হামদ, ও সানা আল্লাহর জন্য। আমি তার প্রশংসা করি। তারই কাছে মদদ, হেদায়েত ও ক্ষমা প্রার্থনা করি। আমার ঈমান তার উপর। আমি তাঁর নাফরমানি করি না। যারা নাফরমানি করে তাদের সাথে আমি শত্রুতা পােষণ করি।
আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া ইবাদতের যােগ্য আর কেউ নেই। তিনি অদ্বিতীয় এবং লা-শরিক। মোহাম্মদ সা. তার বান্দা ও রাসুল।
তিনি মুহম্মদকে সা. আলো, হেদায়েত ও নসিহত সহকারে এমন এক যুগে পাঠিয়েছেন যখন অনেক কাল থেকে দুনিয়াতে কোন নবী আসেননি। যখন জ্ঞান হ্রাস পেয়েছিল ও গােমরাহী বেড়ে গিয়েছিল।
আমাকে আখেরী যামানায় পাঠানো হয়েছে, যখন কিয়ামতও নিকটবর্তী এবং দুনিয়ার মত্যু আসন্ন। যে আল্লাহ ও তার রাসুলের অনুসরণ করে সেই সঠিক পথে, যে তার হকুম মানেনি সে পথভ্রষ্ট মর্যাদা থেকে বিচ্যুত এবং কঠিন গােমরাহীর মধ্যে লিপ্ত।
হে মুসলমান ! আমি তোমাদেরকে তাকওয়ার অসিয়ত করছি। এক মুসলমানের প্রতি অপর মুসলমানের উত্তম অসিয়ত হল তাকে আখেরাতের জন্য উদ্বুদ্ধ করা এবং আল্লাহকে ভয় করার কথা বলা।
হে মানুষ! আল্লাহ, যে সব বিষয় নিষেধ করেছেন তা পরিহার কর। এর চেয়ে বড় কোন নসিয়ত নেই এবং কোন জিকিরও নেই। স্মরণ রেখাে, আল্লাহকে ভয় করে যে কাজ করে, আখেরাতে তাকওয়া তার জন্য উৎকৃষ্ট সাহায্যকারী।
যখন কোন ব্যক্তি আল্লাহর সাথে তার সম্পর্ক প্রকাশ্যে ও গােপনে সঠিক করবে এবং এ ব্যাপারে তার নিয়ত পবিত্র থাকবে তখন তার এ কাজ দুনিয়াতে প্রশংসিত হবে এবং মত্যুর পর (যখন মানুষের আমলের গুরত্ব ও প্রয়োজন অনুভূত হবে) এক ভাণ্ডারে পরিণত হবে।
যদি কেউ এরুপ না করে তাহলে তার যে পরিণতি হবে তার উল্লেখ রয়েছে নিম্নোক্ত আয়াতের মধ্যে : মানুষ চাইবে তার আমল যেন তার থেকে দূরে রাখা হয়। আল্লাহ, তার সত্তা সম্পর্কে তােমাদের ভয় প্রদর্শন করবেন এবং তিনি তার বান্দাদের প্রতি অতি মেহেরবান।
যে ব্যক্তি খােদার হকুম সত্য মনে করে এবং তাঁর ওয়াদা পূরণ করে তার জন্য এই ইরশাদে-ইলাহী রয়েছে যে, আমাদের কাছে কথার পরিবর্তন হয় না এবং আমরা বান্দাদের উপর জুলুম করি না।
হে মুসলমান, তোমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যতের প্রকাশ্য ও গােপন কাজে আল্লাহর ভয়কে সামনে রেখো। কেননা আল্লাহকে ভয়কারীদের ছেড়ে দেয়া হয় এবং তাদের প্রতিদান বাড়িয়ে দেয়া হয়।
তাকওয়ার অধিকারীরা বিরাট সাফল্য লাভ করবে। একমাত্র তাকওয়া আল্লাহর অসন্তুষ্টি, আজাব এবং ক্রোধ দূর করে দেয়। একমাত্র তাকওয়া চেহারাকে উজ্জ্বল, প্রতিপালক আল্লাহকে সন্তুষ্ট ও নিজের মর্যাদাকে উন্নীত করে।
হে মুসলমান! উপভােগ কর কিন্তু হক আদায়ের ব্যাপারে গাফিল হয়ো না। আল্লাহ, তােমাদেরকে তার কিতাব দিয়েছেন এবং রাস্তা প্রদর্শন করেছেন যাতে মিথ্যাপন্থী ও সত্যপন্থীদের মধ্যে পার্থক্য সূচিত হয়।
হে মানুষ, আল্লাহ, তোমাদের সাথে উত্তম আচরণ করেন, তােমরাও মানুষের সাথে অনুরুপ আচরণ কর। আল্লাহর দুশমনকে তােমরা দুশমন মনে কর এবং আল্লাহর রাস্তায় পণ সাহস ও একাগ্রতার সাথে কোশেশ কর।
তিনিই তােমাদেরকে মনােনীত করেছেন এবং তােমাদের নাম মুসলমান রেখেছেন। এজন্য যে, যারা ধবংস হবে তাদের কাছে তাদের ধবংসের এবং যারা কামিয়াব হবে তাদের কাছে তাদের কামিয়াবের কারণ ও যুক্তি-প্রমাণ যেন স্পষ্ট হয় এবং সকল পুণ্য কাজ আল্লাহর সাহায্যে সংঘটিত হয়।
হে মানুষ! আল্লাহর জিকির কর। ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য আমল কর। যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে নিজের সম্পর্ক সংশােধন করে আল্লাহ, মানুষের সাথে তার সম্পর্ক সঠিক করে দেন।
অবশ্যই আল্লাহ, বান্দাদের উপর কর্তৃত্বের অধিকারী। কিন্তু তার উপর কারও কতৃত্ব চলে না। আল্লাহ, বান্দাদের মালিক এবং তার উপর বান্দাদের কোন ইখতিয়ার নেই। আল্লাহ, সর্বশ্রেষ্ঠ এবং আমরা এ মহান সত্তার নিকট থেকেই নেকীর শক্তি লাভ করি।
মুহাম্মদ নুরুজ্জামান অনূদিত মহানবীর সা. ভাষণ (বই) থেকে সংগৃহীত
আরএম/