মোস্তফা ওয়াদুদ: হাদিস শরিফে এসেছে, রাসুল সা. তাঁর চাচা হজরত আব্বাস রা. কে বলেছিলেন, ‘চাচা, আপনি সালাতুত তাসবিহ নামাজ পারলে সপ্তাহে একবার পড়ুন। তাও না পারলে মাসে একবার পড়ুন। তাও না পারলে বছরে একবার পড়ুন। অন্তত জীবনে একবার হলেও এ নামাজ পড়ুন। এ নামাজ দ্বারা জীবনের ছোট-বড়, ইচ্ছাকৃত-অনিচ্ছাকৃত, নতুন-পুরনো, গোপন-প্রকাশ্য সব রকম গুনাহ মাফ হয়ে যায়।’
এখন সালাতুত তাসবিহ নামাজ পড়ার নিয়মাবলি আমরা জেনে নিতে পারি। সালাত শব্দের অর্থ নামাজ। আর তাসবিহ শব্দের অর্থ এখানে سُبْحَانَ اللَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ (সুবহানাল্লাহি ওয়ালহামদু লিল্লাহহি ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার) এই তাসবিহকে বোঝানো হয়েছে। সুতরাং যে নামাজে এ তাসবিহ পড়া হয় তাকে সালাতুত তাসবিহ নামাজ বলে। নামাজটি চার রাকাত বিশিষ্ট। প্রতি রাকাতে তাসবিহটি ৭৫ বার পড়তে হয়। এভাবে চার রাকাতে ৩০০ বার হয়।
সালাতুত তাসবিহ নামাজ পড়ার নিয়ম :
প্রথমে নিয়ত করবে। এরপর ছানা পড়বে। তারপর যেকোনো সুরা মেলাবে। সুরা শেষ করে ওই দাঁড়ানো অবস্থায়ই ১৫ বার তাসবিহ পাঠ করবে। এরপর আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে যাবে। রুকুর তাসবিহ পড়ার পর আবার ওই তাসবিহ ১০ বার পড়বে। এরপর রুকু থেকে উঠে ‘রাব্বানা লাকাল হামদ’ বলার পর আবার ওই তাসবিহ ১০ বার পড়বে। এরপর সিজদায় যাবে। সিজদার তাসবিহ পড়ার পর ওই তাসবিহ ১০ বার পড়বে। সিজদা থেকে উঠে দুই সিজদার মাঝখানে আবার ১০ বার পড়বে। দ্বিতীয় সিজদায় সিজদার তাসবিহ পড়ার পর আবার ওই তাসবিহ ১০ বার পড়বে। এই হলো ৬৫ বার। এখন আবার ‘আল্লাহু আকবার’ বলে দ্বিতীয় সিজদা থেকে উঠে বসে ১০ বার পড়বে। অতঃপর দাঁড়াবে। এই হলো এক রাকাতে ৭৫ বার।
এবার দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাতে একইভাবে সুরা ও তাসবিহ পড়তে হবে। দ্বিতীয় রাকাতে ও শেষ রাকাতে আত্তাহিয়্যাতু পড়ার আগে ১০ বার তাসবিহ পড়ে নিতে হবে। তারপর সালাম ফেরাতে হবে। কোনোভাবেই আত্তাহিয়্যাতুর পর তাসবিহ পড়া যাবে না এবং কোনোভাবেই প্রতি রাকাতে ৭৫ বারের বেশি পড়া যাবে না।
যদি কেউ কোনো এক জায়গায় তাসবিহ পড়তে ভুলে যায় বা কম থেকে যায়, তাহলে পরবর্তী সময়ে যে জায়গায় মনে আসবে, সেখানে ছুটে যাওয়াটাও আদায় করে নেবে। সালাতুত তাসবিহ যেকোনো সুরা দিয়ে পড়া যায়। সালাতুত তাসবিহ ছাড়া এমন আরো যত নফল নামাজ আছে, তা যেকোনো সুরা দিয়ে পড়া যেতে পারে।
এমডব্লিউ/