আওয়ার ইসলাম: লিবিয়ার একটি অভিবাসী আটক কেন্দ্রে বিমান হামলায় মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ খাগছাড়া গ্রামের ফজেল কাজীর ছেলে শাহাজালাল কাজী মারা গেছেন। এ ঘটনার পর নিহতের স্ত্রীর বড় ভাই শহিদুল ইসলাম নিখোঁজ রয়েছেন। নিহতের চাচাতো ভাই জুয়েল কাজী আহত হয়েছেন। তিনি লিবিয়ার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
জুয়েল কাজী বৃহস্পতিবার দুপুরে মোবাইল ফোনে পরিবারের কাছে নিহতের ঘটনার কথা জানিয়েছেন। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার দালাল নাসির শিকদারের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। সেই সাথে সরকারের কাছে মরদেহ বাংলাদেশে এনে দাফন করার দাবি করেছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শাহাজালাল কাজী, তার স্ত্রীর ভাই শহিদুল ইসলাম এবং চাচাতো ভাই জুয়েল কাজী; এই তিনজন রোজার সময় দালালের সঙ্গে জন প্রতি ১২ লাখ টাকা করে চুক্তির মাধ্যমে ইতালির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। লিবিয়া হয়ে যাবার পথে তারা লিবিয়ার পুলিশের হাতে আটক হন।
এদিকে মাদারীপুর সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নের গাছবাড়িয়া গ্রামের নাসির শিকদার নামের দালাল তাদের জানান, ওরা তিনজন ইতালি পৌঁছে গেছেন। আরো টাকা দিলে তাদের সঙ্গে কথা বলিয়ে দিবেন। এ টাকা চাওয়া নিয়ে ওই তিন পরিবারের সঙ্গে দালাল নাসিরের কথা কাটাকাটি চলছিল।
নিহতের বাবা ফজেল কাজী কেঁদে কেঁদে বলেন, ধার-দেনা করে ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়েছিলাম। আজ সেই ছেলের এমন করুণ মৃত্যু হল। তা আমরা কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। অনেক স্বপ্ন নিয়ে বিদেশে পাঠিয়েছিলাম। আমাদের সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল। আমরা সরকারের কাছে ওর (শাহাজালাল কাজী) লাশ দেশে আনার এবং দালালের শাস্তির দাবি জানাই।
নিহতের স্ত্রী সোনিয়া আক্তার বলেন, আমার সব শেষ হয়ে গেল। আমরা পথে বসে গেলাম। সরকারের কাছে ওই দালালের শাস্তি ও আমার স্বামীর মরদেহ দেশে আনার দাবি জনাই।
নিখোঁজ শহিদুল ইসলামের ভাই আজিজুল ইসলাম বলেন, প্রায় দেড় মাস আগে শহিদুল ইতালির উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এরপর তার সাথে কোনো যোগাযোগ করতে পারিনি। কয়েকদিন ধরে দালাল বলছে, শহিদুল ইতালি পৌঁছে গেছে। দুই লাখ টাকা দিলে তার সাথে কথা বলিয়ে দিবে। ভাইয়ের সাথে আর কথা বলা হয়নি। সে বেঁচে আছে না মারা গেছে তাও জানি না। আমার ভাইকে ফেরত চাই।
-এএ