সুফিয়ান ফারাবী
বিশেষ প্রতিবেদক
পবিত্র হজ। মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনে বান্দার বিশেষ ইবাদত। রাব্বুল আলামিনের নৈকট্য লাভের অন্যতম উপায়। মানুষ কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে বাইতুল্লাহর জিয়ারতে যান। দেশ ছেড়ে পাড়ি দেন ৬ হাজার মাইল দূরে, মরুভূমির দেশ সৌদিতে। এ ক্ষেত্রে হজ ট্রাভেলস এজিন্সর সহয়তা নিতে হয় হাজিদের। আর হজ এজেন্সিতে রয়েছে নানা দূর্নীতি। এ কারণে প্রতিবছরই অনেক হাজিদের বিপাকে পড়তে হয়।
এর প্রধান কারণ হলো, হজ ট্রাভেলস এজেন্সি যারা পরিচালনা করেন, তাদের কেউ কেউ হাজিদের সেবা করাকে ইবাদত ও সওয়াবের কাজ মনে করেন, আবার কেউ শুধুই ব্যবসা। ফলে প্রতারণার শিকার হতে হয় আল্লাহর মেহমানদের। এ কারণে হজ এজেন্সির মালিকানায় বিশিষ্টজনরা দেখতে চান এমন সকল মানুষদের, যারা হাজিদের সেবাদানকে শুধুই ব্যবসা নয় বরং আল্লাহর ইবাদত মনে করে কাজ করবেন।
বেশ সুনাম অর্জন করেছেন হজ এজেন্সির মালিকানায় থাকা আলেমরা। এ ময়দানে এখন তাদের সরব উপস্থিতি। বিশেষ করে তরুণ আলেমরা অভিজাত পেশা হিসেবে বেছে নিচ্ছেন ট্রাভেলসকে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশেষর প্রত্যন্ত অঞ্চলের আলেমরাও এ পেশায় নিয়োজিত হচ্ছেন।
হজ এজেন্সির বাজারে সর্বোচ্চ সেবা নিয়ে বেশকিছু এজেন্সি গড়ে তুলেছেন তরুণ আলেমরা। সেবার মান ঠিক থাকায় আর্থিক স্বচ্ছলতাও তৈরি হচ্ছে দিন দিন। মানুষের ভরসাস্থল হিসেবে তারা এখন হাজিদের হৃদয়ে।
তরুণ আলেম মাওলানা মোশাররফ মাহমুদ একজন কর্মঠ মানুষ। রাজধানীতে গড়ে তুলেছেন তাবাসসুম ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলস। হাজিদের সেবা দিয়ে বিগত কয়েক বছর ধরেই প্রশংসায় ভাসছেন তিনি। এক্ষেত্রে কাজ করছে তার বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি। তিনি হজ ট্রাভেলস এজেন্সিকে শুধুই ব্যবসা হিসেবে দেখেন না, দীনের খেদমত মনে করেন।
তার ভাষ্য মতে, ‘এ পেশায় তিনি আনন্দ পান। হাজীদের উত্তম সেবাদানের মাধ্যমে তাদের অর্জিত সওয়াবের অংশীদারিত্ব পাওয়া যায় বলে বিশ্বাস করেন তিনি। আখেরাতে সেই সওয়াব জান্নাতে যাওয়ার সম্বল হবে বলে মনে করেন মাওলানা মোশাররফ মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘হজ ও ওমরায় আমি সর্বনিম্ন টাকায় সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করার চেষ্টা করি। কারণ, আমি শুরু থেকেই এই কাজকে ইবাদত মনে করে করি।’
শুধু তরুণ আলেমরাই নয়, প্রবীণ আলেমরাও কুড়িয়েছেন প্রশংসার পদ্মফুল। অসাধু ব্যবসায়ীদের বিপরীতে তারা কাজ করে আসছেস যুগ যুগ ধরে। ধর্মীয় বিভিন্ন কাজের পাশাপাশি হাজিদের সেবাদানের মাধ্যমে ট্রাভেলসের বাজারে সুনামের সাথে কাজ করে যাচ্ছেন তারা।
মাওলানা সেলিম হোসাইন আজাদী। ধর্মীয় নানান কাজের সঙ্গে জড়িত। তবে হজ এজেন্সির উন্নত সেবার মাধ্যমে ইতিমধ্যে ব্যাপক সুখ্যাতি অর্জন করেছেন। তরুণদেরও পথ দেখাচ্ছেন।
মাওলানা সেলিম হোসাইন আজাদী আওয়ার ইসলামকে জানান, প্রতি বছর প্রায় ৩ থেকে ৪ শ’ জন হাজি নিয়ে তিনি বায়তুল্লাহর দিকে রওনা করেন। হজের দিনগুলোতে তাদের সুখ-দুঃখের ভাগীদার হন।
তার মতে, তরুণ আলেমদের অভিজাত পেশা হতে পারে হজ এজেন্সি। এর মাধ্যমে দীনি খেদমতের পাশাপাশি তরুণরা আর্থিকভাবে সচ্ছল হবে।
তিনি বলেন,‘ তরুণ আলেমরা তাদরীস এর পাশাপাশি যেকোনো রকম হালাল ব্যবসায় জড়াতে পারেন। শুধুমাত্র মসজিদ মাদরাসা কেন্দ্রিক না হওয়া চাই। এ ক্ষেত্রে অনেকেই এজেন্সির সাথে কাজ করতে পারেন। তবে সবচেয়ে বেশি খেয়াল রাখতে হবে বিষয়টি দীনের খেদমত, শুধুই ব্যবসা নয়। ’
‘খেদমতের নিয়তে বিভিন্ন পেশার মাঝে অভিজাত পেশা হতে পারে হজ এজেন্সির ব্যবসা। যা আলেমদের জন্য বেশ উপযোগী। একদল মুখলেস আলেম এ কাজে জড়িত গলে অসাধু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য কমে আসবে।’ বলছিলেন মাওলানা সেলিম হোসাইন আজাদী।
আরএম/