আওয়ার ইসলাম: কওমি মাদরাসা থেকে ফারেগীন শিক্ষার্থীরাও এখন থেকে দাওরায়ে হাদীসের পরীক্ষা দিয়ে সরকারি সনদ নিতে পারবে। এমনই একটি সিদ্ধান্তের কথা জানাল কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ অথরিটি ‘আল হাইআতুল উলয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’।
যে সকল শিক্ষার্থীরা হাইআতুল উলয়া প্রতিষ্ঠার পূর্বে দাওরায়ে হাদীস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল তারা আবার নতুন করে হাইআতুল উলয়ার অধীনে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে বলে নতুন একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি। ২০১৭ সালের পূর্বে ফারেগ হয়েছে-এমন যে কেউ আগামী পাঁচ বছর সুযোগটি গ্রহণ করতে পারবে।
সম্প্রতি ‘আল হাইয়াতুল উলয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’ কর্তৃক প্রকাশিত এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এছাড়াও সংস্থাটির সদস্য মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়াও আওয়ার ইসলামকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আল-হাইআতুল উলয়া বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পূর্বে আল-হাইআতুল উলয়া বাংলাদেশ-এর অধিভুক্ত ৬ (ছয়) বোর্ডের কোনটির অধীনে কিংবা উল্লেখযোগ্য কোন দাওরায়ে হাদীস মাদরাসা হতে নিয়মিত ছাত্র হিসেবে দাওরায়ে হাদীস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন এমন ব্যক্তিগণ ১৪৪১ হতে ১৪৪৫ হিজরী মোতাবেক ২০২০ হতে ২০২৪ ঈসাব্দের মধ্যে অর্থাৎ আগামী ৫ (পাঁচ) বছর অনিয়মিত পরীক্ষার্থী হিসেবে আল হাইআতুল উলয়ার অধীনে দাওরায়ে হাদীস পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাবেন।
‘এজন্য যে কোন দাওরায়ে হাদীস মাদরাসা হতে নিয়মতান্ত্রিকভাবে নিবন্ধন করতে হবে।’ উল্লেখ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
হাইআতুল উলয়ার সদস্য মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া এ বিষয়ে আওয়ার ইসলামকে জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের চাহিদার কারণে ২০১৭ সালের পূর্বে কওমি মাদরাসা থেকে ফারেগীন ছাত্রদের আগামী পাঁচ বছর পর্যন্ত দাওরায়ে হাদীস পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে ২০২৪ সালের পর আর এ সুযোগ থাকবে না।
এদিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকে সমালোচনার মুখে পড়েছে আল হাইয়াতুল উলয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ। সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা- সমালোচনা।
অনেকের বক্তব্য- ‘আল-হাইআতুল উলয়ার এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে কওমি মাদরাসার শিক্ষা ব্যবস্থাকে শুধুমাত্র সনদ বা সার্টিফিকেট নির্ভর হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’ আবার কেউ কেউ বলছেন, ‘সরকারিভাবে সনদ পাওয়ার সুযোগ সবাইকে দেওয়া উচিৎ। ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের দিকে লক্ষ্য রেখে হাইয়াতুল উলইয়ার এ উদ্যোগকে স্বাগত জানানো উচিৎ।’
হঠাৎ করে হাইআতুল উলয়া এমন একটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণ কী- এমন প্রশ্নে মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া বলেন, সরকারিভাবে কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদীসের সনদের মান মাস্টার্স সমমান করার পর কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন পর্যায়ের কাজে মাদরাসা ছাত্ররা অংশ নিতে পারছে। এ সুযোগটা হাইআতুল উলয়া প্রতিষ্ঠার পর নতুন শিক্ষার্থী পাচ্ছেন কিন্তু ২০১৭ সালের পূর্বে যে সকল শিক্ষার্থীরা ফারেগ হয়েছেন তারা পাচ্ছেন না। এ কারণে হাইআতুল উলয়া তাদের নতুন করে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। তবে সকলকেই পরীক্ষা দিতে হবে বিষয়টি এমন নয়।
আরএম/