আওয়ার ইসলাম: মরু প্যাসেঞ্জারে শিল্পের আলোয় জীবনচিত্র আঁকা মন্তব্য করে বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক, স্বপ্নচারী লেখক, অনুবাদক ও ইসলামি চিন্তাবিদ মাওলানা মুহাম্মদ যাইনুল আবেদীন বলছেন, সাহিত্য সমাজের আয়না, সমাজের দর্পন। মরু প্যাসেঞ্জারে গল্পভাষ্যে ছড়াকার ও কথাসাহিত্যিক মাসউদুল কাদির সমাজ, জাতি ও জীবনের প্রতিচ্ছবি এঁকেছেন।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) রাজধানীর হাজীপাড়ায় সৃজনশীল লেখালেখির সংগঠন শীলন বাংলাদেশ আয়োজিত মরু প্যাসেঞ্জারের পাঠ উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
যাইনুল আবেদীন বলেন, মাসউদুল কাদির আমার অত্যন্ত প্রিয়ভাজন। আর তার এই বইয়ের মরু প্যাসেঞ্জার গল্পটাসহ আরো কিছু গল্প পড়েছি। আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। গল্পের ভাষা অত্যন্ত ঝরঝরে। আমার কাছে মনে হয়, একজন লেখকের নতুন বই সার্থক হয় তখন, যখন বইটা তার আগেই বইয়ের তুলনায় সাহিত্য মানে আরো ভালো হয়, সুন্দর হয়। মাসউদুল কাদির এক্ষেত্রে প্রশংসার যোগ্য। এই বইয়ে তার বাক্যচয়ন, গল্পের ভাব প্রকাশের ক্ষমতা আগের থেকে অনেক স্মার্ট পেয়েছি। তার লেখার ভাষায় আমি কোন জড়তা পাইনি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মরু প্যাসেঞ্জারের ‘চিঠি’ গল্পটা পাঠ করেন কবি আদিল মাহমুদ। পঠিত গল্পের ওপর আলোচনা করে যাইনুল আবেদীন বলেন, চিঠি গল্পে কয়েকটি অসাধারণ মেসেজ দিয়েছেন মাসউদুল কাদির। যেমন, কোন মানুষকে এখনো ছোট করা দেখা যাবে না। মানুষ সাবাই সমান। সবাই আল্লাহর বান্দা। ইত্যাদি মেসেজ আছে এই গল্পে। আমার মনে হচ্ছে মরু প্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে সহজেই মানুষ মন জয় করতে পারবেন মাসউদুল কাদির।
ইসলামী লেখক ফোরামের সভাপতি ও ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর বার্তা সম্পাদক জহির উদ্দিন বাবর বলেন, সমাজের সত্য কিছু দৃশ্যপট নিয়েই বন্ধুবর মাসউদুল কাদির লিখেছেন মরু প্যাসেঞ্জার। আমাদের কওমি অঙ্গনের অনেকেই এখন লেখালেখি করছেন, বই বের করছেন ঠিকই। কিন্তু তাদের লেখায় তেমন সৃজনশীলতা পাওয়া যায় না। মৌলিকত্ব খুব কম। কিন্তু মাসউদুল কাদির এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। তিনি একজন সৃষ্টিশীল লেখক। আমি তার মরু প্যাসেঞ্জারের গল্প পড়েছি এবং মুগ্ধ হয়েছি। তিনি খুব সুন্দর লিখেছেন এবং সময়ের ভাষায় লিখেছেন। সকল শ্রেণীর পাঠকই মরু প্যাসেঞ্জার পড়ে আনন্দ পাবে।
অনুষ্ঠানে আদিল মাহমুদ পঠিত গল্প ‘চিঠি’-এর ওপর আলোচনা করে দিলিরোড মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা আবু বকর সাদী বলেন, মরু প্যাসেঞ্জার বইয়ের প্রচ্ছদে মাসউদুল কাদির দাবি করেছেন এই বইয়ে জীবন রাঙনোর মতো ৩১টি গল্প আছে। আমি তার এই দাবি মিল পেয়েছি আজকের এই পঠিত গল্পে। তিনি অসাধারণভাবে গল্পের ঢঙে জীবন রাঙানোর মত কিছু ম্যাসেজ দিয়েছেন তার ‘চিঠি’ গল্পে। আমি বইটির বহুল প্রচার কামনা করছি। তিনি আগামিতে এরচেয়ে আরও ভালো বই উপহার দেবেন। এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
মরু প্যাসেঞ্জারে পাঠ উন্মোচন অনুষ্ঠানে আরও আলোচনা করেন, কবি শামস আরেফিন, প্রতিদিনের সংবাদের সাহিত্য সম্পাদক মীর হেলাল, কথাসাহিত্যিক কাজী সিকান্দার, জাতীয় শিশু কিশোর সংগঠন কলরবের সহকারী পরিচালক সাঈদুজ্জামান নূর প্রমুখ।
অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে মরু প্যাসেঞ্জারের লেখক মাসউদুল কাদির বলেন, মরু প্যাসেঞ্জার পাঠকের রঙিন চশমায় কেমন লাগবে সেটা আমি বলতে পারবো না। তবে আমি আমার সর্বস্বটুকু দেয়ার চেষ্টা করেছি। এই বইয়ের অধিকাংশ গল্পই সত্য ঘটনা অবলম্বনে লেখা হয়েছে। আশা করছি, মরু প্যাসেঞ্জার পাঠকের মন জয় করবে, হৃদয়ে জায়গা করে নেবে। ধন্যবাদ সবাইকে।
আরএম/