আওয়ার ইসলাম: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশের প্রিয়া সাহা তার বাড়িঘর ও জমির দখল-হামলার যে অভিযোগ করেছেন তার সঙ্গে ওই ঘটনায় করা তার মামলার মিল নেই বলে জানিয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
রোববার (২১ জুলাই) সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পিরোজপুরের মানুষ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে বসবাস করছে বলে স্থানীয় এ সংসদ সদস্য দাবি করেন।
ট্রাম্পের কাছে অভিযোগকারী প্রিয়া সাহা পিরোজপুরের বাসিন্দা, আর রেজাউল করিম সেই আসনের বর্তমান সাংসদ।গণপূর্তমন্ত্রী জানান, প্রিয়া সাহার বাবার বাড়ি ও তার নিজের বাড়ি একই ইউনিয়নে। তার এলাকায় এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। সব ধর্মের মানুষ শান্তি-সম্প্রীতি নিয়ে বসবাস করছে।
মন্ত্রী বলেন, নাজিরপুরের মাটিভাংগা ইউনিয়নের অধিবাসী আমি। সাম্প্রতিক সময়ে একটি বিষয়ে অনেক আলোচিত হচ্ছে। আমার ইউনিয়নের চরবানিয়ারী গ্রামের প্রিয় বালা সাহা নামে একজন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে কতগুলি অভিযোগ করেছেন। সেই অভিযোগের বিষয়গুলি নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে অনেক আলাপ আলোচনা হচ্ছে।
“আমি সেই এলাকার সংসদ সদস্য হিসাবে এবং একই ইউনিয়নের অধিবাসী হিসেবে দেশবাসীকে এই বিষয়টি অবহিত করার জন্য আপনাদের (সাংবাদিক) আমন্ত্রণ জানিয়েছি। প্রিয় বালা বিশ্বাসের বাবার নাম নগেন্দ্র নাথ বিশ্বাস। তিনি বিবাহসূত্রে যশোরের অধিবাসী। প্রিয় বালা নাজিরপুর এলাকায় বসবাস করেন না এবং তার কোনো বসতঘর বা জমি নেই। এই গ্রামে তার বাবার পৈত্রিক সম্পত্তি ও ভাইদের সম্পত্তি রয়েছে।” যোগ করেন তিনি।
পূর্তমন্ত্রী জানান, প্রিয় বালা বিশ্বাসের ভাই জগদীশ বিশ্বাস অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা; তিনি বাড়িতে থাকেন না। এক রাতে তার বাড়ির পরিত্যক্ত একটি ঘরে আগুন লাগে এবং সেই ঘটনায় বাড়ির কেয়ারটেকার কমলেশ বিশ্বাস বাদী হয়ে থানায় মামলা করে। মামলায় কারো নাম উল্লেখ করা করা হয়নি এবং কাউকে সন্দেহও করা হয়নি।
মন্ত্রী বলেন, এজাহারে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য কোনো মৌলবাদী গোষ্ঠী বা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে এ ঘটনা ঘটিয়েছে, এমন শঙ্কার কথা এজাহারে তিনি বলেননি।
এসময় মন্ত্রী ওই মামলার এজাহার সাংবাদিকদের হাতে তুলে দেন, যাতে অজ্ঞাতনামা ৫০/৬০ জনকে আসামি করা হয়। এজাহারে বলা হয়, ২ মার্চ রাত ৩টার দিকে জগদীশ বিশ্বাসের ঘরে আগুন লাগে এবং আশেপাশের মানুষ পুকুর থেকে পানি এনে আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও পুরো ঘর ভস্মীভূত হয়ে যায়। ঘরে থাকা ৫০ মণ ধান ও আসবাবপত্র পুড়ে যায়। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৩৬ ও ৪২৭ ধারায় অর্থাৎ আগুনের পুড়ানো ও ঘরের ক্ষতিসাধনের অভিযোগ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কমলেশ বিশ্বাস এ বছরের ২৯ এপ্রিল নাজিরপুর থানায় আরেকটি মামলা করেছেন। তবে ওই ঘটনা কোনো সাম্প্রদায়িক হামলার নয়। একটা মারামারির হয়েছিল, যাতে মামলার আসামি নামের মধ্যে হিন্দু নামও রয়েছে। প্রিয় বালা সাহার বাবার বাড়ির একজনও ডিজ এপিয়ার বা গুম হয়নি।
মন্ত্রী বলেন, আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, আমার নির্বাচনী এলাকায় মুসলিম- হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অপূর্ব নিদর্শন নিয়ে বসবাস করছেন। এখানে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে কখনো কেউ অবিচারের শিকার হন না।
আরএম/