সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


ভাইরাস নিয়ে বাসায় ঢুকছেন না তো, মনে রাখুন ১০ পরামর্শ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: এই সময়ে বাড়ির বাইরে যাওয়া অপরাধ বলে গণ্য হচ্ছে। তারপরও যদি জরুরি প্রয়োজনে যেতেই হয়, অবলম্বন করতে হবে কঠোর সতর্কতা যাতে বাইরে থেকে ভাইরাস নিয়ে আপনি বাড়িতে ঢুকে না পড়েন। এ রকম কিছু হয়ে গেলে এতোদিন ধরে বাড়িতে বন্দি থাকার সব কষ্টই পণ্ডশ্রমে পরিণত হবে। ১০টি নিয়ম মেনে চললে বাড়িতে ভাইরাস ঢুকে পড়ার আশঙ্কা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

১. একান্ত প্রয়োজনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে বাইরে যান

খাবার কেনার জন্য, ওষুধ কেনার জন্য বা এ ধরনের একান্ত প্রয়োজনে বাইরে যেতে হলে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করে বাইরে যান। নিরাপত্তা বলতে সঠিক পদ্ধতিতে সঠিক মাস্ক পরুন, গ্লাভস পরুন। চোখ-মুখ নিরাপদ থাকে এমন ব্যবস্থা নিন। এই সব ক্ষেত্রে পিপিই’র মতো পেশাদার চিকিৎসকদের উপকরণ প্রয়োজন নেই। কিন্তু যথেষ্ট নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।

২. সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন

বাইরে গিয়ে লোকজনের সাথে আড্ডাবাজিতে মোটেও বসবেন না। আপাতত বাংলাদেশে বাসার বাইরে যে কোনো ধরনের আড্ডাবাজি অপরাধ বলে গণ্য হচ্ছে। কারণ সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে চলাফেরা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আড্ডাবাজিতে এ ধরনের নির্দেশনা মেনে চলা সম্ভব নয়। দোকানে লাইনে দাঁড়ালে সামনে ও পেছনের লোকের সাথে দূরত্ব রেখে দাঁড়ান। অন্যদেরও একই পরামর্শ দিন।

সুপারশপে বাজার করতে গেলে যে ট্রলি ব্যবহার করা হয়, আপাতত পরিহার করুন। প্রয়োজনে নিজস্ব প্লাস্টিকের ট্রলি ব্যবহার করুন। এই ধরনের ট্রলি ব্যবহার নিশ্চিত করতে না পারলে নিজস্ব বাজারের ব্যাগ ব্যবহার করুন। যা একবার ব্যবহার করে ফেলে দেওয়া সম্ভব।

৪. বাইরে থাকা অবস্থায় মুখমণ্ডলে হাত স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন

বিশেষজ্ঞরা বলছেন করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার প্রধান মাধ্যম হলো হাত। হাত দিয়ে আমরা যখন, নাক, চোখ স্পর্শ করি, হাতে জীবাণু থাকলে তখনই তা আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। সুতরাং বাইরে থাকা অবস্থায় নাকে-মুখে হাত দেওয়া মারাত্মক বিপজ্জনক। নাক-মুখ-চোখ স্পর্শ করা বাদ দিন। চুলকালে জীবাণুমুক্ত টিস্যু ব্যবহার করুন।

৫. ফোন, ব্যাগ যেখানে সেখানে রাখা বাদ দিন

বাজার করতে করতে হাতের ব্যাগটা ভারী হয়ে গেলে আমরা যেখানে সেখানে রেখে দেই। কিন্তু এই পদক্ষেপটি অত্যন্ত বাজে পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। এ ছাড়া হাতের ফোনটাও যখন তখন যেখানে সেখানে রাখার অভ্যাস আছে অনেকের। এই ধরনের অভ্যাস ত্যাগ করা অত্যন্ত জরুরি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শক্ত ও সমতল ভূমির উপর অন্তত ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের জীবাণু টিকে থাকতে পারে। আমরা যেহেতু জানি না ভাইরাস কোথায় কোথায় আছে, সুতরাং নিরাপত্তার জন্য সতর্কতা অবলম্বনের বিকল্প নেই।

৬. বাসায় ফিরেই সব কিছু জীবাণুমুক্ত করে নিন

বাজারের ব্যাগ, জুতা, জামা-কাপড় যে কোনো কিছুতে ভাইরাসের জীবাণু লেগে থাকতে পারে এবং সেখান থেকে শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। সুতরাং ভুলেও বাইরে পরা জুতা নিয়ে বাসায় ঢুকবেন না। জুতা বাসার বাইরে রাখুন এবং অবশ্যই জুতায় জীবাণুনাশক স্প্রে করুন। বাজারের ব্যাগেও জীবাণুনাশক স্প্রে করে দিন। বাসায় প্রবেশ করা মাত্র গ্লাভস ফেলে দিন, হাত ধুয়ে ফেলুন এবং জামা-কাপড় গরম পানিতে ধুয়ে ফেলুন।

৭. দরজার হাতল, বেসিনের কল নিজে ধরা থেকে বিরত থাকুন

বাজার থেকে বাসায় এসে দরজার হাতলে সরাসরি হাত রাখা থেকে বিরত থাকুন। দরজা খুলতে হলে কনুই, হাতের পিঠের দিকট ব্যাবহার করুন। প্রয়োজনে বাসার ভেতরে থাকা লোকের সহায়তা নিন। বেসিনে হাত ধোয়ার সময়ও সম্ভব হলে কনুই ব্যবহার করুন। কল ছাড়ার জন্য কনুইয়ের ব্যবহার ঝুঁকি কমিয়ে দিবে। আর যদি কলটি ঘুরিয়ে খুলতে হয়, তাহলে সেটাই করুন। কিন্তু হাত ধোয়ার সময় কলটাও ধুয়ে ফেলার কথা ভুলেও ভুলবেন না।

৮. সঙ্গে করে অন্য কাউকে নিয়ে আসার কথা ভুলে যান

রাস্তা- ঘাটে বা বাসার নিচে বন্ধুদের সাথে দেখা হলেই আমরা তাদেরকে বাসায় নিয়ে আসি। স্বাভাবিক বাংলাদেশি সংস্কৃতিতে চেনা পরিচিতদের বাসায় দাওয়াত দেওয়ার অনুশীলন খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু এখন যেহেতু সময়টাই স্বাভাবিক নয়, সেহেতু স্বাভাবিকতার চর্চা করারও সুযোগ নেই।

৯. সম্ভব হলে দ্রুত গরম পানিতে গোসল করে নিন

কুসুম গরম পানি জীবাণু ধ্বংস করে দেয়। এ ছাড়া সাবানের ব্যবহার তো আছেই। বাইরে থেকে এসে সব সতর্কতা গ্রহণের পাশাপাশি গোসলটাও করে ফেলুন এবং ব্যবহার করুন কুসুম গরমপানি। মাথায় শ্যাপ্মু করুন। শরীরের কোনো অংশে জীবাণু লেগে থাকলে গোসল করার মাধ্যমে তা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

১০. একজনের বেশি বাইরে যাবেন না

জরুরি কাজের জন্য একেকবার একেকজন বাইরে যাবেন না। বাসা থেকে একজনের বেশি লোক বাইরে যাওয়া মানেই ভাইরাস নিয়ে বাসায় ঢোকার শঙ্কা বেরে যাওয়া। একবার বাসায় ভাইরাস ঢুকে গেলে, তাতে আক্রান্ত হতে পারেন বাড়ির সকলেই। সুতরাং নিজের ভুলের কারণে যাতে পরিবারের সবাই ঝুঁকিতে না পড়ে, সে দিকে খেয়াল রাখাটা অবশ্য কর্তব্য।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ