মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
চিন্ময়কে মুক্তি না দিলে বাংলাদেশ সীমান্ত অবরোধের হুমকি বিজেপির পিটিআইয়ের সমাবেশ ঠেকাতে পাকিস্তানে নামানো হলো সেনাবাহিনী ‘জাতীয় ছাত্র সংহতি সপ্তাহ’ ঘোষণা করল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সৌদির সেবা কোম্পানির সঙ্গে হজ এজেন্সির চুক্তির নির্দেশনা মহেশখালী থানার বিশেষ অভিযানে পরোয়ানাভুক্ত ১১ জন আসামি গ্রেফতার বৃষ্টির সময় কাবা প্রাঙ্গণে নামাজ আদায় ওমরা পালনকারীদের নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট গ্রাহকদের মূলধন ফেরত পাওয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন মাওলানা আতহার আলীকে বাদ দিয়ে জাতীয় ইতিহাস রচিত হতে পারে না: ধর্ম উপদেষ্টা জরুরি সভা ডাকল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কক্সবাজারে উৎসবমুখর পরিবেশে রোপা আমন ধান কাটা শুরু

তাবলিগ জামাত কী ও কেন?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

তানভীর সিরাজ ।।

পৃথিবী সৃষ্টির পর হযরত আদম আ.-কে যখন আল্লাহ পাক দুনিয়াতে নবুয়াতের দায়িত্ব দিয়ে প্রেরণ করেন তখন থেকেই চলে আসছে মূলত তাবলিগ জামাতের এই মেহনত। এটি বেশ বরকতময় মেহনত। বিশ্বনবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তেকালের পর থেকে এই কাজ সম্পাদনের দায়িত্ব তাঁর উম্মতের উপর। যেহেতু তাঁর পরে আর কোনো নবী-রাসুল দুনিয়া আসবেন না। তিনিই শেষ নবী বা রাসুল। তবে বিশ্বে সর্বপ্রথম তাবলিগ জামাতের আজকের এই রূপটি দান হজরত শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী রহ.- এর বংশধর মাওলানা ইলিয়াছ রহ.।

ড. আ ফ ম খালিদ হোসাইন বলেন, '১৯১০ সালে তিনি যখন ভারতে তাবলিগি কার্যক্রম শুরু করেন, তখন ঔপনিবেশিক রাজনৈতিক পরিপার্শ্বিকতায় ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষ ক্রমেই ধর্মবিমুখ হয়ে যাচ্ছিল।

বিশ্ববরেণ্য ইসলামী চিন্তাবিদ আল্লামা সায়্যিদ আবুল হাসান আলী নদভী রহ: এর উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘দাওয়াত ও তাবলিগ ইসলামের প্রাণশক্তি। এ চেতনাব্যঞ্জক কর্মতৎপরতা যদি মুসলিম সমাজে লোপ পায়, তাহলে মানুষ পশুত্বের পর্যায়ে নেমে যেতে বাধ্য হবে।’

মাসিক আলকাউসারের একটি সংখ্যায় এসেছে 'মুসলমানদের মাঝে ঈমানী চেতনা জাগ্রত করার এবং দীনমুখী জীবনের আগ্রহ পয়দা করার দাওয়াত নিয়ে প্রতিবছর আমাদের দেশে এই ইজতিমা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এদিক থেকে এটি একটি মোবারক ইজতিমা। এটি যেন তার লক্ষ্য-উদ্দেশ্যে সফল হতে পারে, ইজতিমার নানাবিধ মেহনতের দ্বারা যেন মুসলমানের মাঝে দীনের উপর চলার প্রেরণা জাগে, আল্লাহর ভয় ও আখিরাতে জবাবদিহিতার অনুভূতি সৃষ্টি হয়, পার্থিব পদ-পদবী, অর্থ-বিত্তের মোহ-জাল থেকে বেরিয়ে এসে আখিরাতমুখী জীবন-যাপনের গুরুত্ব বুঝে আসে এবং পার্থিব স্বার্থে পরস্পরের হক নষ্ট করার পরিবর্তে আখিরাতের স্বার্থে একে অপরের হক রক্ষার চেতনা জাগে- এর জন্য আল্লাহ তাআলার কাছে যেমন দুআ ও রোনাজারি প্রয়োজন তেমনি নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী মেহনত-মুজাহাদাও প্রয়োজন।'

তিনি কালিমা, নামাজ, ইলমে জিকির, ইকরামুল মুসলিমিন, তাসহি নিয়ত ইত্যাদি-এই ৬ কাজকে সামনে রেখে তাবলিগের এই মেহনত শুরু করেছিলেন। যার মাধ্যমে তিনি সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত বা অশিক্ষিত নারীপুরুষের দৈনন্দিন জীবনের আমলকে শুদ্ধ করার প্রতি যথেষ্ট সযত্ন হন এবং মেহনতকে এগিয়ে নিয়ে যান।

আল্লাহর রাস্তায় বের হওয়ার পর কেউ যদি নিজেকে ইজতেমায়ী (সম্মিলিত) ও ইনফিরাদী (ব্যক্তিগত) মোট ১৬টি আমলে পুরোপুরি ইহতিমামের সঙ্গে জুড়ে রাখে। তবে তার পুরো সময়টাই কাজে লাগবে এবং ফায়দাজনক হবে। কাজেই এখানে ইজতেমায়ী ও ইনফিরাদী মোট ১৬টি আমল তুলে ধরা হলো।

ইনফিরাদী আমল ৮টি- ১. প্রতিদিন কমপক্ষে এক পারা কুরআন তিলাওয়াত করা, ২. প্রতিদিন একটি হাদিস মুখস্ত করা এবং তার অর্থের মধ্যে চিন্তা-ফিকির করা, ৩. প্রতিদিন একটি করে মাসনূন দোআ মুখস্ত করা, ৪. তাহাজ্জুদ, ইশরাকসহ বেশি বেশি নফল নামাজ পড়ার চেষ্টা করা, ৫. প্রতিদিন খুব কাকুতি মিনতি করে আল্লাহর কাছে দীর্ঘ সময় দোয়া করা, ৬. সাথী ভাইদের খেদমত করা, ৭. সকাল-বিকাল তিন তাসবিহ আদায় করা, ৮. দৈনন্দিন ২৫ বার দাওয়াত দেয়া।

ইজতেমায়ী আমল ৮টি: ১. মাশওয়ারা বা পরামর্শ, ২. সফর, ৩. পাঁচ ওয়াক্তের ফরজ নামাজ, ৪. পানাহার, ৫. কিতাবের তালিম, ৬. ঘুম, ৭. উমুমি গাশত, ৮. মুজাকারা।

আলহামদুলিল্লাহ প্রায় ১১০ বছর আগের এই তাঁর ইখলাসের বরকতে সুন্দরভাবে চলে আসছে। আশাকরি আল্লাহ সুন্দর পরিবেশটি আবারও আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দিবেন।

লেখক :

আরএম/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ