আওয়ার ইসলাম: উপমহাদেশের বৃহত্তম ঈদ জামাত আয়োজনের জন্য প্রস্তুত কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ময়দান। শোলাকিয়ায় ১৯২তম ঈদুল ফিতরের জামাত শুরু হবে সকাল ১০টায়। ঈদজামাত পড়াবেন জামিয়া ইকরা বাংলাদেশ এর শায়খুল হাদীস মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ।
মাঠে সুষ্ঠুভাবে ঈদজামাত আয়োজনের জন্য ঈদগাহ মাঠ পরিচালনা কমিটি সব ধরনের প্রস্তুতির কাজ শেষ করেছে। মাঠ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নকরণ, পানি সরবরাহ, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও রঙের প্রলেপ দেয়ার কাজও শেষের পথে।
বৃহত্তম এই জামাতে অংশ নেয়া মুসল্লিদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও আনসার সদস্যরা চার স্তরের একটি নিরাপত্তাবলয় গড়ে তুলেছেন। মাঠে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা ও বেশ কয়েকটি অস্থায়ী টাওয়ার। এসব টাওয়ারের মাধ্যমে মাঠের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।
ধাতব বস্তু শনাক্তকরণ যন্ত্র (মেটাল ডিটেক্টর) দিয়ে তল্লাশি করে মুসল্লিদের মাঠে ঢোকার সুযোগ দেওয়া হবে। পর্যবেক্ষণে ড্রোন ক্যামেরার পাশাপাশি এবারই প্রথম স্নাইপার রাইফেল হাতে পাহারা দেবেন র্যাব।
দূর-দূরান্ত থেকে আসা মুসল্লিদের সুবিধার্থে বাংলাদেশ রেলওয়ে বরাবরের মতো এবারও ঈদুল ফিতরের দিন ‘শোলাকিয়া এক্সপ্রেস’ নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে।
সকাল ৫টা ৫৫মিনিটে একটি ট্রেন ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে কিশোরগঞ্জ পৌঁছবে ৯টা ৫ মিনিটে। অপর ট্রেনটি জেলার ভৈরব থেকে ছেড়ে আসবে ভোর ৬টায়। কিশোরগঞ্জ পৌঁছবে সকাল ৯টায়। জামাত শেষ হওয়ার পর দুটি ট্রেনই গন্তব্যে ফিরে যাবে দুপুর ১২টায়।
জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী জানান, মুসল্লিদের নিরাপত্তায় কিছু কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। ঈদের দিন শুধুমাত্র জায়নামাজ ছাড়া অন্য কিছু সঙ্গে নিয়ে মুসল্লিরা মাঠে প্রবেশ করতে পারবে না।
তিনি আরও জানান, মাঠের সাধারণ প্রস্তুতি ছাড়াও দফায় দফায় সভা করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। র্যাব-পুলিশ ছাড়াও পাঁচ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে।
কিশোরগঞ্জ পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ বিপিএম (বার) জানান, ঈদগাহের নিরাপত্তায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ঈদের দিন শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান ও এর আশপাশ এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হবে। মুসল্লিরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নামাজ আদায় শেষে নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরতে পারবেন।
পুলিশের ৩২টি নিরাপত্তা চৌকি ছাড়াও ২৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে থাকছে স্ট্রাইকিং ফোর্স। চার স্তরের নিরাপত্তা বলয় পার হয়ে মুসল্লিদের মাঠে প্রবেশ করতে হবে। প্রবেশ পথে মুসল্লিদের কয়েক দফায় তল্লাশির মুখে পড়তে হবে। ঈদগাহ ময়দান ও আশপাশের আকাশে নজরদারি করবে শক্তিশালী ড্রোন ক্যামেরা।
তিনি আরও জানান, বহিরাগত কিংবা অপরিচিত কোনো লোক যাতে ঈদের সময় আত্মগোপন করতে না পারে, সে লক্ষ্যে শহরের বিভিন্ন বাসাবাড়ি ও মেসে প্রতিদিন তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। নতুন কোনো ভাড়াটে উঠলে তাৎক্ষণিক পুলিশকে জানাতে বাড়ির মালিকদের বলা হচ্ছে। এটি মাইকিং করে প্রচার করা হচ্ছে।
এমডব্লিউ/