতার খণ্ডচিত্র।
গতকাল (২১ এপ্রিল) ছিল মহাকবির মৃত্যুদিবস। তার ঈসালে সওয়াবের নিয়তে সে অমর কবিতাটি বাংলা অনুবাদসহ পেশ করছি। আল্লাহ তার কবরকে জান্নাতের কানন বানিয়ে দিন!
از دم سیراب آں امی لقب - لالہ
رست از ریگ صحرا ئے عرب
حریت پروردہ آغوش اوست ۔ یعنی امروز امم از دوش اوست
او دلے در پیکر آدم نہاد۔۔۔۔او نقاب از طلعت آدم کشاد
ہر خداوندان کہن را او شکست ۔۔ ہر کہن شاخاز نم او غنچہ بست
گرمی ہنگامہ بدر و حنین ۔ حیدر وصدیق و فاروق و حسین
سطوت بانگ صلاة اندر نبرد ۔۔ قرأت الصافات اندر نبرد
تیغ ایوبی نگاہ با یزید ۔۔ گنجہائے ہر دو عالم را کلید
عقل و دل را مستی از یک جام مے۔۔ اختلاط ذکر و فکر روم و رے
علم و حکمت شرع و دیں نظم امور۔۔ اندرون سینہ دل ہا نا صبور
حسن عالم سوز الحمرا وتاج ۔۔ آنکہ از قدوسیاں گیرد خراج
ایں ہمہ یک لحظہ از اوقات اوست ۔۔ یک تجلی از تجلیات اوست
ظاہرش ایں جلوہ ہائے دلفروز۔۔ باطنش از عارفاں پنہاں ہنوز
অনুবাদ: সে ‘উম্মী’ উপাধীপ্রাপ্ত নবীর সজীব শ্বাসের ছোঁয়ায় মরু আরবের তপ্ত বালুকণায় সৃষ্টি হয় গোলাপ ও লালা ফুলের অপরুপ কানন।
তারই পবিত্র ক্রোড়ে লালিত হয় আযাদীর চিন্তাচেতনা। বলতে গেলে আজকের পৃথিবীর সকল উন্নতি অগ্রগতির পেছনে রয়েছে তাঁর মহান অতীতের অবদান। মানব জাতির মৃতবৎ দেহে সৃষ্টি করলেন তিনি প্রাণস্পন্দন, উন্মোচন করলেন তার প্রকৃতিগত নৈপুণ্য।
তার হাতে সকল বানোয়াট খোদার পতন ঘটে। তাঁর বদান্যতায় শুকিয়ে যাওয়া বৃক্ষশাখা সুশোভিত হয় পত্র-পল্লব ও ফল-ফুলের সমারোহে।
যুদ্ধের ডামাডোলের মাখে উচ্চকিত আযানের সুমধুর তান ও মরমী প্রভাব এবং সুরা ‘আস সাফ্ফাত’ তিলাওয়াতের অপাথিব আনন্দ ও তাঁরই অবদান। সালাউদ্দীন আইউবীর তলোয়ার ও বায়েজীদ বোস্তামীর অন্তদৃষ্টির মধ্যে ছিল দোজাহানের রত্নভান্ডারের চাবিকাঠি।
কাওসার সুরাবাহীর দেয়া এক পাত্র পানে জ্ঞান ও হৃদয় জগত হয়ে যায় আত্মহারা –বিহবল। তার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে একাকার হয়ে যায় রুমির দিব্য স্মরণ ও রাযীর ধ্যান চিন্তন। জ্ঞান ও বিজ্ঞতা, ধর্ম ও শরীয়ত, সাম্রাজ্যের শৃংখলা ও দুনিয়া বিস্তৃত আধ্যাত্মিক অনুসন্ধিৎসা এবং বক্ষ মাঝারে অবস্থিত হৃদয়ের ব্যাকুলতা।
আল হামরা প্রাসাদ ও তাজমহলের ভূবন মাতানো হৃদয়স্পর্শী সৌন্দয, আকাশের ফেরেশতারাও যার প্রতি নিবেদন করে থাকে শ্রদ্ধার্ঘ্য। এসব কীর্তি ও অবদান সে মহামানবের অমূল্য সময়কালের এক সংক্ষিপ্ত মুহূর্ত এবং তার অসংখ্য মাহাত্ম্যের এক দ্যুতি ও ঝলকমাত্র।
এসব হৃদয়কাড়া সৌন্দয্যেরی মাধ্যমে বিকাশ ঘটেছে তার ব্যক্তিত্বের বাহ্যিক রূপের। কিন্ত তার অভ্যন্তরীণ স্বরূপ এখনো সুগভীর তত্ত্বজ্ঞানী সাধকদের দৃষ্টির আড়ালেই রয়ে গেছে।
ইমাম কাতার ধর্ম-মন্ত্রনালয় ও নির্বাহী পরিচালক, আল-নূর কালচারাল সেন্টার, কাতার।
ওআই/আবদুল্লাহ তামিম