আওয়ার ইসলাম: রহস্যময় প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনা। চীনের উহান শহরের পশু খামার থেকে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে অন্তত ৫৪০ জন। এখন পর্যন্ত মারা গেছে ১৭ জন। চীন ছাড়াও দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এ ভাইরাস নিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো উদ্বিগ্ন বাংলাদেশও। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও সিলেটের এম এ জি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে চীনসহ ঝুঁকিপূর্ণ দেশ থেকে আগত বিমানযাত্রীদের পরীক্ষা করা হচ্ছে এবং তাদের গভীরভাবে পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। শাহ আমানত ও ওসমানী বিমানবন্দর থেকে চীনের সরাসরি ফ্লাইট না থাকলেও মধ্যপ্রাচ্য, দুবাই, ভারত হয়ে কানেকটিং ফ্লাইটে চীন থেকে অনেকে আসেন। তাই সেখানেও যাত্রীদের পরীক্ষা করা হচ্ছে।
এদিকে বাংলাদেশের যেসকল নাগরিক চীন ভ্রমণ করছেন তাদের বিশেষ সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগী পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন রোগ তত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পক্ষ থেকে।
মহাখালির রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট বা আইইডিসিআর পরিচলক ডা. মির্জাদি সিবরিনা ফ্লোরা বলেন, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও শাহ আমানত বিমানবন্দরে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। এছাড়া অন্যান্য বন্দরেও চিঠি পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্যকর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। কারোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের সেবা দেয়ার জন্য আইইডিসিআর চারটি হটলাইন খুলেছে। যদি কারো মধ্যে এর লক্ষণ দেখা দেয় তারা যেন এসব হটলাইনে ফোন করে জানানোর জন্য। নম্বরগুলো হচ্ছে- ০১৯৩৭১১০০১১, ০১৯৩৭০০০০১১, ০১৯২৭৭১১৭৮৪, ০১৯২৭৭১১৭৮৫।
ডা. ফ্লোরা বলেন, কারও শরীরে এর কোন লক্ষণ দেখা গেলে তারা নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে দেখা হবে। এছাড়া বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন, এয়ারলাইন্সগুলো এবং এভিয়েশনে কাজ করা সবাইকে সচেতনও করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। বিমানবন্দরে যে এলইডি মনিটর রয়েছে, সেখানে রোগের লক্ষণগুলো জানানো হচ্ছে এবং কারও যদি এই লক্ষণগুলো থাকে তার হেলথ ডেস্কে যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে। আক্রান্ত রোগীদের কাছ থেকে ভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ করে তা গবেষণাগারে পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।
এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এর আগে সোয়াইন ফ্লু বা ইবোলার ক্ষেত্রে যে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক জরুরি সতর্কতা জারি করা হবে কি না তা নিয়ে গতকালই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সিদ্ধান্ত নেবে।
ড. এ এস এম আলমগীর বলেন, তবে বাংলাদেশে এখনো উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো কিছু ঘটেনি, আতঙ্কিত হওয়ারও কোনো প্রয়োজন নেই।
বাংলাদেশে এখনো ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব না হলেও আমাদের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। প্রাদুর্ভাব হলে বাইরে বের হলে মাস্ক (মুখোশ) ব্যবহার করতে হবে। ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে এবং নাকে ও মুখে হাত দিয়ে ঘষা যাবে না। প্রাদুর্ভাব হলে বাইরে বের না হওয়াই ভালো হবে। তখন অসুস্থ হলেও মাস্ক পরা উচিত।
আরএম/