বাস্তবিকই তিনি ছিলেন কিংবদন্তি। বরং আরো বড় কেউ। বলছিলাম মাওলানা মুহিউদ্দীন খান রাহিমাহুল্লাহর কথা। বাংলাদেশের মানুষের কাছে অতি পরিচিত ও অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তি। বাংলার আকাশে এখনো জ্বলজ্বল করছে এই নামটি। সান্ধ্যতারার মতো।
একশ ষাট পৃষ্ঠার এই বইটি রচিত হয়েছে খান সাহেবকে নিয়ে। তরুণ লেখক আহমাদ সাব্বির গল্পের ঢঙে সরল বাক্যে লিখেছেন মাওলানার জীবনালেখ্য। ছোট এই কলেবরে এমন ব্যক্তিত্বকে উঠিয়ে আনা মোটেও সহজ কাজ নয়। স্বয়ং লেখকের ভাষ্যমতেই এই কাজটি "অসম্ভব।" তবুও কিংবদন্তির কথা বলছি একটি সম্পদ।
গল্পভাষ্য বলতে আসলে কী বোঝায়, তার রূপ দেখা গিয়েছে বইটিতে। বইটির সূচনাই আকর্ষণীয়। আপনাকে টেনে নিয়ে যাবে সামনে। থামতে মন চাইবে না। বিরক্তি আসবে না। শিশু থেকে কিশোর, কিশোর থেকে যুবক— ধীরে ধীরে বেড়ে উঠছেন তিনি।
আপনি যেন নিজের চোখেই দেখতে পাবেন মাওলানাকে। কতোটা কষ্ট সয়েছেন, কতটা তিরস্কার পেয়েছেন, তবু থেমে থাকেননি। উজ্জ্বল হয়ে রাঙিয়ে গিয়েছেন চারপাশ। শিহরিত হবেন, অজান্তেই হাসি আসবে মুখে। কখনো অশ্রুরা ভীড় করবে চোখের কোণায়!
বইটি কিনতে ক্লিক করুন
কী এক অলৌকিকতা বিরাজ করছে পাতায় পাতায়! মাওলানার নিরব ও সরব সংগ্রামগুলো আপনাকে নাড়িয়ে দেবে। দুঃখের উপাখ্যানগুলো কাঁপিয়ে তুলবে অন্তর! ভাষা আন্দোলন আর দেশ ভাগের সময়কার কঠিন সময়গুলো কীভাবে পার করেছেন তিনি, তার বর্ণনাগুলো ভাবনা জাগাবে হৃদয়ে।
রূপকথার মত না, তত্ত্বের মতোও না— সরল ও বিরক্তিহীন ভাষায় রচিত বইটি। শুরুতেই আনা হয়েছে মাওলানার শেষ দিনগুলি। শেষটা বলে তারপর শুরু করার ধাঁচটি চমৎকার লেগেছে। আহমাদ সাব্বিরের গদ্য আকর্ষণীয়। লেখায় যেভাবে দক্ষতার ছাপ রয়েছে, সেভাবে তারুণ্যের ছাপও রয়েছে। মুগ্ধ করবে পাঠককে।
দু একটা জায়গায় বর্ণনাভঙি বদলে গেছে। পেছনের গল্প আগে এনে সেগুলো ভবিষ্যৎকালের বাক্যে বর্ণনা করা হয়েছে। এই বিষয়টা ঠিক নিতে পারিনি। ভিন্ন ধাঁচে লেখা হয়েছে, তার ওপর বিশেষ কোন প্যারা থেকে এটা শুরু হয়নি। হঠাৎ প্যারার মাঝেই আবার ভঙি বদলে গিয়েছে। এই বিষয়টা বিবেচনায় রাখতে হবে।
এক নজরে—
বই : কিংবদন্তির কথা বলছি।
লেখক : আহমাদ সাব্বির।
প্রথম প্রকাশ : নভেম্বর, দুই হাজার ঊনিশ।
প্রচ্ছদ : হামীম কেফায়েত।
বানান : কায়েস শরীফ।
পৃষ্ঠাসংখ্যা : একশ ষাট।
মূল্য : একশ আশি টাকা।
প্রকাশনী : নাশাত পাবলিকেশন।
আরএম/