আওয়ার ইসলাম: বান্দরবান উপজেলায় ‘ছেলেধরা’ সন্দেহে এক রোহিঙ্গা তরুণীকে গণপিটুনি দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে তাকে আটক করে পুলিশ। তার নাম রোকেয়া (১৮)। তিনি কক্সবাজার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের শরণার্থী।
আজ শুক্রবার সকালে সদর উপজেলার লেমুঝিরি আগাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, শুভ নামে এলাকার এক কিশোর গরু চরাতে মাঠে যায়। এ সময় তাকে দেখে নিজের কাছে ডাকেন রোকেয়া। অপরিচিত হওয়ায় রোকেয়ার কাছে না গিয়ে বাড়ি ফিরে যায় শুভ। পরে পরিবারের কাছে বিষয়টি জানায়।
স্থানীয় লোকজন বিষয়টি জানতে পেরে রোকেয়াকে ধাওয়া দেয়। এ সময় তিনি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে আগাপাড়া এলাকায় তাকে আটকে ফেলে গণপিটুনি দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা।
পরে খবর দিলে পুলিশ এসে রোকেয়াকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পুলিশের কারণেই, প্রাণে বেঁচে যায়রোহিঙ্গা তরুণী।
বান্দরবান সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই রোহিঙ্গা তরুণীর নাম রোকেয়া বেগম (১৮)। সে জানায়, সে ছেলেধরা নয়। থাকে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে। বিবাহিত এ তরুণীর স্বামীর নাম হামিদ উল্লাহ। শরণার্থী শিবির থেকে চিকিৎসার জন্য বাবার সঙ্গে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে গিয়েছিল।
রোহিঙ্গা তরুণী আরও জানায়, শুক্রবার সকালে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য বের হলে তিন যুবক তাকে ট্যাক্সিতে তুলে সরাসরি বান্দরবানে নিয়ে আসে। এরপর ওই পাহাড়ি এলাকায় নিয়ে তারা তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। সে পালানোর চেষ্টা করার সময় পথে ওই কিশোরের দেখা পায় এবং কিশোরের কাছে সাহায্য চায়। কিন্তু কিশোরটি ভুল বুঝে চিৎকার দিলে এলাকাবাসী এসে তাকে ধরে ফেলে এবং পিটুনি দেয়।
রোকেয়া বেগম ভাষ্য মতে, যে তিন তরুণ তাকে চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবানে নিয়ে আসে, তাদের নাম রহমত উল্লাহ, আয়াত উল্লাহ ও জাবেদ। তাদের নাম জানতে পারলেও তাদের ঠিকানা জানতে পারেনি সে।
বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গা তরুণীকে চট্টগ্রাম থেকে কারা কীভাবে কী উদ্দেশ্যে নিয়ে এসেছে- তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। মারধরে তরুণীটি সামান্য আহত হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় এখনো জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি।
তবে দেশব্যাপী যে ছেলেধরার গুজব ছড়িয়ে পড়েছে- তাতে কান না দিয়ে এবং আতঙ্কিত না হওয়ার জন্যও সবার প্রতি আহ্বান জানান ওসি।
আরএম/