আওয়ার ইসলাম: গরমের সময় শরীরে প্রচুর পানি প্রয়োজন হয়। এই সময়ে এমনিতেও শরীরে পানি জমা থাকতে পারে না। আর শরীরে পানির ঘাটতি দেখা দিলে মাথা ঘোরানো, মাথা ব্যথা এবং শরীর অবসন্ন হয়ে পড়তে পারে।
অনেকে সারাদিন রোজা থাকার পর ইফতারে অনেক বেশি খেয়ে ফেলেন। এটি স্বাস্থ্যের জন্য বেশ ক্ষতিকর। তবে কিছু নিয়ম মেনে চললে রোজাতেও শরীরে পর্যাপ্ত শক্তি সঞ্চিত থাকে। চলুন জেনে নেয়া যাক কী সেই উপায়।
সেহরি: গরমের এই সময়ে রোজা রাখতে সেহরির ব্যাপারে একটু সতর্ক থাকুন। বিশেষ করে এমন কিছু খাওয়া থেকে বিরত থাকুন যা আপনাকে সারাদিন পর্যাপ্ত শক্তি যোগাতে পারবে না। সারাদিন দেহের শক্তি ঠিক রাখতে সেহেরির সময়ে অনেকেই অতিরিক্ত খাবার খেয়ে থাকেন। এতে সত্যিকার অর্থে কোন লাভ হয় না। এসময় স্বাদের চেয়ে স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিন। যা ধীরে ধীরে হজম হবে এমন সব সেহরীতে খাবার রাখুন।
আঁশ সমৃদ্ধ খাবার খাওার চেষ্টা করুন। তবে এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে ভুনা খাবারের চেয়ে অল্প তেল এবং মশলা দিয়ে ঝোলের তরকারি বেশ উপকারী। সেহরিতে মিষ্টি জাতীয় খাবার না খাওয়াই ভালো। মিষ্টি আপনার শরীরের তৃপ্তি পাবার হরমোন লেপটিনের পরিমাণকে কমিয়ে দেয়। যার ফলে ঘন ঘন খিদে পায়।
তবে লাল চালের ভাত, পাঁচ মিশালি সবজি, মাছ বা মুরগি এবং গরুর দুধ খেলে পর্যাপ্ত শক্তি পাওয়া যাবে সারাদিনই। পানি পানের ক্ষেত্রে অনেকেই একটি বড় ভুল করে থাকেন। সেহরির পরপরই বেশি পরিমাণে পানি পান করে থাকেন। এমনটা করলেও সারাদিনই পিপাসা পাবে। তারচেয়ে বরং ইফতারের পর যতক্ষণ জেগে থাকবেন একটু পরপর অল্প অল্প করে পানি পান করুন। যতটা সম্ভব চা এবং কফি থেকে দূরে থাকুন।
ইফতার: সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারের সময় অনেকেই বেশি পরিমাণ খেয়ে থাকেন। এমনটি কখনোই করবেন না। এতে আপনার নানা ধরণের রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। ইফতারিতে আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষই ভাজা পোড়া জাতীয় খাবার বেশি খেয়ে থাকেন। তাই সারাদিন রোজার পর ভুগতে হয় পেট ফাঁপা আর বুক জ্বলার মতো অসুখে।
রোজায় সারাদিন পাকস্থলী একদম ফাঁকা থাকে। এ অবস্থায় অতিরিক্ত তৈলাক্ত, লবণাক্ত বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলে অনেক সমস্যাতেই পড়তে হয়। অ্যাসিডিটি তার মধ্যে অন্যতম। ইফতারে সেসব খাবার খেতে হবে যা আপনার স্বাস্থ্যকে সুরক্ষিত রাখে। যেসব খাবার শরীরে দ্রুত শক্তি জোগাবে এবং মুহূর্তেই শরীরকে ক্লান্ত করে ফেলবে না এমন খাবারই রাখুন ইফতারির তালিকায়।
পানীয়ের মধ্যে পানি, বিভিন্ন ফলের শরবত, দুধ রাখতে পারেন ইফতারিতে। তবে অতিরিক্ত চিনি দিয়ে কোন কিছুই খাবেন না। এতে শরীর দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়বে। ইফতারিতে খেজুর রাখুন মূল উপাদান হিসেবে। খেজুরে পাওয়া যায় শর্করা, খনিজ এবং আঁশের মতো উপকারী উপাদান।
এছাড়া ইফতারিতে মৌসুমি রসালো ফল খান বেশি বেশি। ইফতারিতে রান্না ছোলার চেয়ে কাঁচা ছোলা খেতে চেষ্টা করুন। সকালে ভিজিয়ে কয়েকটি কাঁচা ছোলা আপনাকে দ্রুত শক্তি জুগিয়ে চাঙ্গা করে তুলবে। ইফতারিতে রাতের খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। রাতের খাবার তারাবিহ নামাজের আগে খাবার চেষ্টা করুন। এটি খাবার দ্রুত হজম করতে সাহায্য করে।
রোজার সময়ে সেহেরি এবং ইফতারিতে খাদ্য গ্রহণে সতর্কতার পাশাপাশি সারাদিনে পর্যাপ্ত পরিমান বিশ্রাম নিন।
-এএ