আওয়ার ইসলাম: ওয়াজ মাহফিল বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন ও সুপারিশের প্ররিপ্রেক্ষিতে দেশের শীর্ষ আলেমদের বৈঠকে নেয়া সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক ও হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা আহমদ শফীর সঙ্গে বৈঠক করেছে আলেমদের প্রতিনিধি দল।
আজ (১১ এপ্রিল) দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসায় আল্লামা আহমদ শফীর কার্যালয়ে এ বৈঠক করা হয়।
বৈঠকে আল্লামা আহমদ শফী বলেন, আলেমসমাজ নবীদের উত্তরসূরী। কুরআন-সুন্নাহর আলোকে জাতিকে নির্দেশনা দেওয়া তাদের কর্তব্য ৷ শাসক ও জনগণকে নসিহত করা তাদের জিম্মাদারি। কল্যাণের প্রতি আহ্বান জানানো ও অকল্যাণের প্রতিরোধ করতে আলেমদেরকে স্বয়ং আল্লাহ ও ইসলামের শেষ নবী হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) নির্দেশ দিয়েছেন। তাই কোনো অবস্থাতেই আলেমসমাজের পক্ষে এ দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।
ইতিহাস প্রমাণ করে, শাসক ও জনগণ যখন আলেমদের কথা অনুসরণ করেছে তারা সফলকাম হয়েছে ৷ আর যখন বিরোধিতা করেছে, আল্লাহ তাদেরকে পাকড়াও করেছেন ৷ মানুষের ঈমান-আকিদার হেফাজত করা, মানুষকে পরকালমুখি করা, প্রচলিত শিরক-বিদআত ও কুসংস্কারসমূহ প্রতিরোধ করা এবং শরিয়তবিরোধী সব কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে ভূমিকা পালনের শিক্ষা দেওবন্দি ধারার অন্যতম বৈশিষ্ট্য৷
কওমি মাদরাসাগুলোতে গুরুত্বের সঙ্গে এ বিষয়গুলোতে আমরা প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি ৷ দেশপ্রেম ও জাতির প্রতি ভালোবাসার আদর্শ শিক্ষা দেই ৷ এজন্য জঙ্গিবাদ, উগ্রবাদসহ দেশ ও ইসলাম বিরোধী সকল চরমপন্থার বিরুদ্ধে ওলামায়ে কেরামের ভূমিকা অনস্বীকার্য ৷ হক্কানি ওলামায়ে কেরাম নারী অধিকারের কথা বলেন, নারী নির্যাতন ও যৌতুক প্রথার বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা রাখেন। সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে আলেম সমাজের অবদান অপরিসীম ৷
ওয়াজ মাহফিলসহ দীনের দাওয়াত আলেমদের গুরুত্বপূর্ণ কর্মক্ষেত্র ৷ এর তদারকির জন্য শীর্ষস্থানীয় ওলামায়ে কেরামই যথেষ্ট ৷ ধর্মীয় স্পর্শকাতর এই বিষয়ে অন্যকোনো মহলের হস্তক্ষেপ হিতে বিপরিত হবে এবং সরকারকে আলেমসমাজের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেবে ৷ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে ঘাপটি মেরে বসে থাকা আলেমবিদ্বেষী গোষ্ঠী যারা ইতিপূর্বে কওমি সনদের স্বীকৃতির বিরোধিতা করেছিল, তারাই আবার সরকারকে বিভ্রান্ত করছে ৷
সাক্ষাৎকালে ওয়াজ বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ নসিহত এবং পরবর্তিতে বৃহদাকারে প্রয়োজনী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য উপস্থিত আলেমদের আল্লামা আহমদ শফী গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা প্রদান করেন ৷
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন আমিরে শরিয়ত মাওলানা আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী, মাওলানা আব্দুল হামিদ (পীর সাহেব মধুপুর), মাওলানা আবুল কালাম, মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদি, মুফতি মাহফুজুল হক, মাওলানা আনাস মাদানি, মাওলানা মুঈনুদ্দিন রুহি, মুফতি ইমাদুদ্দিন, মাওলানা হাবীবুল্লাহ মিয়াজি, মাওলানা মাসউদুল করিম, মাওলানা মামুনুল হক, মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজি।
মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ূবি, মুফতি কেফায়াতুল্লাহ আযহারি, মুফতি আব্দুর রাজ্জাক কাসেমি, মাওলানা ওয়ালী উল্লাহ আরমান, মাওলানা শফিকুর রহমান, মাওলানা ফয়সাল আহমদ, মাওলানা আবুল কাসেম আশরাফি, মাওলানা রাফি বিন মুনির, মাওলানা লোকমান সাদী, মাওলানা আব্দুর রহিম আল মাদানি ও মাওলানা ইয়াকুব উসমানি প্রমুখ৷
-এএ