রকিব মুহাম্মদ: কুরবানির ঈদের দিন নির্ধারিত হয় ১০ দিন আগেই। ফলে ঈদের আমেজও শুরু হয় পূর্বেই।এ ঈদে শপিংয়ের পাশাপাশি গরুর হাটে ভিড় থাকে মানুষের। পছন্দের কুরবানির পশু কেনেন সামর্থবানরা।
আগামীকাল ১০ জিলহজ (সোমবার) পবিত্র ঈদুল আজহা, কুরবানির ঈদ। ঈদের নামাজ শেষে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশে পশু কুরবানি করবেন সামর্থবান মুসলমানরা।
ঈদুল আজহার সঙ্গে পবিত্র হজের সম্পর্ক রয়েছে। গতকাল পবিত্র নগরী মক্কার অদূরে আরাফাহ’র ময়দানে সমবেত হওয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলিম সম্প্রদায় হজ পালন করেছেন।
স্থানীয় হিজরি মাস গণনা অনুযায়ী আজ সৌদি আরবে ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে। সকালে মুজদালিফা থেকে ফিরে হাজীরা মিনায় অবস্থান করে পশু কুরবানিসহ হজের অন্য কার্যাদি সম্পাদন করেছেন।
ঈদুল আজহা হজরত ইব্রাহিম আ. ও তার পুত্র হজরত ইসমাইল আ. সঙ্গে সম্পর্কিত। হজরত ইব্রাহিম আ. স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে পুত্র ইসমাইলকে আল্লাহর উদ্দেশে কুরবানি করতে গিয়েছিলেন।
আল্লাহর পক্ষ থেকে এই আদেশ ছিল হজরত ইব্রাহিমের জন্য পরীক্ষা। তিনি পুত্রকে আল্লাহর নির্দেশে জবাই করার সব প্রস্তুতি নিয়ে সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ফলে সঙ্গে সঙ্গে পুত্র ইসমাইলের পরিবর্তে পশু কুরবানি করার নির্দেশ আসে আল্লাহর পক্ষ থেকে।
সেই ঐতিহাসিক ঘটনার স্মৃতি ধারণ করেই হজরত ইব্রাহিম আ. সুন্নত হিসেবে পশু জবাইয়ের মধ্য দিয়ে কোরবানির বিধান এসেছে ইসলামি শরিয়তে। সেই মোতাবেক প্রত্যেক সামর্থবান মুসলমানের জন্য পশু কুরবানি করা ওয়াজিব।
ইসলামে কুরবানি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। পবিত্র কুরআনে সূরা কাউসারে এ ব্যাপারে বলা হয়েছে, ‘অতএব আপনার পালনকর্তার উদ্দেশে নামাজ পড়ুন এবং কুরবানি করুন।’
রাসুল সা. বলেছেন, ‘ঈদুল আজহার দিন কুরবানির চেয়ে আর কোনো কাজ আল্লাহর কাছে অধিক পছন্দনীয় নয়। গরু, মহিষ, উট, ভেড়া. ছাগল, দুম্বাসহ যে কোনো হালাল পশু দিয়ে কুরবানি দেয়া যায়।
আগামীকাল সকালে মুসল্লিরা নিকটস্থ ঈদগাহ বা মসজিদে ঈদুল আজহার দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করবেন। খতিব নামাজের খুতবায় তুলে ধরবেন কোরবানির তাৎপর্য। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাই একত্রে নামাজ আদায় ও শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
দেশবাসীকে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে জাতীয় সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। ঈদের দিন সরকারিভাবে হাসপাতাল, কারাগার, এতিমখানা ও শিশু সদনে উন্নত মানের বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হবে।
শুক্রবার রাজধানী থেকে ঘরে ফেরার পালা শুরু হয়েছে। আজ শহরের সড়কগুলো ছিল বেশ ফাঁকা। ভিড় ছিল পশুর হাট, বাস টার্মিনাল, রেলস্টেশন ও লঞ্চঘাটে। ঈদযাত্রায় ভোগান্তি কম নয়, এবারও তার কোনো হেরফের হয়নি। কিন্তু প্রিয়জনের সান্নিধ্য লাভ ও আপন ঠিকানায় ফেরার জন্য যাত্রার দুর্ভোগ মেনে নিয়ে সপরিবারে গ্রামে গেছে অসংখ্য মানুষ।
এদিকে রাজধানী ঢাকায় বেশ কয়েকটি ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ঈদের জামাতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র্যাব ও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষণিক নজরদারিতে থাকবে।
আরএম/