বেলায়েহ হুসাইন ।।
ইসলামিক সহায়তা সংস্থা (ওআইসি) বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম আন্তর্জাতিক সংগঠন, এর অবস্থান জাতিসংঘের পরেই। বর্তমানে চারটি মহাদেশের অন্তত ৫৭ টি মুসলিম রাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করছে ওআইসি।
সমগ্র মুসলিম বিশ্বের শান্তি নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় গঠনমূলক ভূমিকা রাখতে চেষ্টা করে যাচ্ছে সংস্থাটি। তার মূল লক্ষ্য সবশ্রেণীর মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ রাখা।
এরই ফলশ্রুতিতে বৈশ্বিক অঙ্গনে অবিস্মরণীয় কিছু কৃতিত্ব স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে। ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক প্রতিষ্ঠাকে ওআইসির অন্যতম অর্জন হিসেবে গণ্য করা হয়।
এই প্রকল্প কমপক্ষে ৫৭ টি মুসলিম দেশে সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রচারের ক্ষেত্রে অবদান রাখছে। এসব দেশে উন্নত পানি সরবরাহ ও নারীস্বাস্থ্যের মতো যুগপযোগী কাজ করে সবার প্রশংসা কুড়িয়েছে সংস্থাটি।
এছাড়া, সদস্য রাষ্ট্র ছাড়াও বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে বসবাসরত মুসলিম শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য আধুনিক প্রযুক্তি নিশ্চিত করা ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে উপবৃত্তির ব্যবস্থা করার জন্য ওআইসি কাজ করে যাচ্ছে।
ওআইসির রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, গণমাধ্যম , সামাজিক, মানবিক ও জ্ঞানভিত্তিক অন্তত ৩৪ টি স্বতন্ত্র সংগঠন প্রতিষ্ঠাও ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে।
মুসলিম সমাজের ভাগ্য নির্ধারণে ওআইসি আয়োজিত বড় বড় ১০ টি সেমিনারও তার লক্ষ্য বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব সৃষ্টি করেছে, ২০০৫ সালে মক্কা মুকাররমায়, ২০১৬ সালে ইস্তাম্বুলে এবং আফগানিস্তান ইস্যুতে মক্কা মুকাররমায় অনুষ্ঠিত ২০১৮ সালের ওলামা সম্মেলন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা লাঘব করার জন্য মুসলিম বিশ্ব ও পশ্চিমাদের মধ্যে সহযোগিতা ও সমন্বয়ের লক্ষ্যে ইস্তাম্বুলে একটি ধারাবাহিক বৈঠক করার জন্যও প্রসংশিত হয়েছে সংস্থাটি।
ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে মানবিক অধিদফতর গঠন এবং ঘৃণা ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য ভয়েস অফ উইজডম সেন্টর প্রতিষ্ঠা করেছেন।
ইসলামের সঠিক চিত্র তুলে ধরার জন্য সামাজিক মাধ্যমগুলোতে একটি মধ্যপন্থী বক্তব্য প্রকাশসহ আরও কয়েকটি সাফল্য অর্জন রয়েছে।
এই সংস্থাটি জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তঃসরকারী সংস্থাগুলির সাথে মুসলমানদের প্রাণবন্ত স্বার্থ রক্ষার জন্য সম্পর্ক বজায় রেখেছে। কাজাখস্তানে এ জাতীয় বৈজ্ঞানিক শীর্ষ সম্মেলন, যা ২০১৬ সাল পর্যন্ত উদ্ভাবন এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য একটি বৈজ্ঞানিক কৌশল ঘোষণা করেছে।
সংগঠনটি ইসলাম ও মুসলমানদের প্রকৃত মূল্যবোধ রক্ষার জন্য এবং ভুল ধারণা পপ্রতিরোধ ও ভুল ধারণা সংশোধন করার জন্য অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে এবং এর সকল রূপে মুসলমানদের প্রতি বৈষম্য মোকাবেলায় সক্রিয়ভাবে ভূমিকা রেখেছে।
সংগঠনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির মধ্যে হল ইসলামিক শীর্ষ সম্মেলন, পররাষ্ট্র মন্ত্রিপরিষদ এবং জেনারেল সেক্রেটারিয়েট ছাড়াও আল-কুদস কমিটি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, অর্থনীতি ও বাণিজ্য এবং মিডিয়া ও সংস্কৃতি সম্পর্কিত তিনটি স্থায়ী কমিটি গঠন করেছে।
আরএম/