তৈয়ব উল্লাহ নাসিম।।
১.
ভোরে মুয়াজ্জিন সূর ছড়াতো, হাইয়া আলাস সালাহ বলে,
নিদ্রা ভেঙ্গে, সব মুমিনেরা, মসজিদমুখী দলে দলে।
আলো ফুটতেই শুরু হয়ে যেতো কৃষকের হাঁকডাক,
গৃহস্ত পেয়ে রোজকার কামলা খুশিতে হয় বাকবাক।
কাকডাকা ভোরে টঙগুলো চায়ের জমে উঠতো গ্রামে আড্ডায়,
সাতমুখীগল্পে চলতো একটানা, শেষ হতো কারো সাতটায়।
ধূমায়িত কাপের টুংটাং শব্দে জানান দিতো দোকানী ব্যস্ত,
হুটহাট চামচ ডানে-বাঁয়ে নেড়ে খদ্দেরকে করে ন্যস্ত।
খুব ভোরে হেলপারও যাত্রীর চেঁচামেচিতে ফুটপাতেও গমগম,
ভারী যানবাহন আর রেলের গর্জনে চারপাশে দমদম।
কেউ চাকুরীতে কেউ ব্যবসায় কেউ পাঠশালায় ছুটে,
খুশি খুশি বিকেলে ঘরমুখী হয় কেউ ফিরে স্বপ্নটুটে।
২.
আজ আমাদের চোখের সামনে অচেনা পৃথিবীর মুখ,
তোমরা নামাজ ঘরে পড়ে নাও শুনে, সবার মনে দুখ।
কিষাণ-কিষাণী, কামলা-মজুরের ভোর হয় মলিন মুখে,
অভাবের ঘরে শিশুরা কাঁদে আহার না পেয়ে দুঃখে।
লকডাউন এর যাঁতাকলে পড়ে খুলে না চায়ের টঙ,
হাসির বদলে দোকানীর মুখে ছেয়ে আছে মলিন রং।
রাজপথ খালি ফুটপাত ফাঁকা, নেই কোন সমাগম,
যমদূত বলে ডাকা, ট্রাকের সংখ্যাও করোনাকালে কম।
ছোট-বড় সবার লকডাউনে বন্দিজীবন বাস,
শুয়ে বসে ঘরে কাটে না সময়, সবার নাভিশ্বাস।
দেশে দেশে আজ মৃত্যুপুরী মৃত সব শহর নগর,
এ যেন এক অন্য পৃথিবী, অচেনা পৃথিবীর খবর!
-এটি